পুরো ঘুরে বল করছেন শিবা সিংহ।
কোনও স্পিনার রান আপ নিতে গিয়ে যদি হঠাৎ এক চক্কর ঘুরে নেন, তা হলে তার উল্টোদিকের ব্যাটসম্যান চমকে যেতেই পারেন। এই উদ্দেশ্যেই মাঝে মাঝে বল করার আগে এমন চমক দিয়ে থাকেন উত্তরপ্রদেশের বাঁ হাতি স্পিনার শিবা সিংহ। যিনি অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলেও ছিলেন।
গত সপ্তাহে কল্যাণীতে বাংলার বিরুদ্ধে সি কে নাইডু ট্রফির ম্যাচে এমনই কাণ্ড করে বসেন শিবা। যিনি অতীতে কলকাতার ক্লাবের হয়েও খেলেছেন। টিভি আম্পায়ারের জন্য নির্দিষ্ট ক্যামেরায় ধরাও পড়ে এই ঘটনা। যার ভিডিয়ো বৃহস্পতিবার বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হতেই তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভাইরাল’ হয়ে যায়। কিংবদন্তি স্পিনার বিষাণ সিংহ বেদী সেই ভিডিয়ো-সহ টুইট করেন, ‘‘অবাক কাণ্ড! ভাল করে দেখুন।’’
ভিডিয়োয় দেখা যায় বল ছাড়ার ঠিক আগে হঠাৎ ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে যান শিবা। তাঁর ওই চক্কর দেওয়া দেখে আম্পায়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ‘ডেড বল’ ঘোষণা করেন। কেন করলেন এ রকম কাণ্ড? বৃহস্পতিবার মোরাদাবাদ থেকে ফোনে ১৯ বছর বয়সি স্পিনার বলেন, ‘‘ব্যাটসম্যানকে চমকে দিয়ে তার মনঃসংযোগ নষ্ট করার জন্যই করেছি। এ বছর বিজয় হজারে ট্রফিতে কেরলের বিরুদ্ধেও একই জিনিস করেছি। তখন তো আম্পায়ার কিছু বলেননি। তা ছাড়া ব্যাটসম্যানরা যদি সুইচ হিট, রিভার্স সুইপ মারতে পারে, তা হলে বোলাররাই বা কেন পারবে না?’’
কিন্তু আম্পায়াররা বলছেন, এটা বেআইনি। বাংলার অভিজ্ঞ আম্পায়ার প্রেমদীপ চট্টোপাধ্যায় যেমন বলেন, ‘‘ক্রিকেটের মূল আইনে যখন এটা বৈধ নয়, তখন এ রকম করা যায় না। আম্পায়ার ডেড বল ডেকে একেবারে ঠিক কাজ করেছেন। এই কাণ্ড বন্ধ না হলে তো সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও এমন প্রায়ই করবে বোলাররা।’’
ক্রিকেটের আইনের ২০.৪.২ ধারায় উল্লেখ করা আছে, ব্যাটসম্যানের মনঃসংযোগ নষ্ট করার উদ্দেশে বোলার অস্বাভাবিক কিছু করার চেষ্টা করলে নির্দিষ্ট বলটি বাতিল করতে পারেন আম্পায়ার। কিন্তু কিছুতেই তা মানতে রাজি নন শিবা। বলছেন, ‘‘ভবিষ্যতেও এ রকম ফের করব। আমার মনে হয় এটা বেআইনি নয়। আমার কোচেরা তো কখনও আমাকে বারণ করেননি।’’
সে দিন শিবার উল্টোদিকে যিনি ব্যাটসম্যান ছিলেন, সেই বাংলার অনূর্ধ্ব ২৩ দলের অধিনায়ক ঋত্বিক রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘শিবা যে এ রকম প্রায়ই করে, তা জানি। ওর বিরুদ্ধে ব্যাট করার সময় এটা মাথায় ছিল। তাই বলটা খেলতে কোনও অসুবিধা হয়নি।’’