মর্গ্যানের রং আবার লাল-হলুদ। ইস্টবেঙ্গলে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে শহরে ব্রিটিশ কোচ। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের তীব্র সমালোচকের নাম র্যান্টি মার্টিন্স।
একইসঙ্গে তাঁর সদ্য প্রাক্তন কোচের সমর্থকও লাল-হলুদের নাইজিরিয়ান গোলমেশিন।
একই দিনে দুই অবতারে র্যান্টি!
‘বিবি’-র (বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যকে সংক্ষেপে এই নামেই উল্লেখ করেন র্যান্টি) ইস্টবেঙ্গল কোচের থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত মোটেই মেনে নিতে পারছেন না টিমের এক নম্বর স্ট্রাইকার। আবার দলের কিছু সিনিয়র ফুটবলারের বিরুদ্ধে বিশ্বজিতের করা অভিযোগকে সমর্থনও করছেন র্যান্টি। কার্যত আই লিগে ইস্টবেঙ্গলের ব্যর্থতার কারণ হিসেবে টিমের অভ্যন্তরীণ ঝামেলাকে দায়ী করছেন তিনিও।
সোমবার হাওড়া ময়দানে লাল-হলুদের প্র্যাকটিসের পর র্যান্টির চাঞ্চল্যকর মন্তব্য, ‘‘বিবি কেন পদত্যাগ করল জানি না। তবে আমাদের টিমে যে ভাবে সব কিছু চলছে, যা কিছু ঘটছে, পেশাদারিত্বের চূড়ান্ত অভাব রয়েছে। আবার টিমকে জেতানো যেমন ফুটবলারদের কর্তব্য, তেমনই কোচেরও তো কিছু দায়িত্ব থাকে। আমি যদি এই টিমটার কোচ হতাম, তা হলে এ ভাবে সরে দাঁড়াতাম না। দায়িত্ব ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে কোনও কিছুর সমাধান করা যায় না।’’
র্যান্টির সমালোচনা-সমর্থন দুই-ই শুনে হেসে ফেলছেন বিশ্বজিৎ। বললেন, ‘‘সবারই ব্যক্তিগত মতামত থাকতে পারে। র্যান্টিরও আছে। তবে আমি সরে দাঁড়িয়েছি ক্লাবকে আই লিগ না দিতে পারার সব দায় নিয়ে। আর সিদ্ধান্তটা সঠিক বলেই আমি মনে করি।’’
বেঙ্গালুরুর আই লিগ জয়ের পরের সকালে রীতিমতো তেতে ছিলেন র্যান্টি। একের পর এক ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন। নাম না করে টিমের কিছু সিনিয়র ফুটবলারকে একহাত নিতেও পিছপা হলেন না। ‘‘এমন অনেক ফুটবলার আছে যারা কোচ, সতীর্থদের সঙ্গে ঝামেলা করে, টিমের মধ্যে সমস্যা তৈরি করে। আর সেই সব করতে গিয়ে নিজেদের খেলায় ফোকাস হারিয়ে ফেলে। আমাদের টিমেও এ রকম কিছু ফুটবলার আছে,’’ বলে থেমে না থেকে র্যান্টি যোগ করলেন, ‘‘এ বার হয়তো মাঠের বাইরে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যেগুলো নিয়ে বড় ইস্যু করা হয়েছে, আর টিমে তার বড় প্রভাবও পড়েছে।’’ র্যান্টির ক্ষোভের গনগনে আঁচ থেকে বাদ পড়ছেন না লাল-হলুদ কর্তারাও। ‘‘শুরু থেকে ক্লাবকর্তাদের আরও বেশি করে এই বিষয়গুলো দেখা উচিত ছিল,’’ বলে দেন দীর্ঘ এক যুগ ভারতের ক্লাব ফুটবলে খেলা র্যান্টি।
এ দিকে, ইস্টবেঙ্গলে তাঁর দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে সোমবার রাতেই শহরে পৌঁছে গিয়েছেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। আজ মঙ্গলবার সকালে হয়তো ইস্টবেঙ্গল প্র্যাকটিসেও যেতে পারেন। মর্গ্যান দায়িত্ব নেওয়ার পর ফেড কাপে ইস্টবেঙ্গল ঘুরে দাঁড়াবে বলে নতুন করে আশা করছেন র্যান্টি। তার আগে অবশ্য আই লিগের শেষ ম্যাচ শিলং লাজংয়ের বিরুদ্ধে জিততে চান তিনি। ‘‘আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে না পারি, অন্তত লাজংকে হারিয়ে রানার্স যদি হওয়া যায়, সেই চেষ্টাই এখন করতে হবে। আশা করি মর্গ্যান আসার পর ফেড কাপ থেকে আমাদের টিমের পরিস্থিতি পাল্টাবে।’’