গোলের উচ্ছ্বাস ভারত শিবিরে। ছবি: এআইএফএফ।
এতটা কাছে গিয়ে এ ভাবে হেরে যাওয়াটা যেন মানতে কষ্ট হচ্ছে! শুধু দলের ফুটবলারদের বা কোচের নয়, আপামর ভারতবাসীরই এক অবস্থা।
এমন একটা গোল। ও ভাবে পোস্টে লেগে ফেরা। প্রথমার্ধের শেষে পর পর আক্রমণ। কলম্বিয়াকে রীতিমতো চাপে রাখা। সবই তো ছিল আজকের ম্যাচে। শুধু পয়েন্টটাই এল না। একটা ড্র-ই হয়তো আশা জিইয়ে রাখতে পারত ভারতের। কিন্তু, তেমনটা হল না। হিসেব কষলে অনেক কিছুই হয়তো ভাবা যায়। তিন নম্বর দল হিসেবে এখনও যাওয়ার একটা সুযোগ থাকবে ভারতের সামনে। যদি ঘানার বিরুদ্ধে জিতে থাকা যায়। ঘানা এই টুর্নামেন্টের সব থেকে শক্তিশালী দল হিসেবে এলেও সোমবার ইউএসএ-র কাছে হেরে গিয়েছে। সেটাই ভারতের কোচকে আশা দিচ্ছে। এ দিন যে খেলাটা খেলল ভারতের যুবরা সেই খেলা ধরে রাখতে পারলে যা কিছুই হতে পারে।
কিন্তু, এ ভাবে হেরে হতাশ ভারতের কোচ নর্টন দে মাতোস। ম্যাচ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে সেই হতাশার কথাই বলে গেলেন তিনি। বললেন, ‘‘হতাশ লাগছে। এই পর্যায়ের ফুটবল খেলাটা কিন্তু গর্বের। প্রথমার্ধে দুটো গোল হয়ে থাকলে তো বদলে যেত ম্যাচের রং।’’
আরও পড়ুন
• বিশ্বকাপে প্রথম গোল ভারতের, অনবদ্য খেলেও মানতে হল হার
নিজেদের ভুলটা বুঝতে পেরেছেন কোচ। বার বার যে সেটপিস থেকেই গোল হজম করতে হচ্ছে। নিজেই মনে করালেন মেক্সিকোতে ন’গোল হজমের কথা। বলছিলেন, ‘‘মেক্সিকোতে ন’গোল খেয়েছিলাম। তার সাতটাই ছিল সেটপিস থেকে। সেই সমস্যাটা কাটাতে হবে।’’ সেই সময় গোলকিপারদের ট্রেনিং করানোর জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল পাওলো নামে এক কোচকে। এক মাসের ট্রেনিংয়ে যে ভারতীয় দলের গোলকিপারদের উন্নতি হয়, তার প্রমাণ অবশ্য ধিরাজ। এ দিনও ভারতের গোলের নীচে একাধিক পতন রুখল সে। যদিও কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় গোল হজমের জন্য ভারতের গোলের উচ্ছ্বাসকেই দায়ী করলেন পর্তুগিজ কোচ। বললেন, ‘‘এক মিনিটের মধ্যেই গোল হয়ে গিয়েছিল। আমার মনে হয় গোল করার ঘোর থেকে ছেলেরা বেরতে পারেনি।’’
এটাই আসলে অনভিজ্ঞতা। উচ্ছ্বাস যত তাড়াতাড়ি কাটিয়ে ফেলবে ততই ভাল। যদিও এই ছোট ছোট ছেলেদের কাছে ওই গোলটি ইতিহাস হয়ে থাকবে। ভারতীয় ফুটবলেও লেখা থাকবে জিকসনের নাম। যদিও কোচের মতে, ‘‘ম্যাচটা ১-১ হলে ঠিক হত। আগের ম্যাচে অবশ্য ২-১কে সঠিক ফল বলেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন
• ঘানাকে হারিয়ে শেষ ১৬ প্রায় নিশ্চিত করে ফেলল ইউএসএ
শুধু কোচই নন, হতাশ ফুটবলাররাও। মিক্স জোনে যখন অধিনায়ক অমরজিৎ কিয়ামকে ধরা হল তখনও সেই হতাশা থেকে বেরতে পারেনি। মেনেও নিলেন সেই কথা। এত কাছে গিয়ে জিততে না পারার হতাশায় ডুবে পুরো দল। সবাই পাস কাটিয়ে বেরিয়ে গেল। মুখে কুলুপ। সঙ্গে একগুচ্ছ চোট। প্রায় পাঁচ জন ফুটবলারকে দেখা গেল পায়ে বরফ বেঁধে বেরতে। বরিসের মাথা ফেটেছে। শোনা যাচ্ছে ওর মাথা ঘুরছে। পরের ম্যাচে ওকে পাওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এই সবের মধ্যেই অমরজিৎকে অবশ্য স্বস্তি দিচ্ছে জিকসনের গোল পাওয়া। বলছিল, ‘‘হারের হতাশা তো আছেই। কিন্তু আমার ভাই গোল পাওয়ায় আমি খুশি (জিকসন অমরজিতের তুতো ভাই)। ওর প্রথম ম্যাচ হওয়ায় কিছুটা নার্ভাস ছিল ও। কিন্তু পরে ধীরে ধীরে খেলায় ঢুকে পড়ে। ম্যাচটা ড্র রাখতে পারলে ভাল হত।’’