দু’হাত তুলে লাফিয়ে উঠলেন সনি নর্ডি। ম্যাচটা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে।
হাঁটু মুড়ে বসে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করলেন কাতসুমি।
পিয়ের বোয়া সামনে বলবন্তকে পেয়েই জড়িয়ে ধরলেন!
আর বারাসতের গ্যালারি জুড়ে তখন গর্জন— ‘থ্রি চিয়ার্স ফর মোহনবাগান, হিপ হিপ হুররে’। সঙ্গে সবুজ-মেরুন আবিরের ওড়াউড়ি।
বাগান কোচ সঞ্জয় সেন আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চূড়ান্ত ভাবনা যতই আড়াল করতে চান, সনি-বোয়াদের ড্রেসিংরুমে কিন্তু তা প্রবল ভাবেই ঢুকে পড়েছে। জ্যৈষ্ঠের দাবদাহে রাজ্য জুড়ে যতই হাঁসফাঁস অবস্থা চলুক না কেন, বাগানে যেন স্বস্তির বৃষ্টি মুষলধারে নেমে পড়েছে! স্পোর্টিং ম্যাচের সেরা সনি যেমন উচ্ছ্বাস সামাল দিতে না পেরে বলে দিলেন, ‘‘চাপ অনেকটাই কেটে গিয়েছে। ট্রফিটা অল্প অল্প দেখতে পাচ্ছি।’’
বোয়া, বেলো-রা আবার এখনই পরিকল্পনা সেরে ফেলেছেন লিগ চ্যাম্পিয়ন হলে কী ভাবে সেলিব্রেট করবেন। গাড়িতে ওঠার সময় বাগানের মার্কি ফুটবলার বোয়া বলে গেলেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফ্রান্সে উড়ে যাব। সেখানে আমার স্ত্রী-বাচ্চারা রয়েছে। ওদের সঙ্গে ভাগ করে নেব আই লিগ জেতার আনন্দ।’’ প্রীতম কোটাল আবার বলছিলেন, ‘‘আমাদের টিম যে রকম খেলছে তাতে মনে হচ্ছে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব।’’ যে ওডাফাকে এ দিন বাগানের মহাকাঁটা মনে করা হয়েছিল, তিনিও স্পোর্টিংয়ের টিম বাসে ওঠার আগে বলে দিলেন, ‘‘সনিরা যে রকম ছন্দে রয়েছে তাতে বেঙ্গালুরুর পক্ষেও ওদের আটকানো মুশকিল।’’
বোয়া-প্রীতমদের কোচ কিন্তু একেবারেই আবেগপ্রবণ নন। বাস্তবের জমিতে দাঁড়িয়ে সংযত সঞ্জয় বলছেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো এখনও কিছুই হয়নি। বেঙ্গালুরুর কাছে শেষ ম্যাচে হেরে গেলে এই জেতাগুলোর কোনও মানেই থাকবে না।’’ বলবন্ত-শিল্টনরা অবশ্য ম্যাচ ড্র করে নয়, বেঙ্গালুরুকে হারিয়েই লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে চান। বাগান অধিনায়ক শিল্টন পাল বললেন, ‘‘শেষ ম্যাচ না জিততে পারলে এত দিনের সব লড়াই-ব্যর্থ হয়ে যাবে। বেঙ্গালুরুকে তাই হারাতেই হবে।’’
১৩ বছর বাদে বাগানে লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা। তবে সুনীল ছেত্রী, শন রুনিদের বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে লড়াইটা যে মোটেই সহজ না, সেটা মনে করছেন অনেক প্রাক্তনই। আর এই মুহূর্তে বাগানের সব ভালর মাঝে কোচ সঞ্জয়ের ভয় একটাই, ‘‘ফুটবলারদের মধ্যে যেন আত্মতুষ্টি না আসে!’’
রবিবার আই লিগ
ইস্টবেঙ্গল : রয়্যাল ওয়াহিংডো (বারাসত, ৪-৩০)
সালগাওকর : ভারত এফসি