আজ থেকে শুরু ছোটবেলায় ফেরার পালা

একটা বাচ্চার গল্প বলি। যার জন্ম ঈশ্বরের ইচ্ছেয়। পরের বছর দশে পা দেবে বাচ্চাটা। এর আবির্ভাব বছরে দু’মাসের জন্য। শ’য়ে শ’য়ে প্লেয়ারের কাঁধে চেপে, হাজার হাজার মানুষের ঠোঁটে, কোটি মানুষের হৃদয়ে, বসার ঘরের প্রতিটা সোফা, প্রতিটা চেয়ারে, প্রতিটা টুলে।

Advertisement

রবি শাস্ত্রী

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩৫
Share:

একটা বাচ্চার গল্প বলি। যার জন্ম ঈশ্বরের ইচ্ছেয়। পরের বছর দশে পা দেবে বাচ্চাটা। এর আবির্ভাব বছরে দু’মাসের জন্য। শ’য়ে শ’য়ে প্লেয়ারের কাঁধে চেপে, হাজার হাজার মানুষের ঠোঁটে, কোটি মানুষের হৃদয়ে, বসার ঘরের প্রতিটা সোফা, প্রতিটা চেয়ারে, প্রতিটা টুলে।

Advertisement

তবে এই কিশোরকে মেনে নেওয়া সহজ ছিল না। প্রত্যেকটা প্রশংসার সঙ্গে আসত অগুনতি গালাগালি। প্রত্যেকটা ফুলের তোড়ার সঙ্গে ছিল মাংস ছিঁড়ে নেওয়া কয়েক ডজন ছুরি। নিজের বাড়ির লোকেরাই কিশোরের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। অন্যের দোষে ওকে শাস্তি দিয়েছে। তবু এই কিশোর নিজে নিজেকে সারিয়ে তুলে ক্রমশ ফুলের মতো ফুটে উঠেছে।

ওর আগমন মানে জাতীয় উৎসব। ওর আগমন মানে একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তবে এ বছর এই কিশোরের আগমনের আগে আসুন, চেন্নাই আর জয়পুরের সতীর্থ ক্রিকেট সমর্থকদের দুঃখটা ভাগাভাগি করে নিই। ওরা এ বার একে দেখতে পাবে না। যারা নিজেদের হলুদে রাঙিয়ে মাঠ ভরাতো, তাদের পক্ষে ধোনিকে অন্য জার্সিতে দেখাটা দুঃস্বপ্ন। ধোনি বনাম রায়না। দিল্লি ডেয়ারডেভিলসে রাহুল দ্রাবিড়। জাডেজা বনাম অশ্বিন। হৃদয় জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো সব ব্যাপার! কিন্তু লিগের মৌলিকতা আর ভাবমূর্তি অটুট রাখতে কঠিন সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া দরকার ছিল।

Advertisement

টিম নিয়ে কাটাছেঁড়ায় যাচ্ছি না। এ বার সব কিছুই প্রায় ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। সাধারণত অভিজ্ঞ যোদ্ধা যে কোনও অবস্থাতেই ভাল করবে। কিছু তরুণ শিরোনাম কেড়ে নেবে। কয়েক জন আমাদের চিন্তাভাবনাকে বুড়ো আঙুল দেখাবে। নতুন সুপারস্টার তো কার্লোস ব্রেথওয়েট। যার জন্য ওর টিম দিল্লি ডেয়ারডেভিলসকে নিয়ে এত কথা হচ্ছে। জাহির খান যে ওদের ক্যাপ্টেন, সেই খবরটাও চাপা পড়ে গিয়েছে ব্রেথওয়েট-উন্মাদনায়।

তা হলে এই কিশোরের আবেদন কোথায়? হয়তো ও আমাদের শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। যখন আমরা স্টান্স বা ফুটওয়ার্ক নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে প্রত্যেকটা বল মাঠের বাইরে পাঠাতে মুখিয়ে থাকতাম। যখন হাত-পা কেটে গেলেও সে সব ভুলে এবড়োখেবড়ো আউটফিল্ডে ঝাঁপিয়ে পড়তাম। যখন স্বাধীনতা আর আশা নিয়ে বল করতে ছুটতাম। এই কিশোর সবাইকেই সুযোগ দেয়। দর্শক আর প্লেয়ারের মধ্যে একটা খাঁটি, ব্যক্তিগত যোগাযোগ তৈরি করে দেয়। পেশাদার খেলাধুলোর সাফসুতরো দুনিয়ায় এটা হল গলি ক্রিকেটের অকুণ্ঠ আবেদন।

তা হলে চিল্যাক্স। গেম অন!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement