অনুশীলন: সুমন দাস। —নিজস্ব চিত্র।
দিন কয়েক আগে বসিরহাটে আন্তঃবিদ্যালয় ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠে হেরে গিয়েছিল টাকি ভবনাথ হাইস্কুল। কিন্তু প্রতিযোগিতার সেরা হয়েছিল ওই স্কুলের সাইড ব্যাক সুমন দাস। সেই ছেলে এ বার যাবে স্পেনের বার্সেলোনা। লক্ষ্য, আধুনিক ফুটবলের অ-আ-ক-খ শেখা।
সম্প্রতি বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক তথা ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাস তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ১৬টি স্কুলকে নিয়ে ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন। সহযোগিতায় ছিল কলকাতার ‘ফুটবল নেক্স ফাউন্ডেশন’। বসিরহাটের বাসিন্দা, প্রয়াত ফুটবলার রবীন সেনগুপ্ত ওরফে ঘ্যাসদার নামাঙ্কিত সেই প্রতিযোগিতায় অতিথি হিসেবে এসেছিলেন জার্মানির একটি ফুটবল ক্লাবের প্রশিক্ষক জেরাসিমোস অ্যানাস্তাসিও ওরফে মাইক। উদ্দেশ্য, খুদে ফুটবল প্রতিভার খোঁজ। তিনি জানিয়েছিলেন, কলকাতা থেকে দু’জন জন, বর্ধমান থেকে এক জন ফুটবলারকে বাছা হয়ে গিয়েছে। বসিরহাট থেকে এক জনকে বাছবেন। সেই ‘এক জনের’ খোঁজে প্রতিযোগিতার সব ক’টি খেলার উপরে নজর রাখেন সাহেব কোচ। শেষে বেছে নেন একাদশ শ্রেণির ছাত্র সুমনকে। তারপরে সুমনকে আলাদা করে প্রশিক্ষণও দেন।
মাইকের কথায়, ‘‘বাংলার ছেলেদের ফুটবল প্রতিভা আছে। শুধু তাদের মনে গেঁথে দিতে হবে যে, তারা যে কোনও দেশে খেলতে পারে। সেই লক্ষ্যই বাছাই করা চার জনকে বার্সেলোনা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’’ দীপেন্দুবাবু জানান, সুমনের পায়ে খেলা রয়েছে। তাই মাইক ওকে পছন্দ করেছেন। টাকির রোজিপুরের শ্যামল দাস ও রূপালি দাসের দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে সুমন বড়। বার্সেলোনা যাওয়ার কথা জানতে পেরে সুমনের পাসপোর্ট করতে দেওয়া হয়েছে। ঘরের ছেলে বার্সেলোনায় ফুটবল প্রশিক্ষণের যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে জেনে সুমনের পাড়ায় এখন খুশির হাওয়া। টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, ভবনাথ হাইস্কুলের অভিভাবক পরিচালন কমিটির সম্পাদক বিশ্বপতি দাস-সহ এলাকার মানুষ সুমনকে সংবর্ধনা দিয়েছেন। ছোটবেলা থেকে টাকি এরিয়ান ক্লাবে অনুশীলন করছে সুমন। তাঁর প্রথম কোচ সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সুমনের কীর্তি বসিরহাটে অনেক খুদে ফুটবলারকে স্বপ্ন দেখাবে।’’
কী বলছে সুমন নিজে? দেশের জার্সি পরে মাঠে নামার স্বপ্ন দেখা সুমনের কথায়, ‘‘বিদেশে খেলার স্বপ্ন দেখা দূরের কথা, কোনও বিদেশি প্রশিক্ষকের অধীনে ফুটবল শিখতে পারব, সেটাই কোনও দিন ভাবিনি। তবে যখন সুযোগ পেয়েছি, তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’’