দলের হয়ে গলা ফাটাতে হাজির সমর্থকেরা। নিজস্ব চিত্র
আইপিএল-এ শেষ হাসি হাসল সান রাইজার্স ছাবঘাটি!
ট্রফি ছাড়াও তারা পেল নগদ এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা।
বিড়ি শিল্পনগরী নামে পরিচিত অরঙ্গাবাদে বসেছিল আইপিএল-এর ধাঁচের ক্রিকেটের আসর। সেখানেই কিং সোলেমান সুতি থানা একাদশকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইমানি বিশ্বাস সানরাইজার্স ছাবঘাটি অ্যাথলেটিক ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হয়।
কোনও নিলামের বালাই ছিল না। স্থানীয়দের মধ্যে যাঁরা ক্রিকেটে সড়গড় তাঁদের সঙ্গে ধানবাদ, রাঁচি, পাণ্ডবেশ্বর, আসানসোল, কলকাতা, বহরমপুরের ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া হয়ে ছিল আটটি দল। এলাকার বিশেষ পরিচিত এমন আটজন মানুষকে বেছে তাঁদের পছন্দের ক্লাব বা সংস্থার নামে এক একজনকে আইপিএল দলের নাম জুড়ে দেওয়া হয়। যাতে লোকের আকর্ষণ বাড়ে। হয়েছেও তাই। সাত দিনের খেলা শুরু হয়েছিল ৩ ফেব্রুয়ারি।
রানার্স হয়ে কিং সোলেমান সুতি থানা পেয়েছে ৬০ হাজার টাকা। ম্যান অফ দি ম্যাচ হন পাণ্ডবেশ্বরের বাবু খান। বাবু খেলেছেন সানরাইজার্স ছাবঘাটি দলের হয়ে। রবিবারের ফাইনালে অপরাজিত ২৪ রানই নয়, ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে দখল করেছেন দু’টি উইকেট। ম্যান অফ দি টুর্নামেন্ট হয়েছেন কিং সোলেমান সুতি থানার সিভিক ভল্যান্টটিয়ার সেলিম আনসারি। টুর্নামেন্টে ১১ ওভার বল করে ৮টি উইকেট পেয়েছেন তিনি। ফাইনালে করেছেন ২১ রান। তিনি কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমি ফাইনালেও ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন।
এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্যোক্তা ছিলেন অরঙ্গাবাদ টাউন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসাদুল হক পিকুর। তিনি বলছেন, “এর আগে ফুটবলের আসর বসিয়ে বেশ সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। ক্রিকেটই বা বাদ যাবে কেন?’’
এ দিন ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কিং সোলেমান সুতি থানা ২০ ওভারে ১০২ রান করে। নার তাড়া করতে নেমে সান রাইজার্স ছাবঘাটি ১৩ ওভার ৩ বলে দুই উইকেট হারিয়ে জেতার জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয়।
মন্ত্রী জাকির হোসেনের দল নাইট রাইডার্স অরঙ্গাবাদ টাউন ক্লাব অবশ্য বিদায় নিয়েছিল আগেই। তিনি বলছেন, “বিড়ি শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা। তাই সবটাই করা হয়েছে বিনা পয়সায়।”
আইপিএলে পুলিশের কোনও দল নানা থাকলেও অরঙ্গাবাদের ক্রিকেটে টিম নিয়ে ঢুকে পড়েছিল সুতি থানার পুলিশ। কিং সোলেমান সুতি থানার হয়ে খেলেছেন জেলার বিভিন্ন থানায় কর্মরত সিভিক ও পুলিশ কর্মীরা। সুতির ওসি বিশ্ববন্ধু চট্টরাজ বলছেন, “সারাদিন চোর-ডাকাতদের নিয়ে কারবার। বিনোদনের বড় অভাব। উৎসব, পালা পার্বণেও ডিউটি করতে হয়। তাই সুযোগ পেয়ে টিম গড়ে ঢুকে পড়েছি। ফাইনালে যাব ভাবিনি।’’
এ দিনের খেলায় জেতার পর তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস বলছেন, “সেরা হতে কার না ভাল লাগে। রাজনীতিতে ব্যস্ত থাকায় খেলাধুলোয় যোগ দেওয়ার সুযোগ বড় একটা ঘটে না। প্রাপ্ত অর্থ ক্লাবের উন্নয়নে লাগানো হবে।”