‘রোডম্যাপ ঠিক হলে এরা অলিম্পিক্স পদক আনবে’

ফোনে যখন ভোপালে ধরা হল গলায় এক রাশ আবেগ। তাঁর বাবার নামে রাখা স্টেডিয়ামে ভারতের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৃশ্য দেখে। পরক্ষণেই অশোক কুমার ধ্যানচাঁদ উত্তেজিত হয়ে পড়লেন জুনিয়র হকি টিমের কথা বলতে গিয়ে।

Advertisement

শমীক সরকার

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৯
Share:

বিজয়ীর ট্রফি নিয়ে। ছবি: পিটিআই।

ফোনে যখন ভোপালে ধরা হল গলায় এক রাশ আবেগ। তাঁর বাবার নামে রাখা স্টেডিয়ামে ভারতের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৃশ্য দেখে। পরক্ষণেই অশোক কুমার ধ্যানচাঁদ উত্তেজিত হয়ে পড়লেন জুনিয়র হকি টিমের কথা বলতে গিয়ে।

Advertisement

...ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়ামে ভারত পনেরো বছর পর বিশ্বকাপ জিতছে, এটা দেখে ঠিক কেমন মনে হচ্ছিল বোঝানো মুশকিল। আবেগ, উচ্ছ্বাস সব একাকার। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও দেখলাম কথাটা বলছিলেন। সত্যি, বাবা দেশকে যা দিয়েছেন, দেশের হকিকে যে পথে নিয়ে গিয়েছেন সেটা না হলে আজকের এই দিনটা আমরা হয়তো দেখতাম না।

সত্যি বলতে এই টিমটার উপর প্রথম থেকেই আমার খুব আশা ছিল। গোটা টুর্নামেন্টেই এরা যেমন খেলেছে তাতে ফাইনালে বেলজিয়ামকে না হারাতে পারলে আশ্চর্য হতাম। গুরজন্ত আর সিমরনজিতের প্রথমার্ধে গোলদুটো তো দুর্দান্ত। গোটা টুর্নামেন্টেই এদের পারফরম্যান্স দেখে আমার মনে হয়েছে এদের অনেকেই সিনিয়র টিমে খেলার ক্ষমতা রাখে।

Advertisement

ম্যাচটার পরই অনেকে আমার কাছে জানতে চাইছিলেন এই টিমটার ভবিষ্যত কী? অনেক বছর অলিম্পিক্সে পদক না জেতার যন্ত্রণাটা এরা মুছতে পারবে কি না? আমি বলব, অবশ্যই পদক দিতে পারে এই টিমটা। শুধু পদক কেন, সোনা জেতারও ক্ষমতা আছে। কিন্তু তার সঙ্গে এটাও বলব তার জন্য টিমটাকে আগামী চার বছরে ঠিক রাস্তায় নিয়ে যেতে হবে। রোডম্যাপটা ঠিকঠাক করতে হবে।

সিনিয়র লেভেলে চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে কিন্তু কয়েকটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে। যেমন, মেন্টাল টাফনেস। বুঝতে হবে, ম্যাচে আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। ম্যাচ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিপক্ষকে কোনও সুযোগ দেওয়া যাবে না আসলে মাঠে প্লেয়ারদের মধ্যে একটা আত্মতুষ্টি চলে আসাটা স্বাভাবিক। কেন বলছি কথাটা, সেটা এই ফাইনালেই পরিষ্কার। প্রথমার্ধে দুটো গোল দেওয়া পর্যন্ত আমাদের ছেলেরাই কিন্তু মাঠে দাপিয়ে বেড়িয়েছে। কিন্তু দু’গোলে এগিয়ে গিয়েই টিমটায় একটা গা ছাড়া ভাব চলে এসেছিল। ম্যাচটা আমরা জিতেই গিয়েছে এই ব্যাপারটা ভারতীয় খেলোয়াড়দের মাথায় ঢুকে যাওয়ার জন্যই কিন্তু বেলজিয়াম গোল শোধ করার অতগুলো সুযোগ তৈরি করতে পারল। শেষ পর্যন্ত একটা গোল শোধও করে দিল।

আরও একটা কথা বলব। এই টিমটাকে অন্তত দু’টো বছর এক সঙ্গে খেলাতে হবে। দু’-তিন জন বদল হতে পারে, কিন্তু কোরটা যেন একই থাকে। আর সিনিয়রদের সঙ্গে এখনই এদের খেলিয়ে না দেওয়াই ঠিক হবে। এক সঙ্গে টিমটা থাকলে বোঝাপড়টা তৈরি হবে, জয়ের খিদেটা আসবে।

চারটে বছর তো সময় আছে। টিমটাকে তৈরি করুক হকি ইন্ডিয়া। টোকিওয় আমরা ঠিক পদক জিতব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন