উদ্বিগ্ন: দলের পারফরম্যান্সে চিন্তায় ট্রেভর মর্গ্যান। ফাইল চিত্র
ইস্টবেঙ্গল কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান মনেপ্রাণে চেয়েছিলেন বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে মোহনবাগানের হার। আই লিগে ফিরতি ডার্বির আগে যাতে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন সনি নর্দে, কাতসুমি ইউসা-রা। কিন্তু হল তার উল্টো। সুনীল ছেত্রীদের ৩-০ উড়িয়ে দিল মোহনবাগান। মর্গ্যান অবশ্য কাতসুমির দ্বিতীয় গোলের পরেই টিভির চ্যানেল বদলে ফেলেছিলেন!
রবিবার লাল-হলুদ কোচ বললেন, ‘‘টিভিতেই মোহনবাগান বনাম বেঙ্গালুরু ম্যাচ দেখছিলাম। কিন্তু ২-০ হয়ে যাওয়ার পরেই চ্যানেল বদলে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মনোনিবেশ করেছিলাম।’’
আগামী রবিবারই মোহনবাগানের বিরুদ্ধে আই লিগের ফিরতি ডার্বি। সনি-দের পারফরম্যান্সে উদ্বিগ্ন হয়েই কি চ্যানেল বদলে ফেলেছিলেন? মর্গ্যান বললেন, ‘‘অস্বীকার করার জায়গা নেই যে, মোহনবাগান দারুণ ছন্দে রয়েছে। তবে আমাদের এখন তা নিয়ে ভাবার সময় নেই। প্রথমত, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য শেষ চারটি ম্যাচ জিততেই হবে। দ্বিতীয়ত, তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলগুলোর দিকে। কারণ, ওরা পয়েন্ট নষ্ট না করলে খেতাবজয় অসম্ভব।’’
আই লিগে খেতাবের দৌড়ে মোহনবাগানের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের রহস্যটা কী? মর্গ্যান বললেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে মোহনবাগান প্রায় একই দল ধরে রেখেছে। ঘনঘন কোচও পরিবর্তন করেনি। তারই সুফল এখন ওরা পাচ্ছে।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘সনি, কাতসুমি-ই মূলত পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে। দু’জনেই এই মুহূর্তে সেরা ফর্মে রয়েছে।’’
ডার্বি জিততে হলে সবুজ-মেরুন যুগলবন্দিকে আটকাতেই হবে। সনি-কাতসুমির জন্য ইস্টবেঙ্গল কোচের স্ট্র্যাটেজি কী? মর্গ্যান বললেন, ‘‘ডার্বি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। এটুকু বলতে পারি, ম্যান মার্কিং করে সনি-কাতসুমিকে আটকানো সম্ভব নয়।’’
ইস্টবেঙ্গলও চলতি মরসুমে দুর্দান্ত দল গড়েছিল। কিন্তু হঠাৎ ছন্দ হারিয়ে ফেলার কারণ কী? লাল-হলুদ কোচের ব্যাখ্যা, ‘‘আইজল এফসি, চার্চিল ব্রাদার্স ও চেন্নাই এফসি-র বিরুদ্ধে হার ছন্দ নষ্ট করে দিয়েছে।’’ তার পরেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে বললেন, ‘‘চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও জয় হাতছাড়া করেছিলাম শুধু মাত্র নিজেদের ভুলে। সে দিন মাঠে ফুটবলারদের মধ্যে দায়বদ্ধতার অভাব ছিল!’’
মোহনবাগানের দুরন্ত প্রত্যাবর্তনই শুধু নয়, ডার্বির আগে মর্গ্যানের দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে ফুটবলারদের চোট-আঘাত ও রক্ষণের ব্যর্থতায়। শনিবার অ্যাকাডেমির অনূর্ধ্ব-১৮ দলের বিরুদ্ধে কোনও মতে হার বাঁচান মেহতাব হোসেন-রা। ডিফেন্ডারদের ভুলেই দু’গোল খায় আই লিগ টেবলে দু’নম্বরে থাকা দল। আর মাঝমাঠের প্রধান ভরসা ওয়েডসন আনসেলমে কুঁচকির চোটের জন্য শেষ তিনটি ম্যাচ খেলতে পারেননি। ডার্বিতে কি তাঁর মাঠে ফেরার সম্ভাবনা আছে? লাল-হলুদ কোচ জানিয়ে দিলেন, তিনি কোনও ঝুঁকি নিতে চান না। কারণ, ডার্বিতে চোট পেলে শেষ তিনটি ম্যাচেও পাওয়া যাবে না তাঁকে। বললেন, ‘‘সোমবার থেকে ওর প্র্যাক্টিসে নামার কথা। তবে ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ করলেই ওকে ডার্বিতে খেলানোর কথা ভাবব।’’
ওয়েডসনকে নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যেই রবিবার কলকাতায় পৌঁছে গেলেন ডিফেন্ডার ইভান বুকেনিয়া। আর এক বিদেশি উইলিস প্লাজার আজ, সোমবার সকালে আসার কথা।