দুই মেরুতে দাঁড়িয়ে দুই বঙ্গসন্তান কোচ! প্রথম জন পঁচাত্তরের অরুণ ঘোষ হওয়ার দিকে ক্রমশ এগোচ্ছেন। পরের জন ময়দানে নতুন অস্তিত্বের সন্ধানে বুঁদ।
শুক্রবার ম্যাচটা তাই বারাসত স্টেডিয়ামে মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন এবং টালিগঞ্জ আগ্রগামী কোচ সুভাষ ভৌমিকের মধ্যে মর্যাদার ট্রফি বনাম সম্মান রক্ষার লড়াই। লিগ জয়ের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার জন্য এক দিকে যখন টালিগঞ্জকে যে কোনও মূল্যে হারাতে চাইছেন সঞ্জয়, তখন লিগ টেবলে সবার নীচে থাকা টালিগঞ্জের জন্য পয়েন্ট নিশ্চিত করে অলৌকিক প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় ময়দানের ‘ভোম্বলদা’।
ভারতসেরার মুকুট পরে স্থানীয় লিগ হাতছাড়া হলে অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে সঞ্জয়কে। হয়তো তার আঁচ ইতিমধ্যে টের পেতেও শুরু করে দিয়েছেন তিনি। না হলে ময়দানে ঠান্ডা মাথার কোচ হিসেবে পরিচিত সঞ্জয় এ দিন প্র্যাকটিসে এমন আকস্মিক মেজাজ হারাবেন কেন? ফুটবলাররা সামান্য ভুল করলে বকাঝকা করছেন। তরুণ স্টপার প্রতীক চৌধুরীকে তো প্র্যাকটিসের বাইরেই বার করে দিলেন! পরে সঞ্জয় বলছিলেন, ‘‘টালিগঞ্জ ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট হলে আমাদের কালকেই কলকাতা লিগ শেষ।’’
সুভাষ অবশ্য তাঁর ইদানীংকার বিনয়ের চাদর খুলে বেরোতে চাইলেন না। উল্টে বাগানকে ‘এক্সট্রা ফিট’ বলে শুরুতেই বল ঠেলে দিলেন সঞ্জয়ের কোর্টে। তাঁর কথায়, ‘‘তিন প্রধানের বিরুদ্ধে খেলা মানেই তো বড় ম্যাচ। টিমে কে আছে, না আছে, তা নিয়ে কিছু যায় আসে না। আর মোহনবাগানের ম্যাচ আমি দেখেছি। দারুণ ফিট টিম।’’
সুভাষের তবে একটা সুবিধা, ডুডু বাদে বিপক্ষ টিমের অনেক ফুটবলারই তাঁর চেনা। তাই সবুজ-মেরুনের কার কোথায় দুর্বলতা, সেটা নিশ্চয় অঙ্ক কষে নিয়ে নামবেন গত মরসুমের মাঝপথে আচমকা বাগানের প্রাক্তন হয়ে যাওয়া মেগা কোচ। যা ঠিক হয়েছে, ওপারা এবং আদেলেজা শুরু থেকেই খেলবেন।
বাগান কোচও দলে খুব একটা পরিবর্তন করছেন না। শুধু সঞ্জয় বালমুচুর বদলে সফর সর্দার খেলতে পারেন ডিফেন্সে। সঞ্জয়ের প্র্যাকটিস দেখে মনে হল, ডুডু-নির্ভরতা কাটিয়ে টিমে গোল করার লোক বাড়াতে মরিয়া তিনি। বলেন, ‘‘ডিফেন্ডারদের কাজটা থ্যাঙ্কলেস জব। একটা মিস, একটা গোল। সেখানে স্ট্রাইকাররা দশটা মিস করে একটা গোল করলেই হিরো।’’
বুঝতে অসুবিধা হওয়ার নয় যে, আগের আর্মি ম্যাচে ডুডু-আজহারদের গোল নষ্ট করা দেখে দারুণ বিরক্ত বাগান কোচ। এমনকী বাগান ড্রেসিংরুমেও তার প্রভাব পড়ে। তবে কোচের বিরক্তি ফুটবলারদের উপর আদৌ কোনও প্রভাব ফেলতে পেরেছে কি না, সেটা শুক্রবার বারাসতেই বোঝা যাবে। কেন না শুক্রবার নয় তো, আবার এক বছরের অপেক্ষা।
পঁচাত্তরে দু’টো বড় ঘটনা ঘটেছিল ময়দানে। ইস্টবেঙ্গলের লিগ জয়ের ডাবল হ্যাটট্রিক। মোহনবাগান কোচ অরুণ ঘোষের পদত্যাগ।
প্রথমটা হয়তো এ বারও ঘটতে চলেছে। তবে সঞ্জয়ের অবশ্য পঁচাত্তরের অরুণ ঘোষ হওয়ার প্রশ্ন নেই। কারণ তেরো বছর পর আই লিগ জয়ের জৌলুসেই বাগান-কোচ থেকে যাবেন সঞ্জয় সেন।
শনিবার আসছেন জুদেলিন
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
ব্রাজিলিয়ান গুস্তাভোকে এনে এখনও সেভাবে ফিট করে মাঠে নামাতে পারেনি মোহনবাগান। কলকাতা লিগও প্রায় হাতছাড়া। এই অবস্থায় হাইতির আর এক স্টপার জুদেলিন আভাস্কাকে ট্রায়ালে নিয়ে আসছে মোহনবাগান। শনিবার শহরে পৌঁছচ্ছেন সনি নর্ডির পাঠানো ফুটবলারটি। ক্লাব সূত্রের খবর, গুস্তাভো এবং জুদেলিনের মধ্যে একজনকে নেওয়া হবে আই লিগে। কলকাতা লিগ এবং বাংলাদেশের টুর্নামেন্টে ট্রায়াল হবে দু’জনেরই।