জন্মদিনে কেক মাখার হাত থেকে বাঁচলেও বুধবার প্র্যাকটিসের ফাঁকে ড্রেসিংরুমে রেহাই পেলেন না কুম্বলে।
এত দিন তাঁর ব্যাটিংয়ের ইউএসপি সবার জানা ছিল। আগ্রাসন!
এ বার থেকে বিরাট কোহালির চরিত্রের ইউএসপি-ও জানা হয়ে গেল ক্রিকেট সমাজের। আনুগত্য!
এবং সেটা সব সময় একের সঙ্গে। বহু জনের সঙ্গে নয়।
সম্পর্কের অর্থ কোহালির কাছে কী? ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ভারতের টেস্ট অধিনায়ক জানাচ্ছেন, তাঁর কাছে যে কোনও সম্পর্কের বুনিয়াদ হল আনুগত্য। এটাই আসল ভিত কোনও সম্পর্ক গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে। উদাহরণ স্বরূপ কোহালি পেশ করেন তাঁর দু’টো সম্পর্ক— ছোটবেলার কোচ রাজকুমার শর্মা আর আইপিএলে তাঁর দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। দেশের এক নম্বর ব্যাটসম্যান সাফ বলে দিচ্ছেন, তিনি বিশ্বাস করেন তাঁর সঙ্গে রাজকুমার এবং আরসিবি-র সম্পর্ক চিরদিনের!
আজ টিভিতে
দ্বিতীয় ওয়ান ডে-তে মুখোমুখি ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড
(স্টার স্পোর্টস ১, দুপুর ১-৩০)
‘‘সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমি সর্বদা আনুগত্যকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আর সেটা বরাবরের জন্য একজনের সঙ্গে। যেমন সেই ১৯৯৮ থেকে আমার কোচ এক জনই (রাজকুমার শর্মা)। এবং সেটা কখনও পাল্টায়নি। আইপিএলে আমি একটাই ফ্র্যা়ঞ্চাইজির (আরসিবি) হয়ে খেলে আসছি। আর সেটাও কোনও দিন পাল্টাবে না,’’ বলেন কোহালি। গত রাতে বিরাট কোহালির উপর দিল্লির ক্রিকেট সাংবাদিক বিজয় লোকপল্লির বই ‘ড্রিভেন’ প্রকাশের অনুষ্ঠানে কপিল দেব, বীরেন্দ্র সহবাগ, অনিল কুম্বলের মতো ক্রিকেট কিংবদন্তিদের পাশে বসেও কোহালি দিব্যি বলে দিতে পেরেছেন, বিশ্ব ক্রিকেটে তাঁর নিজের উত্তুঙ্গ জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও তিনি এক জনকে এখনও সমঝে চলেন। বলতে গেলে ভয়ই পান! তিনি আর কেউ নন। তাঁর বরাবরের কোচ রাজকুমার শর্মা।
রানমেশিন কোহালি বলেছেন, ‘‘উনি (রাজকুমার শর্মা) একমাত্র মানুষ, যাঁর কাছে আমি এখনও বকুনি খাওয়ার ভয় পাই। এখনও আমি ওঁর মুখের উপর কোনও কথা বলতে পারি না। আর সেটার কারণ ওঁর প্রতি আমার আনুগত্য। ভয়টা আমার আসে ওর প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা থেকে।’’
এর পরে বিরাট কোহালি নিয়ে বলার পালা ছিল উপস্থিত অন্যদের। সহবাগ, যিনি তাঁর এককালের ধুঁয়াধার ব্যাটিংয়ের মতোই অধুনা টুইটার আর ব্লগে চালিয়ে খেলে হইচই ফেলে দিয়েছেন ক্রিকেটমহলে, স্মৃতিচারণ করেন দিল্লি রঞ্জি টিমের কোহালিকে নিয়ে। সহবাগ বলেন, ‘‘এখনও মনে আছে প্রদীপ সাঙ্গোয়ান আমাকে এক দিন বলেছিল, ‘ভাইয়া, এক লড়কা হ্যায় জো আপকো ভি পিছে ছোড় দেগা’। তো আমার খুব কৌতূহল ছিল জানার, ছেলেটা কে?’’ এর পরে সহবাগের সংযোজন, ‘‘তো আমার দেখা কোহালির প্রথম ম্যাচেই ও একটা ড্রাইভ মেরেছিল যেটা লং-অন, লং-অফ থাকতেও বলের ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি। কিন্তু তখনও কোহালি যেমন নম্র ছিল, আজও তাই।’’
ফৌজি শিবিরে গিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তুলে নিলেন মণীশ পাণ্ডে, রোহিত শর্মারা।
ভারতের প্রাক্তন আর বর্তমান দুই চিফ কোচের কাছেই সবচেয়ে পছন্দ কোহালির প্রাক্-ম্যাচ প্রস্তুতি পর্বটা। মাঠে কোহালির অনুপ্রেরণামূলক নেতৃত্ব এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী গেমপ্ল্যান বদলে ফেলার ক্ষমতার প্রশংসা করেন অনিল কুম্বলে। রবি শাস্ত্রী আবার বলে দেন, কোহালি সর্বকালের গ্রেট ক্রিকেটার হয়ে ওঠার দিকে এগোচ্ছেন। বিশ্বকাপজয়ী প্রথম ভারতীয় অধিনায়ক কপিল দেব সবচেয়ে প্রশংসা করেন কোহালির ফিটনেসের।
কোহালির জন্য একটা টিপসও থাকছে কপিলের। ‘‘কঠিন পেশাদার জীবনে সফল হতে তাজা মনের ভীষণ দরকার। তাই রসবোধটা রেখো। নিজেকে নিয়েও মজা করতে পারার ক্ষমতা থাকা চাই।’’
ছবি: টুইটার।