ইগর স্তিমাচ। ছবি এএফপি।
ভারতে কোচ হয়ে আসার পরে তাঁর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনেই নানা চমকপ্রদ মন্তব্য করে আলোড়ন ফেলে দিলেন ইগর স্তিমাচ। জানিয়ে দিলেন, সুনীল ছেত্রীকেও দলে থাকতে হলে পরীক্ষা দিতে হবে।
স্তিমাচের মন্তব্য, ‘‘সুনীল ছেত্রী বড় ফুটবলার। প্রচুর ম্যাচ খেলেছে। অভিজ্ঞ। জুনিয়র ফুটবলারদের আইকন। কিন্তু ওকেও প্রথম একাদশে ঢুকতে গেলে লড়তে হবে। অন্যদের মতোই পরীক্ষা দিতে হবে।’’ এবং তারই সঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন, প্রাক্তন কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের দর্শনে তিনি প্রভাবিত হবেন না। বলেছেন, ‘‘কনস্ট্যান্টাইনের জমানায় পাঁচ-ছয় জন এমন ফুটবলার ছিল যারা সুযোগ পায়নি। তাদের ডাকা উচিত ছিল। আমি তাদের ডেকেছি।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘স্টিভনের সময়ে রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলত ভারত। কিন্তু ০-১ পিছিয়ে থেকেও এই ধারা বজায় রাখার পক্ষপাতী নই আমি। রক্ষণ আঁটোসাঁটো করলেই জয়ের রাস্তা খুঁজে পাওয়া যায়। জেতার জন্য আক্রমণাত্মক ফুটবলও খেলতে হবে।’’ আরও যোগ করেছেন, ‘‘আমি চার দিন ভারতে এসেছি। কিন্তু ভারতীয় ফুটবল নিয়ে যা পড়াশুনা করে বা দেখে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি সেটা পাঁচ বছর থাকার সমান।’’
দিল্লির পাঁচতারা হোটেলে শুক্রবার দুপুরে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ব্রোঞ্জজয়ী ক্রোয়েশিয়া দলের সদস্য ইগর এ ভাবেই বুঝিয়ে দিলেন, তিনি কোন ভাবনা নিয়ে কোচিং করাতে এসেছেন। কিংস কাপের প্রস্তুতির জন্য শিবির শুরুর প্রথম দিনই দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন ইগর। ডেকেছেন ৩৭ জন ফুটবলারকে। তার মধ্যে জবি জাস্টিন, ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ-সহ নতুন অনেক ফুটবলার আছেন।
আগের কোচ স্টিভনের ভাবনা এবং ফুটবলার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুনীল ছেত্রীদের নতুন কোচ এ-ও বলেছেন, ‘‘স্টিভনকে কৃতিত্ব দেব যে, তিনি ১৭৭ থেকে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভারতকে তুলে এনেছেন ১০১ নম্বরে। এটা প্রশংসার যোগ্য।’’ পাশাপাশি তাঁর দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য পারফরম্যান্সই শেষ কথা, সেটা মনে করিয়ে দিয়ে ক্রোয়েশিয়ার কোচের মন্তব্য, ‘‘ভারত ঘুমন্ত দৈত্য। এখানে অনেক প্রতিভা আছে। সেটাকে কাজে লাগাতে চেষ্টা করব। আমি আই লিগে ফেডারেশনের দল ইন্ডিয়ান অ্যারোজের খেলা দেখেছি। ওখানে বেশ কিছু প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার আমার নজরে পড়েছে। সুনীল, সন্দেশ ঝিঙ্গানদের মতো আইকন ফুটবলারদের পাশাপাশি ওদেরও দলে দরকার। আমি শিবিরে ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলে খুশি।’’ আই লিগ এবং আইএসএল নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক চললেও তা নিয়ে নিজের মত স্পষ্ট করে দিয়েছেন ইগর। বলে দিয়েছেন, ‘‘দুই লিগকেই আমি গুরুত্ব দেব। আইএসএল এবং আই লিগের মধ্যে তফাত আছে। আইএসএল ব্যক্তি মালিকানার লিগ। এখানে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে লাভের জন্য। কিন্তু আই লিগের বিশাল ঐতিহ্য আছে। এত দিনের ঐতিহ্য কিন্তু অর্থ দিয়ে কেনা যায় না।’’