—প্রতীকী চিত্র।
পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তন নিয়ে ফের জলঘোলা শুরু হয়ে গেল।
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের লাহৌরে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার কথা ছিল। এর আগে আইসিসি উদ্যোগী হয়ে অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশকে পাঠিয়েছিল পাকিস্তানে খেলতে। সেই অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশ খেলে এলেও শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারেরা লাহৌরে খেলতে অস্বীকার করেছে।
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডকে তাদের চল্লিশ জন ক্রিকেটার চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, লাহৌরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি তাঁরা খেলতে যেতে চান না। চিঠিতে সই করেছেন বর্তমান শ্রীলঙ্কা দলের সব সদস্য-সহ চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারেরা সকলে। ২০০৯ সালে এই লাহৌরেই গদ্দাফি স্টেডিয়ামের সামনে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের উপর জঙ্গি হামলা হয়। কয়েকজন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার আহতও হয়েছিলেন। তার পর থেকে আর কোনও আন্তর্জাতিক দল পাকিস্তান সফরে যায়নি।
শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা চিঠিতে পাকিস্তানে না খেলার কথা কিছু সরাসরি লেখেননি। তবে তাঁরা ম্যাচের স্থান বদলানোর জন্য বোর্ডকে আবেদন করেছেন। ক্রিকেটারদের আবেদনে বোর্ড বলেছে, ‘‘আমরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে এই ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলব। সিরিজের মাঝে এই ব্যাপারে ওদের মাথা ঘামাতে দিতে চাইনি। কিন্তু ঘটনাটি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের হাতে আর কোনও রাস্তা নেই। আইসিসি-ও লাহৌরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপারে আমাদের ক্রিকেটারদের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে কথা বলবে।’’
শ্রীলঙ্কা টি-টোয়েন্টি দলের সদস্য থিসারা পেরেরা অবশ্য এর ব্যতিক্রম। তিনি এই চিঠিতে সই করেননি বলেই খবর। তিনি গত মাসে বিশ্ব একাদশের হয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে এসেছেন লাহৌরে। পাকিস্তানের বর্তমান নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তাঁর খুশি থাকার কথা বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে।
২০০৯-এ শ্রীলঙ্কার টিম বাসে জঙ্গি হামলার পর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অবসান হয় পাকিস্তানে। এই হামলায় আহত হন তিলেকরত্নে দিলশান, কুমার সঙ্গকারা, মাহেলা জয়বর্ধনে, অজন্তা মেন্ডিস এবং চামিন্ডা ব্যাস-এর মতো বিশ্বের প্রভাবশালী খেলোয়াড়রা।
শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ডের কর্তারা এই সমস্যার সমাধানের কথা ভাবছেন। তাঁরা বলেছেন, ‘‘আমরা সব রকম বিকল্পের কথা ভাবছি। পাকিস্তান আমাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং আমরা এমন কিছু করব না, যা দুই দেশের সম্পর্কে ব্যাঘাত ঘটায়।’’ তবে এর মধ্যেই গোপন থাকছে না আর একটি তথ্য। আট বছর আগে লাহৌরে জঙ্গি হানার সময় উপস্থিত কয়েক জন এই শ্রীলঙ্কা দলেও আছেন। মনে করা হচ্ছে, সেদিনের সেই আতঙ্ক থেকে এখনও বেরোতে পারেননি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারেরা।