রবিবারের প্রথম পর্বের ডার্বির জের এখনও চলছে দুই ক্লাবের অন্দরে। তবে দু’রকম ভাবে। মোহনবাগান খেতাব জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। আর ইস্টবেঙ্গলের কোচ খালিদ জামিলের চেয়ার টলমলে। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য ইস্টবেঙ্গল কর্তারা কোচ, ফুটবলারদের সঙ্গে দফায় দফায় সভা করছেন।
এই আবহে হঠাৎ-ই ফিরতি ডার্বি বন্ধ করার নির্দেশ দিল বিধাননগর কমিশনারেট। ১৩ জানুয়ারি ফের মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল সনি নর্দেদের সঙ্গে আল আমনাদের। সেটা কবে হবে কেউ জানে না।
ডার্বি বন্ধ করার জন্য পুলিশ ঢাল করেছে গঙ্গাসাগর মেলাকে। পুলিশের পক্ষ থেকে যে চিঠি মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে পাঠানো হয়েছে, তাতে লেখা হয়েছে, গঙ্গাসাগর মেলার জন্য ১৩ জানুয়ারি পুলিশ দেওয়া সম্ভব নয়। ডার্বির জন্য দুটি তারিখ দেওয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। ২১ জানুয়ারি এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি। ওই দু’দিন পুলিশ বেছে দিলেও সে দিন ডার্বি করা যাবে কি না তা নিয়েও সংশয় আছে। সেটা আবার নির্ভর করছে ফেডারেশনের টিভি স্পনসরদের উপর। ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, ‘‘আমরা চিঠি ফেডারেশনের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। ওরাই ঠিক করুক কবে খেলা দেবে।’’ আই লিগের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সুনন্দ ধর এ দিন ম্যাচ সংগঠনের জন্য গিয়েছিলেন কোজিকোড়ে। গোকুলম এফ সি এবং চেন্নাইয়ের ম্যাচ করতে। সেখান থেকে ফোনে তিনি বললেন, ‘‘হাতে চিঠি পাইনি। তবে যদি সমস্যা তৈরি হয় তা হলে ম্যাচ অন্য দিন হবে। দেশে কোনও বড় বিপর্যয় হলেও তো ম্যাচ করা যেত না। তবে দেখতে হবে পুলিশ যে তারিখ দিয়েছে সেটা টিভি স্পনসররা অনুমোদন করে কী না।’’
ম্যাচ পিছোনোয় ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগান চাইলে তাদের কোনও বিদেশি পরিবর্তন করতে পারে। কারণ ফিফার বিদেশি ফুটবলার নেওয়ার জানালা খুলবে ১৫ জানুয়ারি। রবিবারের ডার্বির পর উইলিস প্লাজা এবং চার্লস ডি সুজার পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের অন্দরে। ম্যাচের পর কর্তারা ড্রেসিংরুমেই দলের কোচ খালিদ জামিলকে প্রশ্ন করেছেন, দুই ফুটবলারকে নিয়ে। ডার্বি পিছিয়ে যাওয়ায় কর্তারা চাইলে তাদের বদলাতে পারবেন। তবে তার আগে প্লাজা-চার্লসদের অনেকগুলো ম্যাচ রয়েছে আই লিগে। মোহনবাগান কর্তারা চাইলেও পেট ও চোটে কাবু দিয়েগো ফেরিরাকে বদলাতে পারবেন।
এ দিকে, ডার্বির দিন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়া খালিদ জামিলকে শো কজ বা সতর্ক করতে পারে ফেডারেশন। ডার্বির দিন তুকতাকে অভ্যস্ত ইস্টবেঙ্গল কোচ সকালে চলে এসেছিলেন যুবভারতীতে। গেট না খোলায় মোহনবাগানের এক কর্মীকে তিনি গালাগালি করেন বলে অভিযোগ। ম্যাচের পরও ঝামেলা হয় এই কর্মীর সঙ্গে। মোহনবাগানের ওই কর্মী লিখিত অভিযোগ জমা দেন ম্যাচ কমিশনার রবিশঙ্করের কাছে। আই লিগের সি ই ও বললেন, ‘‘ ম্যাচ কমিশনারের রিপোর্ট দেখার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শো কজ বা সতর্ক করা হতে পারে সে ক্ষেত্রে।’’
খালিদ অবশ্য মঙ্গলবার অনুশীলন করাননি টিমকে। ডার্বি খেলা ফুটবলারদের বিশ্রাম দিয়েছিলেন। অর্ণব মণ্ডল, মহম্মদ রফিকদের ছিল জিম সেশন। জিমে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে ইস্টবেঙ্গল কোচ চলে যান নিজের ঘরে। আজ বুধবার বারাসাতে অনুশীলন করবেন আল আমনারা। শনিবারের শিলং লাজং ম্যাচের প্রস্তুতি হিসাবে। অনুশীলন ছিল না মোহনবাগানেরও। ক্লাব তাঁবুতেই ফিটনেস ট্রেনিং করেন তারা। শুধু ডার্বিতে চোট পাওয়া দিপান্দা ডিকা দৌ়ড়োদৌড়ি করেন। কোচ সঞ্জয় সেন বললেন, ‘‘ডিকাকে নিয়ে সমস্যা নেই। রবিবার চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে খেলতে কোনও সমস্যা হবে না।’’