যুগলবন্দি: অনুশীলনে একসঙ্গে সুভাষ ও খালিদ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
অনুশীলনে সংঘাতের জেরে চব্বিশ ঘণ্টা আগেও তাঁরা ছিলেন দুই মেরুতে। কিন্তু সোমবার সকালে দেখা গেল একেবারে উল্টো ছবি। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর (টিডি) সুভাষ ভৌমিকের সঙ্গে হাসতে হাসতে মাঠে ঢুকছেন মহম্মদ আল আমনা ও কাতসুমি ইউসা!
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে এ দিন সকাল আটটা থেকে অনুশীলন শুরু হওয়ার কথা ছিল ইস্টবেঙ্গলের। ফুটবলাররা মাঠে নামার জন্য তৈরি। এমনকী, কোচ খালিদ জামিলও ‘অভিমান’ ভুলে মাঠে নেমে পড়েছেন। কিন্তু দেখা নেই সুভাষ, আমনা, কাতসুমি ও এদুয়ার্দো ফেরিরা-র!
তা হলে কি লাল-হলুদ অন্দরমহলের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠল? আটটা কু়ড়ি নাগাদ তিন ফুটবলারকে নিয়ে সুভাষ মাঠে পৌঁছলেন। জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে যুবভারতীতে এসেই তিন ফুটবলারকে নিয়ে সল্টলেকের একটি রেস্তরাঁয় গিয়েছিলেন লাল-হলুদ টিডি। কফির পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতেই আমনা-র সঙ্গে কাতসুমির বিবাদ মেটালেন তিনি! যদিও আসিয়ানজয়ী কোচের মতে রবিবারের অনুশীলনে দুই তারকার মধ্যে কোনও সংঘাত নেই। বললেন, ‘‘কে বলল ওদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে? দু’জনে একসঙ্গে কফি খেয়ে এসে অনুশীলনে নামল। পুরোটাই রটনা।’’
সুভাষ দাবি করলেন, খালিদের সঙ্গেও তাঁর কখনও দূরত্ব তৈরি হয়নি। অথচ গত বুধবার এই যুবভারতীতেই অনুশীলনের পরে সুভাষের তিরে বিদ্ধ হয়েছিলেন খালিদ। ইস্টবেঙ্গলের টিডি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, মাঠের বাইরে বসে অনুশীলন দেখতে বলবেন খালিদ-কে। এখানেই শেষ নয়। বলেছিলেন, ‘‘খালিদ জামিল তো পেপ গুয়ার্দিওলা, জোসে মোরিনহো, স্যর আলেক্স ফার্গুসন বা জুপ হেইঙ্কেস নন। তাই ও না এলে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব উঠে যাবে না।’’ চার দিনের মধ্যেই একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গেলেন তিনি। সুভাষের কথায়, ‘‘আমরা সব সময়ই একটা সুখী পরিবারের মতো ছিলাম। শরীর খারাপ ছিল বলেই খালিদ অনুশীলনে নামতে পারেনি। এখন ও সুস্থ। তাই অনুশীলন করাচ্ছে।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘তা ছাড়া আমি তো কখনও বলিনি যে, খালিদকে অনুশীলন করাতে দেব না!’’
বদলে গিয়েছেন খালিদ-ও। কে বলবে দু’দিন আগেও অনুশীলন চলাকালীন ড্রেসিংরুমের দরজা বন্ধ করে বসে ছিলেন তিনি। এড়িয়ে চলছিলেন সুভাষকে। কিন্তু রবিবাসরীয় সকালে আমনা-কাতসুমি বিবাদই যেন দু’জনের সম্পর্কের মধ্যে তৈরি হওয়া অদৃশ্য প্রাচীর ভেঙে দিল। এ দিন অনুশীলনের ফাঁকে কখনও সুভাষ ডেকে নিলেন খালিদ-কে। কখনও খালিদ নিজেই এগিয়ে গেলেন সুভাষের দিকে। সুপার কাপের আগে অবশেষে স্বস্তি ফিরল লাল-হলুদ শিবিরে!