নির্দেশ না মানলে অবমাননা হবে, ধমক আদালতের

বোর্ড কর্তাদের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা ক্রমাগত সংস্কার সাধনের ডাককে উপেক্ষা করে চলেছেন। লোঢা সংস্কারের কোনও কিছুই তাঁরা মানেননি। আদালতের সর্বশেষ আদেশ ছিল, নতুন সংবিধান তৈরি করতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:২০
Share:

ফাইল চিত্র।

ভারতীয় বোর্ডকে আরও একবার কড়া ধমক দিল সুপ্রিম কোর্ট। বোর্ডের শীর্ষ কর্তাদের উপস্থিতিতেই আদালত বলে দিল, দ্রুত লোঢা সংস্কার নিয়ে নির্দেশ মানুন তাঁরা। না হলে আদালত অবমাননার দায়ে তাঁদের অভিযুক্ত করা হবে।

Advertisement

বোর্ড কর্তাদের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা ক্রমাগত সংস্কার সাধনের ডাককে উপেক্ষা করে চলেছেন। লোঢা সংস্কারের কোনও কিছুই তাঁরা মানেননি। আদালতের সর্বশেষ আদেশ ছিল, নতুন সংবিধান তৈরি করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত পর্যবেক্ষকের দল কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্‌স (সিওএ)-কে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কথা ছিল সিওএ নতুন সংবিধান তৈরি করবে বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু ফের কর্তাদের বিরুদ্ধে অসহযোগের অভিযোগ উঠেছে। তার জেরেই বৃহস্পতিবার ধমক দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

বোর্ডের তিন উচ্চ পদাধিকারী— কার্যকরী প্রেসিডেন্ট সি কে খন্না, কার্যকরী সচিব অমিতাভ চৌধুরি এবং কার্যকরী কোষাধ্যক্ষ অনিরুদ্ধ চৌধুরিকে শো-কজ করেছিল আদালত। তাঁরা তিন জনেই এ দিন সশরীরে হাজির ছিলেন আদালতে। তাঁদের উপস্থিতিতেই আদালত তীব্র ভর্ৎসনা করে বলে, বোর্ড কর্তারা অহেতুক অসহযোগের মনোভাব দেখাচ্ছেন। দ্রুত তাঁরা পরামর্শ দিন বোর্ডের নতুন সংবিধানের ব্যাপারে।

Advertisement

আরও পড়ুন: কপিল, হরভজনের স্মৃতি ফেরালেন কুলদীপ

তিন শীর্ষ কর্তাকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতিরা বলে দেন, ‘‘যদি আপনারা তিন জন আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নতুন সংবিধান তৈরির ব্যাপারে পরামর্শ না দেন, তা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ আরও বলে দেন যে, লোঢার সমস্ত সুপারিশকে রেখে সংবিধানের ‘ড্রাফ্‌ট’ তৈরি করতে হবে। তার মধ্যে বিভিন্ন দিকের বক্তব্য আলাদা করে রাখা যেতে পারে। যেমন, রেলওয়েজ, ইউনিভার্সিটিদের ক্ষেত্রে আর্জি জানানো হয়েছে যে, তাদের পূর্ণ সদস্য হিসেবে রেখে দেওয়া হোক। এই আবেদনকে সংবিধানের খসড়ার মধ্যে রাখা যেতে পারে। অন্যান্য কোনও পরামর্শ থাকলে সেটাও রাখা যেতে পারে বলে আদালত জানায়। কিন্তু শুরুতে খুব রাগত ভাবে কর্তাদের বলা হয়, কেন তাঁরা সিওএ তথা প্রশাসকের দলের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না। সিওএ-র তরফে আদালতে উপস্থিত আইনজীবী অভিযোগ করেন, শীর্ষস্থানীয় তিন কর্তা পুরো খেলাটাই বদলে দিচ্ছেন। কর্তারা লোঢা কমিটির কোনও সুপারিশই কার্যকর করতে চান না। আদালতের সবচেয়ে কড়া পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘‘বারবার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কর্তাদের একগুঁয়েমি এবং অহেতুক বিরোধী মনোভাবের জন্য লোঢা সংস্কারের কোনও কিছুই এখনও করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এ বার যদি ওঁরা কথা না শোনেন, আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করা হবে।’’ নিজেদের মধ্যে কিছু ক্ষণ আলোচনা করার পরে এর পর বিচারপতিরা রায় দেন যে, তিন সপ্তাহের মধ্যে নতুন সংবিধানের খসড়া বানানোর ব্যাপারে বোর্ডের কর্তারা তাঁদের মতামত জানিয়ে দেবেন। এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে। নইলে আদালত অবমাননার দায়ে পড়তে হবে।

সিওএ আইনজীবী জানান, সিওএ ইতিমধ্যেই একটি খসড়া বানিয়ে প্রত্যেককে পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু একটি সংস্থা ছাড়া আর কেউ নিজেদের বক্তব্য জানায়নি। যা শুনে আদালত পরিষ্কার বলে দেয়, এর পর আর কোনও বিলম্ব-নীতি নেওয়া চলবে না। নতুন সংবিধানের খসড়া তৈরির ব্যাপারে আর কোনও সভাও ডাকতে পারবে না বোর্ড। আগামী ৩০ অক্টোবর বোর্ড ফের এ নিয়ে শুনানির দিন স্থির করেছে এবং সে দিন ফের তিন পদাধিকারীকে থাকতে বলেছে। যা পরিষ্কার করে দিচ্ছে যে, লোঢা কমিটির সুপারিশের দু’একটি জায়গা নিয়ে পুনর্বিবেচনা করলেও আদালত তা করতে পারে। কিন্তু লোঢা সংস্কারের একেবারে কোনও কিছুই মানব না, বোর্ড কর্তাদের এই গোঁয়ার্তুমি আর মানবে না আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন