স্বপ্নপূরণ: রবিবার জেতা আইএসএল ট্রফি নিয়ে সুনীল ছেত্রী। টুইটার
গত বছর ফাইনালে হেরে বিদায় নিয়েছিলেন। সেই ক্ষত এক বছর ধরে পুষে রেখেছিলেন সুনীল ছেত্রী। বেঙ্গালুরুর জার্সিতে দেশের সব টুনার্মেন্ট জেতার গৌরব অর্জনের পর সুনীল রবিবার রাতে বলে দিলেন, ‘‘আমার কাছে এটা একটা মধুর জয়। ফিরে আসার রাত।’’
গোয়াকে হারিয়ে প্রথম বার ইন্ডিয়ান সুপার লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বেঙ্গালুরু অধিনায়কের গলায় দলগত সংহতির জয়গান। ‘‘গত বছর ফাইনালের পর আমাদের দলের বলবয় থেকে কোচ, সবাই মিলে চাইছিলাম ট্রফিটা পেতে। আমরা মরিয়া ছিলাম চ্যাম্পিয়ন হতে। গত বছর যেভাবে শেষ দিনে খেতাব হাতছাড়া হয়েছিল সেটা আমাদের মনে ছিল। আমরা ফিরেছি এবং সেটা মধুর জয় নিয়েই।’’
এই জয়ের ফলে পরের এএফসি এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল বেঙ্গালুরু। সুনীলের মুখে শোনা গিয়েছে সতীর্থদের প্রশংসা। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের কোচের নির্দেশ ছিল তোমরা আক্রমণে যাও, তবে বলের দখল রেখে। আক্রমণের পাশাপাশি রক্ষণে প্রয়োজনে লোক বাড়ানোর কথা বলেছিলেন কোচ। কাজ সহজ ছিল না। আমি, মিকু বা উদান্তা এমনিতে আক্রমণে যেতে অভ্যস্ত। তবে কোচের কথা রাখতে পেরেছি।’’ গোয়ার সেরা ফুটবলার ছিলেন তাদের স্ট্রাইকার ফেরান কোরামিনাস (কোরো)। প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে সোনার বুট পাচ্ছেন এ বার। সুনীল রীতিমতো গর্বিত ভঙ্গিতে বলেছেন, ‘‘কোরোকে আমরা খেলতেই দিইনি। আমাদের সঙ্গে ও তিনটি ম্যাচ খেলেছে এ বার। কিন্তু গোল করতে পারেনি। নিশুকুমার এবং হরমনজ্যোৎ খাবরা ওর উপর নজর রাখছিল। আমি আর উদান্তা ওদের পিছনে থেকে সাহায্য করছিলাম। ফাইনালে ও একটাও গোলের সুযোগ পায়নি রবিবার।’’
আই লিগ, ফেড কাপ, আইএসএল—বেঙ্গালুরুর সোনার দৌড়ের পিছনে যে পেশাদারিত্ব কাজ করেছে তা বোঝা যায় ফাইনালের পর সুনীলের সাংবাদিক সম্মেলন শুনলেই। ‘‘গত বছর ফাইনালে ম্যাচের উপর প্রাধান্য রেখেও সেট পিসে দু’গোল গোল খেয়ে ছিটকে গিয়েছিলাম আমরা। এ বার সেটা মাথায় রেখেছিলাম। সবাই মিলে ঠিক করেছিলাম ওই ভুল আর করব না।’’ খেলোয়াড় জীবনে যত ট্রফি জিতেছেন তার মধ্যে এই জয়কে কত নম্বরে রাখবেন। সুনীল বলেছেন ‘‘প্রথম দুইয়ের মধ্যে থাকবে এই জয়।’’
সুনীলের কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাত আবার ম্যাচ টাইব্রেকারে না যাওয়ায় খুশি। রবিবার রাতে আইএসএল ফাইনালে নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ গোলশূন্য থাকার পর ১১৭ মিনিটে জয়ের গোল পায় বেঙ্গালুরু। ‘‘আমরা চেয়েছিলাম ম্যাচ যাতে কিছুতেই টাইব্রেকারে না যায়। কারণ ওটা লটারির মতো হয়ে যায়। অতিরিক্ত সময়ের একটা বল আমাদের স্বপ্ন সফল করে দিল। এ বার সেট পিস থেকে সাতটা গোল করলাম। তা কতটা কার্যকর জিনিস সেটা প্রমাণিত,’’ বলেছেন কার্লোস।