আকর্ষণ: ইনদওরের পথে নতুন তারকা কুলদীপ যাদব। —নিজস্ব চিত্র।
এক দিকে যখন ক্রিকেট জ্বরে গা পুড়ছে শহরের ক্রিকেটপ্রেমীদের, অন্য দিকে তখন বৃষ্টিতে সব ঠাণ্ডা করে দেওয়ার ব্যস্ততা। রবিবার ইনদওরে তৃতীয় ওয়ান ডে-র ভবিষ্যৎ এই দুইয়ের টানাপোড়েনেই ঝুলছিল যেন।
নবরাত্রির উৎসবের আনন্দকে দশ গুণ বাড়িয়ে বিরাট কোহালিরা রবিবারেই সিরিজ জিতে নেবেন কি না, সেটা নিয়ে কৌতূহল থাকার পাশাপাশি এখন আতঙ্কও দেখা দিয়েছে। ঠিক যেমন কলকাতার ম্যাচের আগেও ঘটেছিল। বৃষ্টিতে ম্যাচটাই ভেস্তে যাবে না তো?
শুক্রবার সকালে ইনদওরে পৌঁছনোর পর খবর নিয়ে জানা গেল, গত দশ-বারো দিন ধরে শহরে চলছে মেঘ-বৃষ্টির খেলা। হোলকার স্টেডিয়ামে সাধারণ প্লাস্টিকে ঢাকা মাঠের বাউন্ডারি লাইনের আংশিক খোলা অঞ্চলে পা দিতেই তা কাদায় ডুবে যাওয়ার উপক্রম। বৃষ্টি থামলেও আকাশে তখনও জমাট কালো মেঘ। মনে হল যেন ইডেন ম্যাচের আবহের রিপ্লে। ম্যাচ ঘিরে অনিশ্চয়তা। কিন্তু ইডেনে ম্যাচের দিন সকালে যেমন রোদ ঝলমলে আকাশ মুখ তুলে চেয়েছিল, ইনদওরের আকাশেও কি সূর্যের তেমনই হাসি দেখা যাবে রবিবার?
শুক্রবার বিকেলে দুই দল মধ্য প্রদেশের সবচেয়ে বড় শহরে ঢুকে পড়ার পর থেকে অবশ্য ছবিটা বদলাতে শুরু করেছে। সন্ধ্যায় আবহাওয়ার ওয়েবসাইটে আশার বাণি, শনি-রবি দু’দিনই নাকি রোদ উঠবে। এই পূর্বাভাস সত্যি হলে যে পুরো ম্যাচ হচ্ছেই, তা জানিয়ে দিলেন মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার প্রধান কিউরেটর সমন্দর সিংহ। ২০০১ থেকে যিনি এখানকার উইকেট প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত আছেন। সমন্দর বললেন, ‘‘টানা দু’ঘণ্টা রোদ পেলেই খেলা হবে। আর পূর্বাভাসে তো দু’দিন রোদের কথা বলা আছে। সুতরাং চিন্তা নেই।’’ অথচ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত শহরের বহু অঞ্চলে জমে ছিল কোমর সমান জল এবং তুমুল যানজটে শহর প্রায় থমকে গিয়েছিল। তবু শহরে ওয়ান ডে ম্যাচ নিয়ে উৎসাহ তুঙ্গে ওঠে দুই দল এসে যাওয়া ইস্তক।
বিদায়: ইডেনে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ২-০ এগিয়ে ভারতীয় দল। এ বার লক্ষ্য হ্যাটট্রিক।
শুক্রবার দুপুরে কলকাতা ছাড়ছেন কোহালি, ধোনি। —নিজস্ব চিত্র।
মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার এক কর্তা জানালেন, গত মঙ্গল-বুধ দু’দিন ম্যাচের টিকিট বিক্রির কথা ছিল। সে জন্য সোমবার রাত থেকেই কাউন্টারের সামনে হাজার হাজার মানুষের লাইন পড়ে। সাড়ে আঠাশ হাজারের মধ্যে কুড়ি হাজার টিকিট বিক্রির জন্য দেওয়া হয়েছিল। সে সবই শেষ হয়ে যায় মঙ্গলবারেই। ইডেনে ভারতের জয়ের আগেই। তখনও এ শহরের মানুষ আন্দাজ করতে পারেননি, রবিবার তাঁদের সামনেই সিরিজ মুঠোয় চলে আসতে পারে কোহালিদের। শুক্রবারও তালা দেওয়া কাউন্টারগুলোর সামনে টিকিটপ্রার্থীদের ভিড় দেখা গেল।
সমন্দর সিংহও আশা দিচ্ছেন। বলেন, ‘‘আমি যত দিন এখানে উইকেট বানাচ্ছি, ভারত কোনও ম্যাচ হারেনি। এ বারও আশা করি তা-ই হবে।’’ বাইশ গজের চরিত্র নিয়ে অবশ্য কিছুটা ধন্দে রয়েছেন কিউরেটর। বললেন, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে যা বৃষ্টি হয়েছে, তাতে উইকেট যে কত স্যাঁতসেঁতে হয়ে গিয়েছে, বুঝতে পারছি না। রোদ উঠলে অবশ্য উইকেট শুকনো হবে। প্রচুর রান উঠবে।’’
কিন্তু ভারতীয় দলের দুই বিধ্বংসী স্পিনারের জন্য খুব বেশি আশ্বাসবাণী শোনাতে পারছেন না তিনি। বললেন, ‘‘এত বৃষ্টির মধ্যে স্পিনারদের পছন্দের উইকেট দেওয়া কঠিন। তবে ওদের পিচের সাহায্য লাগে না। সে জন্যই তো এই সময়ে ওদের দলে নেওয়া হয়েছে। টিম ম্যানেজমেন্টের দূরদর্শিতা প্রশংসা করার মতো।’’