অপ্রতিরোধ্য: শুক্রবার এ ভাবেই সাউদাম্পটনের রক্ষণ ভাঙলেন লিভারপুল তারকা মহম্মদ সালাহ। ন’ম্যাচ পরে পেলেন কাঙ্ক্ষিত গোলও। এএফপি
‘ইঁদুর দৌড়’ থামার নয়। আবার প্রিমিয়ার লিগ টেবলের শীর্ষে লিভারপুলের নাম। শুক্রবার সেন্ট মেরিজ স্টেডিয়ামে মহম্মদ সালাহরা ৩-১ হারালেন সাউদাম্পটনকে। লড়াইটা পেপ গুয়ার্দিওলার ম্যাঞ্চেস্টার সিটির সঙ্গে। লিভারপুল ৩৩ ম্যাচে ৮২। সের্খিয়ো আগুয়েরোরা ৮০। তবে একটা ম্যাচ কম খেলে।
দিন সাতেক আগে পেপ গুয়ার্দিওলা বলে বসেন, ‘‘এখন আমাদের দু’টো কাজ। নিজেদের ম্যাচ জেতা আর লিভারপুলের হারা বা ড্র করা কামনা করা।’’ শুক্রবার হ্যাম্পশায়ার কাউন্টির সব চেয়ে বড় শহরে আর একটু হলে লিয়োনেল মেসির প্রাক্তন কোচের মনস্কামনা পূর্ণ হচ্ছিল। ৯ মিনিটে শেন লংয়ের গোলে সাউদাম্পটনই ১-০ এগিয়ে যায়। ৩৬ মিনিটে গোল শোধ করেন লিভারপুলের আফ্রিকান মিডফিল্ডার চব্বিশ বছরের ন্যাবি কেইতা। কিন্তু জয়ের গোল পেতে ‘দ্য রেডস’কে অপেক্ষা করতে হয় ৮০ মিনিট পর্যন্ত।
শেষ ১০ মিনিটে গোল করলেন সালাহ আর জর্ডন হেন্ডারসন। এমন নয় প্রিমিয়ার লিগে এই প্রথম জয়ের গোলের জন্য কোনও ম্যাচে তাদের এতক্ষণ অপেক্ষা করতে হল। ফুলহ্যাম আর টটেনহ্যামের বিরুদ্ধে শেষ দু’ম্যাচেও একই কাণ্ড হয়েছে। এ দিকে সাউদাম্পটন এ দিন একপ্রস্ত হইচইও করল। তাদের দাবি কেইতার গোলের মুভ-এর সময় সালাহ অফসাইডে ছিলেন। রেফারি অবশ্য সে সব
পাত্তা দেননি।
সালাহ ন’ম্যাচ পরে শুক্রবার গোল পেলেন। হেন্ডারসনের হেডের পাস ধরে মাঝমাঠ থেকে অনেকটা ছুটে বাঁকানো শটে অসাধারণ গোল। প্রিমিয়ার লিগে ৬৯ ম্যাচে গোলের হাফসেঞ্চুরির রেকর্ডও করলেন তিনি। লিভারপুল ম্যানেজার য়ুর্গেন ক্লপ তাতে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। রবের্তো ফির্মিনোর ক্রস ধরে পরিবর্ত হিসেবে নামা লিভারপুল অধিনায়ক হেন্ডারসনের গোল তার ঠিক
ছ’মিনিট পরেই।
ম্যাচ শেষের সাংবাদিক সম্মেলনে এসে লিভারপুলের জার্মান ম্যানেজার ক্লপ বুঝিয়ে গেলেন, এখন কী ভাবে খেলে বা কতটা ভাল পারফরম্যান্সে ক্লাব জিতল তা তাঁর বিচার্য নয়। সব ম্যাচে যে কোনও ভাবে পুরো পয়েন্ট এলেই তিনি খুশি। ‘‘কোন ক্লাব সব ম্যাচ ভাল খেলে? হয়তো আমরাও আজ খেলিনি। কিন্তু পুরো পয়েন্ট তো এল। খেতাবের জন্য দৌড়চ্ছি। এখন পয়েন্টই শেষ কথা,’’ বললেন বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচ।
মজা হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগ টেবলে এ বার ২৫ বার এক নম্বরের জায়গাটা বদলাবদলি হল। ১৯৪৫ সালের পরে এমন নজির নেই। নেই সাম্প্রতিক কালে লিভারপুলের ৩৩ ম্যাচে ৮২ পয়েন্ট পাওয়ার নজিরও। ক্লপের কোচিং স্টাইলকে বলা হয়ে ‘গেগেনপ্রেসিং’ ফুটবল। যেখানে বল হাতছাড়া হলে নিজেদের গুছিয়ে নিতে নামে না দল। বরং সঙ্গে সঙ্গে সে বল ছিনিয়ে নিতে ঝাঁপায়। ঠিক যে খেলাটা লিভারপুল এখন প্রচণ্ড গতিসহ খেলছে। নিজের ট্যাকটিক্স নিয়ে ক্লপের মন্তব্য, ‘‘অনেকে বলছে আমরা কেন সিটির (ম্যাঞ্চেস্টার) মতো খেলছি না। আসলে ওই খেলাটা আমরা খেলতে পারব না। তাই চেষ্টাও করব না। আমরা আমাদের মতো খেলি। এবং সেটা বেশ উন্নতমানের ফুটবল। উন্নতমানের বলেই তো এ বার আমাদের নামের পাশে এত পয়েন্ট!’’ আরও যোগ করেছেন, ‘‘মরসুমটা সবার জন্যই বেশ কঠিন। লিগ জিততে ৯০ পয়েন্টের মতো পাওয়া জরুরি। এতটা ভাবা যায় না। তার পরেও আমরা যে খেতাবের দৌড়ে আছি সেটা কম কথা নয়।’’