Tokyo

Tokyo Olympics : প্রথম বার অলিম্পিক্সে রূপান্তরকামী, ইতিহাস নিউজিল্যান্ডের লরেল হুবার্ডের

২০১৩ সাল পর্যন্ত হাবার্ড পুরুষদের বিভাগে নামতেন। ২০১৫ সালে ঘোষণা করা হয় রূপান্তরকামী অ্যাথলিটরা অলিম্পিক্সে মহিলা বিভাগে অংশ নিতে পারবেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২১ ১৩:২০
Share:

একরাশ বিতর্ক নিয়ে প্রথম বার অলিম্পিক্সে নামতে চলেছেন রূপান্তরকামী ভারোত্তোলক লরেল হুবার্ড। ফাইল চিত্র

২০১৫ সালের কমনওয়েলথ গেমসে হাত ভেঙে যাওয়ার পর মনে করেছিলেন, সব কিছু শেষ হয়ে গেল। কিন্তু তেমনটা হয়নি। বরং দাপটের সঙ্গে ফিরে এসেছেন নিউজিল্যান্ডের লরেল হুবার্ড। প্রথম রূপান্তরকামী অ্যাথলিট হিসেবে আসন্ন টোকিয়ো অলিম্পিক্সে খেলার ছাড়পত্র পেলেন ৪৩ বছরের এই ভারোত্তোলক। তবে ইতিহাস গড়লেও তাঁকে ঘিরে তৈরি হয়েছে একরাশ বিতর্ক। মহিলাদের ৮৭ কেজি বিভাগে নামতে চললেও সেটা একাধিক দেশের ক্রীড়া সংস্থা ও প্রাক্তন অ্যাথলিটরা মেনে নিতে পারছেন না। চলছে তীব্র প্রতিবাদ।

Advertisement

২০১৩ সাল পর্যন্ত হাবার্ড পুরুষদের বিভাগে নামতেন। ২০১৫ সালে ঘোষণা করা হয়েছিল রূপান্তরকামী অ্যাথলিটরা অলিম্পিক্সে মহিলা বিভাগে অংশ নিতে পারবেন। তবে অন্য মহিলাদের সঙ্গে লড়তে হলে সেই রূপান্তরকামী অ্যাথলিটের শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা প্রতি লিটারে অন্তত ১০ ন্যানোমোলস হতে হবে। কোনও প্রতিযোগিতায় নামার কমপক্ষে ১২ মাস আগে এই পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক বলেও জানিয়েছিল অলিম্পিক্স কমিটি।

নিউজিল্যান্ড অলিম্পিক সংস্থার তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা হুবার্ডকে অলিম্পিক্স খেলানোর ব্যাপারে সব সময় সাহায্য করেছি। সে এখন পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তরিত হয়েছে। তাই ওর মহিলাদের বিভাগে নামতে কোনও বাধা নেই।’ সেই নির্দেশ মেনেই ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন এই ভারোত্তোলক। হুবার্ড বলছেন, “গোটা দেশ ও আমাদের অলিম্পিক্স সংস্থা পাশে না দাঁড়ালে এত বড় সুযোগ আমার জীবনে আসত না। তিন বছর আগে কমনওয়েলথ গেমস খেলার সময় আমার হাত ভেঙে যায়। সেই সময় অনেকেই খেলা ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু আমার মন সায় দেয়নি। তবে পরিবার, কাছের কয়েক জন বন্ধু ও দেশের অলিম্পিক্স সংস্থার কর্তাদের ভালবাসার সৌজন্যে গত ১৮ মাসে সেই অন্ধকার সময় কাটিয়ে উঠেছি।”

Advertisement

তবে হুবার্ডকে ঘিরে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকে যেমন এই উদ্যোগের প্রশংসা করছেন, তেমনই অনেকের ধারণা সুবিধা পেতেই হুবার্ড এমনটা করেছেন। নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন মহিলা ভারোত্তোলক ও অলিম্পিয়ান ট্রেজি লেমব্রেস বলেছেন, “এটা এরকেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। এক্ষেত্রে নারীদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হবে। আমরা নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি বিশ্বব্যাপী। খেলাধুলোর ক্ষেত্রেও নারী-পুরুষের সমান অধিকারেরর কথা বলা হয়। কিন্তু এখন দেখছি অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। অনেক নারী ক্রীড়াবিদই আমার কাছে এসে বলছে ওদের ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নের মুখে। তবে আসল ব্যাপার হল, এর বিরুদ্ধে আমরা কিছুই করতে পারব না। কারণ আমাদের কথা দেশের অলিম্পিক্স সংস্থা শুনছে না। কারণ আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স সংস্থার সায় রয়েছে।”

হুবার্ডের অলিম্পিক্সে অংশ গ্রহণ করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বেলজিয়ামের ভারোত্তোলক অ্যানা ভ্যানবেলিংহেন। তাঁর মতে, “হুবার্ড পদক জিতলে একজন মহিলা অ্যাথলিটকে অপমান করা হবে। ওকে ছাড়পত্র দেওয়া অনেকটা খারাপ রসিকতার মতো ব্যাপার।” প্রতিবাদের তালিকায় রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রও।

সে ৮ বছর আগের কথা। ৩৫ বছর বয়সে রূপান্তরকামী হয়েছিলেন হুবার্ড। রূপান্তরকামী হয়ে অলিম্পিক্সে অংশ নেওয়ার জন্য বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। নিজের দেশের একাংশ, পাশের দেশ অস্ট্রেলিয়া ও বেলজিয়ামে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন একাধিক প্রাক্তন ভারোত্তোলক। তবে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স কমিটি কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই ভারোত্তোলকের পাশে দাঁড়াল। তাই তো এ বার প্রথম অলিম্পিক্স পদক জিতে আরও একটি ইতিহাস গড়তে চাইছেন এই রূপান্তরকামী অ্যাথলিট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন