অভিযোগ: নাডার কাছে আবেদন করবেন সুব্রত। ফাইল চিত্র
ডোপিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত দেশের অন্যতম সেরা গোলকিপার সুব্রত পাল নাডার কাছে সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনার জন্য আবেদন করতে চলেছেন। পুণে থেকে ফোনে অর্জুন ফুটবলার মঙ্গলবার রাতে আনন্দবাজারকে বললেন, ‘‘আমাকে নাডা যে চিঠি দিয়েছে তাতে জানতে চাওয়া হয়েছে যে নমুনা মূত্রে পাওয়া গিয়েছে সেটা কোথা থেকে এল? আমি জাতীয় শিবিরের ডাক্তারের রিপোর্ট, প্রেসক্রিপশন-সহ সব নাডায় পাঠাচ্ছি। আইনি পরামর্শও নিচ্ছি। দেখি ওরা কী বলে?’’
কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে ফিফা ফ্রেন্ডলি খেলতে যাওয়ার আগের দিন অর্থাৎ আঠারোই মার্চ জাতীয় অ্যান্টি ডোপিং সংস্থা (নাডা) শিবিরের অন্য কয়েকজন ফুটবলারের সঙ্গে সুব্রতর মূত্রের নমুনাও সংগ্রহ করেছিল। তাতেই ধরা পড়ে সোদপুরের মিষ্টুর নমুনা পজিটিভ। সেটা সোমবারই জানানো হয় ফেডারেশন কর্তাদের। জানানো হয় সুব্রতকেও। সুব্রত দাবি করলেন, ‘‘আমি পুরো ঘটনায় হতবাক। জাতীয় শিবিরে অন্তত কুড়ি বার আমার মূত্র পরীক্ষা হয়েছে। কখনও ধরা পড়িনি। আর এতদিন সুনামের সঙ্গে খেলার পর এখন জীবনের শেষবেলায় এসে এসব খেয়ে কী লাভ হবে? আমি ফুটবলকে ধোঁকা দিইনি। কোনও ভুল করিনি। কাশির যে ওষুধ খেয়েছিলাম তাতে টরবোটালিন ছিল। সেটা তো জাতীয় শিবিরের টিম ডাক্তার দিয়েছিল। আমার কাছে প্রেসক্রিপশন আছে।’’
কিন্তু ফিফার আইন বলছে নাডা শেষ পর্যন্ত সুব্রতর কাগজপত্র দেখে সন্তুষ্ট না হলে সর্বোচ্চ চার বছর পর্যন্ত সাসপেন্ড হতে পারেন ভারতীয় ফুটবলের স্পাইডারম্যান। ফেডারেশন সচিব কুশল দাশও দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, ‘‘সুব্রত আমাকে ফোন করেছিল। ও আমাকে জানিয়েছে ওর কাছে সব প্রমাণ আছে সেটা দিয়ে ও ‘বি’ নমুনা পরীক্ষার আবেদন করবে। যদি তাতে সমস্যা মেটে ভাল। না হলে ফিফার নিয়মে শাস্তি হবে।’’
আরও পড়ুন...
অসুস্থ আনোয়ার
নাডার নিয়মে সাত দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে সুব্রতকে। সুব্রত দাবি করলেন , ‘‘ডাক্তারের সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি রিপোর্ট দিলেই বৃহস্পতিবারই আমি সব কাগজ পাঠিয়ে দেব নাডায়।’’ ফেডারেশন সচিব বললেন, ‘‘যত দিন না ‘বি’ স্যাম্পেলের ফল আসছে ততদিন সুব্রত খেলতে পারবে। সাসপেনশন বলবৎ হবে না। তিন-চার সপ্তাহ লাগবে ফল আসতে। তবে কেউ যদি তাঁকে খেলায় এবং দ্বিতীয় নমুনাও পজিটিভ হয় তা হলে যে টিমে ও খেলবে তার সব পয়েন্ট কাটা যাবে।’’ সুব্রত আই লিগে এখন খেলেন ডিএসকে শিবাজিয়ান্সে। এখনও যাদের দু’টো ম্যাচ বাকি। সুব্রত দাবি করলেন, ‘‘দু’টো ম্যাচই খেলাবেন। চিঠিতে তো কোথাও সাসপেন্ডের কথা লেখা হয়নি।’’
সুব্রত আবেদন করলেও তাঁর বাঁচা মুশকিল। সাসপেন্ড হলে একত্রিশ বছরের সুব্রতর ফুটবলার জীবনেও দাঁড়ি পড়ার সম্ভাবনা। ফেডারেশনের দশ বছরের ডোপিং রোধ কমিটির দায়িত্বে থাকা এবং বর্তমানে এএফসি-র মেডিক্যাল কমিটির সদস্য নিশীথ চৌধুরী বললেন, ‘‘সুব্রত আবেদন করলেও তা প্রমাণ করতে হলে অনেক কিছু দেখাতে হয়। কাশির নানা ওষুধ আছে। টারবোটালিন জাতীয় কাশির ওষুধ দিতে হলে সেটা আগে থেকে ফেডারেশনের মাধ্যমে নাডাকে জানানোই নিয়ম।’’