আজ থেকে কাজে নামছেন সৌরভ

বোর্ড নয়, সিএবি নিয়েই চিন্তা বেশি

সুপ্রিম কোর্টের যুগান্তকারী রায়ের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে নতুন এক যুদ্ধে নেমে পড়ছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সিএবিতে সংস্কার-সাধনের যুদ্ধ!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৬
Share:

সুপ্রিম কোর্টের যুগান্তকারী রায়ের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে নতুন এক যুদ্ধে নেমে পড়ছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।

Advertisement

সিএবিতে সংস্কার-সাধনের যুদ্ধ!

গোটা ক্রিকেট-ভারত পরবর্তী বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর নাম নিয়ে নিরন্তর চর্চা চালাচ্ছে। আলোচনা চলছে, ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনের রাজপাটে এ বার ‘প্রিন্স অব ক্যালকাটার’ আবির্ভাব ঘটবে কি না। কিন্তু স্বয়ং সৌরভ— এ সব চর্চা-আলোচনায় বিন্দুমাত্র প্রভাবিত নন। রাতে পরিষ্কার বলে দিলেন, ‘‘বোর্ড প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব কী নেব? আগে সিএবিকে ঠিকঠাক করি। কাল থেকেই তার কাজ শুরু করে দিতে হবে?’’

Advertisement

সৌরভকে জিজ্ঞেস করা হল, যদি প্রস্তাব আসে? যদি তাঁকে পর্যবেক্ষকদের প্যানেলে ভাবা হয়, তখন? সিএবি প্রেসিডেন্ট সোজা ‘বাপি বাড়ি যা’ করে প্রশ্নকে বাউন্ডারির বাইরে ফেলে দেন। বলে দেন, ‘‘ও সব নিয়ে ভাবছিই না। এমন কোনও প্রস্তাবের কথা আমি শুনিনি। এ রকম কিছু আসবে কি না, তা-ও জানি না। বরং এখন যা আমাকে করতে হবে, সেটা জানি। লোঢা সুপারিশ মেনে নতুন করে সিএবি-কে সাজানো। পুরো সব পাল্টে ফেলে। ১৯ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করার মানে হয় না। কাল থেকেই সব শুরু করব।’’

সৌরভ বুঝিয়ে দিলেন যে, বোর্ড নয়, লোঢা-সংস্কার মেনে বঙ্গ ক্রিকেট প্রশাসনের শুদ্ধকরণ এখন তাঁর সর্বাগ্র লক্ষ্য। সংস্কার এক নয়, একাধিক। এবং তার প্রয়োগ কী ভাবে হবে, তা নিয়ে সিএবিতে ধোঁয়াশা।

শোনা গেল, খুব দ্রুতই সিএবি-র কয়েক জন পোড়খাওয়া মস্তিষ্কের সঙ্গে নাকি বৈঠকে বসতে চলেছেন সৌরভ। সিএবি-র ভবিষ্যৎ রোডম্যাপ কী হবে, তা নিয়ে। লোঢা আইন মানলে বেশ কিছু বড় পরিবর্তন তো আসতে চলেছে ক্রিকেট প্রশানের কাঠামোয়। যেমন, সত্তরোর্ধ্ব বা ক্রিকেট প্রশাসনে ন’বছর হয়ে যাওয়া কেউ আর থাকতে পারবেন না। তিন বছর বাদে-বাদে কুলিং অফ পিরিয়ডে যেতে হবে। এ সব বিচার করলে, বর্তমান কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে এবং যুগ্ম সচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়কে সরে যেতে হবে। কেউ কেউ বলছেন, এর পর ট্রাস্টি বোর্ড পুরোটাই উঠে যাবে। সহকারী সচিব বলে কেউ আর থাকবে না। সদস্যরা ধন্দে— ওয়ার্কিং কমিটির চেহারাটা কী রকম হবে? এখন যেমন আছে, তার সঙ্গে ‘ক্যাগে’র প্রতিনিধি, পুরুষ ও মহিলা ক্রিকেটার প্রতিনিধি শুধু জুড়ে যাবে, নাকি পুরোটাই উঠে গিয়ে অ্যাপেক্স কাউন্সিল হয়ে যাবে? লোঢা আইন অনুযায়ী বোর্ডে যা করতে বলা হয়েছে। যেখানে প্রত্যেক অনুমোদিত সংস্থা পিছু একজন করে প্রতিনিধি নয়, সব ক’টা মিলিয়ে একজন থাকার কথা। সিএবি-র অনুমোদিত সংস্থা ১২১। তা হলে কি তাদের থেকে এ বার এক প্রতিনিধি হবে? সেটা বাছবে কে? কে ঠিক করবে?

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এত ভাবনার কিছু নেই। লোঢা কমিটি রাজ্য সংস্থার কাঠামোয় ‘স্ট্রাকচারাল’ বদলের কথা বলেনি। অতএব, ওয়ার্কিং কমিটিই থাকবে। শুধু ক্যাগ প্রতিনিধির মতো কাউকে কাউকে জুড়ে। অনুমোদিত সংস্থা পিছু একজন করেই প্রতিনিধি থাকবে, শুধু তাকে লোঢা সংস্কারে যাবতীয় শর্তপূরণ করে আসতে হবে। যেমন, সত্তর বছরের বেশি হলে চলবে না। যেমন, ন’বছরের উপর ক্রিকেট প্রশাসনে হয়ে গেলে, চলবে না। যা-ই হোক, সিএবি সদস্যরা খোলাখুলি এখন একটা বৈঠক চান। সহজে জানতে চান, কী করা যাবে আর যাবে না।

এত পর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু বিরোধিতা— এত কিছুর পরেও তো সেটা নিঃশেষ হল না। সিএবি-তে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জমানার সবচেয়ে বড় বিরোধী মুখ সংস্থারই কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে। এ দিনের লোঢা সংস্কারে সর্বোচ্চ আদালত সিলমোহর দিয়ে দেওয়ায় বলা হচ্ছে, বিশ্বরূপের প্রশাসনিক কেরিয়ার শেষ হয়ে গেল। কিন্তু সিএবি কোষাধ্যক্ষ মানলেন না। উল্টে বললেন, ‘‘রায় অনেক হয়। কিন্তু তার প্রয়োগ কতটা করা সম্ভব হবে, এখনও পরিষ্কার নয়। আর আমার প্রশাসনিক কেরিয়ার শেষ কে বলল? বোর্ডের দরজা এখনও তো খোলা আছে। ওখানে কিন্তু আমার ন’বছর হয়নি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন