সোনা জিতে কলকাতায় ফিরলেন স্বপ্না বর্মন। —নিজস্ব চিত্র।
আগেও পদক জিতেছেন। বিমানবন্দর হয়ে ঘরে ফিরেছেন। কিন্তু এমন অভ্যর্থনা পাননি কখনও। শুক্রবার বিমানবন্দরে নেমে তাই হকচকিয়ে গেলেন সোনার মেয়ে স্বপ্না বর্মণ। খানিকটা আবেগপ্রবণও হয়ে পড়লেন।
ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় আয়োজিত এশিয়ান গেমসের আসর বসেছিল। তাতে বাংলা থেকে অংশ নিয়েছিলেন স্বপ্না। সেখানে হেপ্টাথলনে সোনা জিতেছেন তিনি।মাঝে কয়েকটা দিন কেটে গিয়েছে। শুক্রবার ঘরে ফিরলেন।
বিমানবন্দরে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ছিলেন বেঙ্গল অলিম্পিক সংস্থার কর্তা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিমান থেকে নামতেই পুষ্পস্তবক দিয়ে স্বপ্নাকে অভ্যর্থনা জানান তাঁরা।
কিন্তু আসল চমকটা ছিল বিমানবন্দরের বাইরে। বেরিয়ে এসে তা টের পান স্বপ্না। সেখানে তখন কয়েকশো মানুষের ভিড়। একসময় যাঁদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতেন, হাতে স্বপ্নার পোস্টার নিয়ে হাজির ছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন
নিজের নজির ভেঙে বিশ্বসেরা সৌরভ
চারুচন্দ্র কলেজের ছাত্রী স্বপ্না। প্রিয় ছাত্রীকে অভিনন্দন জানাতে ছুটে এসেছিলেন কলেজের অধ্যাপক এবং পড়ুয়ারাও। বিমানবন্দর থেকে স্বপ্না বেরোতেই স্বপ্নার নামে জয়ধ্বনি দিতে শুরু করেন তাঁরা। চারিদিক থেকে ভেসে আসে ‘স্বপ্না-স্বপ্না’ চিৎকার।
কৌতুহল ধরে রাখতে পারেননি বিমানবন্দরের সাধারণ যাত্রীরাও। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন কার জন্য এত আয়োজন।সোনার মেয়ের একঝলক পেতে কিছুক্ষণের জন্য তাঁরাও দাঁড়িয়ে যান।
কিন্তু এতকিছুর মধ্যে তখন কী অবস্থা স্বপ্নার? এত মানুষ তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে এসেছেন!নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তিনি। তাই সংবাদমাধ্যমে বলে ফেলেন, ‘‘এত মানুষ শুধু আমাকে অভ্যর্থনা জানাতে এসেছেন? এমন দৃশ্য কল্পনাও করতে পারিনি।আমি অভিভূত।’’
তবে বিমানবন্দর থেকে বেরোতে বেশ বেগ পেতে হয় স্বপ্নাকে। তাঁকে ঘিরে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। আগে থেকে ব্যবস্থা করে রাখলে তা হয়তো এড়ানো যেত। তবে হাসিমুখেই ওইটুকু উৎপাত মেনে নেন স্বপ্না। ভিড় ঠেলে এগিয়ে যান স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ির দিকে। তাতে চেপেই সোজা সাইয়ে হাজির হন। কোচ সুভাষ সরকারের হাতে সেখানেই প্রশিক্ষণ তাঁর। সেখান থেকেই স্বপ্না বর্মণ হয়ে ওঠা। সাইয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানাতে হাজির ছিলেন প্রচুর মানুষ। ছিলেন কোচ সুভাষ সরকারও।সবকিছুর দেখভাল করছিলেন তিনি। গাড়ি থেকে নামতেই ঢাকঢোল বাজিয়ে স্বাগত জানানো হয় স্বপ্নাকে। তারপর দেওয়া হয় সংবর্ধনা। এই মুহূর্তে বিশ্রামের কথা যে একেবারেই ভাবছেন না, সংবর্ধনা সভাতে দাঁড়িয়েই তা ঘোষণা করে দেন স্বপ্না। জানিয়ে দেন, তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য অলিম্পিক। খুব শিগগির প্রস্তুতি শুরু করবেন।