ইডেনে সিএবি দফতরে ঢোকার মুখেই ডান দিকে একটা ছবি টাঙানো। জগমোহন ডালমিয়া বিশ্বকাপ তুলে দিচ্ছেন স্টিভ ওয়র হাতে। সাল ১৯৯৯ ইংল্যান্ড।
এটা বিশ্বকাপের ট্র্যাডিশনই যে আইসিসি প্রেসিডেন্ট সাধারণত চ্যাম্পিয়ন টিমের অধিনায়কের হাতে তুলে দেন। ছিয়ানব্বই বিশ্বকাপ ফাইনালে ট্রফি দিয়েছিলেন বেনজির ভুট্টো যেহেতু রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ফাইনালে উপস্থিত ছিলেন বলে। নইলে এটা আইসিসি প্রেসিডেন্টদেরই অধিকারের মধ্যে পড়ে। বিরানব্বইয়ে যেমন ইমরান খানের হাতে ট্রফি তুলে দেন তখনকার আইসিসি প্রেসিডেন্ট কলিন কাউড্রি। গতবার ধোনির হাতে কাপ তুলে দেন শরদ পওয়ার। পওয়ার দু’হাজার এগারোতে আইসিসি প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
এই পরম্পরা মেনে রোববার জয়ী দলের হাতে বিশ্বকাপ তুলে দেওয়ার কথা আইসিসি প্রেসিডেন্ট এবং অধুনা বিতর্কিত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুস্তাফা কামালের। এমনিতে আইসিসির নতুন গঠনতন্ত্রে প্রেসিডেন্টের তেমন কোনও ক্ষমতাই নেই। যাবতীয় সিদ্ধান্ত আইসিসি চেয়ারম্যানই নিয়ে থাকেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পদ অলঙ্কারিক হলেও আভিজাত্যের নিরিখে ভারতীয় রাষ্ট্রপতির মতোই। যেমন বিশ্বকাপ হাতে তুলে দেওয়াটা তাঁর অধিকার। চেয়ারম্যানের নয়।
যত লড়াই এই ট্রফি নিয়ে। ক্লার্ক বনাম ম্যাকালামের পাশাপাশি চলছে শ্রীনিবাসন বনাম মুস্তাফা কামালও। ছবি: গেটি ইমেজেস
কিন্তু শনিবার রাত থেকে শোনা যাচ্ছে মুস্তাফা কামাল ট্রফি দিন, আইসিসির একাংশ চাইছে না। আর তার মধ্যে অগ্রগণ্য আইসিসি চেয়ারম্যান নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। মুস্তাফা কামালের ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়ে করা মহাবিতর্কিত সব মন্তব্যে আইসিসিতে অন্যদের মতো শ্রীনিও ভয়ঙ্কর রুষ্ট। শোনা যাচ্ছে এ দিন তিনি কামালকে বলেছেন, ম্যাচের ফল আগেই ঠিক ছিল জাতীয় যে সব কথা আপনি বলেছেন তার পর আর এই প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ পুরস্কার আপনার হাত থেকে দেওয়া শোভা পায় না। রাতের খবর অনুযায়ী, ওটা জয়ী দলের হাতে শ্রীনিই হয়তো তুলে দেবেন।
কামালের ঘনিষ্ঠ শিবির মনে করে, এটা করা হলে তিনি ছেড়ে কথা বলবেন না। বিশ্বকাপ হাতে তুলে দেওয়া যে কোনও ক্রিকেট প্রশাসকের স্বপ্ন। শেষ মুহূর্তে এসে সেটা বাধাপ্রাপ্ত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তা উত্তেজিত হতেই পারেন। প্রশ্ন হল, শ্রীনির ইচ্ছে মেনে নেওয়া ছাড়া তাঁর উপায় থাকবে কি না? বিশেষ করে যেখানে ডেভ রিচার্ডসন-সহ প্রায় গোটা আইসিসি বাংলাদেশী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে।
যা দাঁড়াল, কাপ কারা জিতবে আর কে দেবে—দুটো জিজ্ঞাসাই রোববার পর্যন্ত ঝুলে থাকল!