বিদায়: অতিরিক্ত ‘দামি’ সনিকে ছাড়াই দল গঠন। ফাইল চিত্র
সনি নর্দেকে এ বার আর সবুজ-মেরুন জার্সিতে দেখা যাবে না। চরম আর্থিক সমস্যায় ডুবে থাকা মোহনবাগান সিদ্ধান্ত নিয়েছে তিন কোটি টাকা খরচ করে হাইতি মিডিফিল্ডারকে নেওয়া হবে না। ক্লাবকে বহু বছর পরে আই লিগে চ্যাম্পিয়ন করা ফুটবলারকে ছেঁটে ফেলা হবে।
সমর্থকদের কাছে যে হেতু সনি নামটা খুব স্পর্শকাতর বিষয় তাই কেউ প্রকাশ্যে ছাঁটাই শব্দটা বলতে চাইছেন না। সচিব অঞ্জন মিত্র বলে দিলেন, ‘‘গত বছরের তিন কোটি টাকা দেনা রয়েছে। এ বারের দল গঠনের টাকা জোগাড় করতে হবে। টাকা জোগাড় করতে না পারলে সনিকে নেওয়া সম্ভব নয়।’’ গত বছর আই লিগে অর্ধেক ম্যাচ না খেলে প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়েছিলেন সনি। দেশে ফিরে গিয়েছিলেন মরসুমের মাঝপথে। এখন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সুস্থ হয়ে অনুশীলনে নামার ছবি নিয়মিত পোস্ট করছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
মোহনবাগানের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে সনি আইএসএলের বিভিন্ন ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। তাঁকে নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী এটিকে। দল গঠনের দায়িত্বে থাকা সঞ্জয় সেনও চাইছেন পুরনো ছাত্রকে নিতে। সনির সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তাও বলেছেন তিনি। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আটকে আছে দুটো কারণে। এক) সনি আস্ত্রোপচার করার পরে কতটা সুস্থ সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইছেন এটিকে কর্তারা। দুই) এটিকে কর্তারা চাইছেন সনিকে নেওয়ার আগে সঞ্জয় আলোচনা করে নিন নতুন আসা বিদেশি কোচের সঙ্গে। এটিকের পরের মরসুমের বিদেশি কোচ নির্বাচনের কাজ চলছে। তাই অপেক্ষা করতে চান সঞ্জয়ও।
জানা গিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে সনি বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করছেন মোহনবাগানের বিভিন্ন কর্তার সঙ্গে। কিন্তু কোনও সাড়া পাননি। যা খবর, তাতে সনিকে চুক্তিবদ্ধ করতে গেলে বাড়ি ভাড়া, গাড়ি, হাইতি যাতায়াতের খরচ-সহ সব মিলিয়ে প্রায় তিন কোটি টাকা দরকার। স্পনসর না থাকা সত্ত্বেও গত তিন বছর ব্যক্তিগত ভাবে সনিকে নেওয়ার টাকা যে শীর্ষ কর্তা দিতেন, তিনি পদত্যাগ করে সরে গিয়েছেন অনেক দিন। ফুটবল বিভাগের যে দুই কর্তার সঙ্গে সনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তাঁরাও পদত্যাগ করেছেন। ফলে কেউই ডামাডোলের মধ্যে সনির দায়িত্ব নিতে নারাজ। সচিব তো ননই।
মোহনবাগান দলগঠনের দায়িত্বে থাকা পাঁচ সদস্যের কমিটি যে ২৫ জন চুক্তিবদ্ধ ফুটবলারের তালিকা তুলে দিয়েছেন সচিবের হাতে তাঁদের মাইনে দিতে খরচ হবে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা। দিপান্দা ডিকার সঙ্গে চুক্তি প্রায় এক কোটির। নতুন বিদেশি হেনরি কিসেক্কার সঙ্গে চুক্তি আশি লাখের কাছাকাছি। এই টাকা কোথা থেকে আসবে তা জানেন না কেউই। গত বছর দল গড়া হয়েছিল এগারো কোটি টাকার।
ফুটবলারদের দুই বা তিন মাসের মাইনে এখনও বাকি। গত মরসুমে ছোটখাটো তিনটি স্পনসর থেকে প্রায় আট কোটি টাকা পেয়েছিল মোহনবাগান। এ বার ভাঁড়ার শূন্য। কর্তাদের মধ্যে লড়াই চরমে। পদত্যাগের হিড়িক পড়ে গিয়েছে। যা চলবে সামনের সপ্তাহে। সনি না হয় ছাঁটাই হয়ে অন্য দলে যাবেন। কিন্তু চুক্তিবদ্ধ ডিকাদের কী হবে?