অনুশীলনে জার্মান দল। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার মাঠে যখন ব্রাজিল তখন গ্যালারিতে যে সবুজ-হলুদ পতাকার দৌড়াত্ম যে বেশি হবে সেটাই স্বাভাবিক। এমন প্রশ্ন উড়েও গিয়েছিল জার্মান কোচের কাছে। তাতে তিনি কলকাতার সমর্থন চেয়েছেন বটে কিন্তু তিনি এটা জানেন না এখানে যত ব্রাজিল ততই আর্জেন্তিনা। আজ সব আর্জেন্তিনা সমর্থকরা যে তাদের হয়েই গলা ফাটাবে সেটা কিন্তু এখনও জানেন না জার্মান কোচসহ পুরো দল। বরং ব্রাজিলের সমর্থনের কথা শুনে কিছুটা হতাশই হয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে, পুরো ব্রাজিল দল ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছে বিশ্বকাপের সময় কী ভাবে দু’ভাগ হয়ে যায় গোটা বাংলা। একদল ব্রাজিল তো অন্যদল জার্মানি। এ বারও যে তার অন্যথা হবে না সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আর্জেন্তিনা না থাকায় সেই পুরো সমর্থনটাই পাবে জার্মানি। পলিনহো বলেন, ‘‘আমি কখনও ৬০হাজার দর্শকের সামনে খেলিনি। খুব বেশি হলে ৪০হাজার দর্শকের সামনে খেলেছি ব্রাজিলে। কিন্তু আজ গ্যালারি যে আমাদের সমর্থন করবে তাদের কিছু ফিরিয়ে দিতে চাই।’’
আরও পড়ুন
ম্যাচ জিতে ছেলে মাতেওর গানের ভিডিও পোস্ট করলেন মেসি
টিকিটের বণ্টন নিয়ে ক্ষুব্ধ পিকে
ব্রাজিলের পলিনহো তো জানিয়েই দিয়েছেন, কলকাতার যে সমর্থনের কথা তারা শুনেছেন, তার প্রতিদান দিতে চান তারা। সমর্থকদের জয় উপহার দিতে চান। জার্মানি কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পর থেকেই টিকিটের চাহিদা বাড়তে থাকে। কারণ বোঝাই গিয়েছিল উল্টোদিক থেকে উঠে আসবে ব্রাজিলই। যদি না কোনও অঘটন ঘটে। কোনও অঘটন না ঘটিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে কলকাতায় নামছে ব্রাজিল। জার্মানি তো ছিলই। ম্যাচের আগের দিন পুরো দলকে একটু বেশি সময় বিশ্রাম দেওয়ার জন্য নিয়ম ভেঙে সকাল ১০টাই অনুশীলন করিয়েছেন কোচ। তার পর পুরো দিন পুরো দলের বিশ্রাম। কারণ এই ম্যাচ শারীরিক লড়াইয়ের সঙ্গে সঙ্গে মনস্তাত্বিকও। কারণ সামনে ব্রাজিল।
এই দুই দল যুব বিশ্বকাপে মুখোমুখি হবে এই সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পর থেকেই বার বার উঠে এসেছে ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে ব্রাজিলের সাতগোল হজমের সেই দিনের কথা। উঠে এসেছে এটা কী বদলার ম্যাচ ব্রাজিলের জন্য? দাদাদের হারের বদলার কথা মাথায় নিয়ে নামলে চাপ বাড়বে তাই দু’পক্ষের কেউই তিন বছর আগের সেই হার বা জয় নিয়ে ভাবতে নারাজ। বরং ভবিষ্যতের সিনিয়র দলকে যাতে এই ছেলেরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে তার জন্যই সবাই সেরাটা দিতে মরিয়া।
ব্রাজিল যখন হোটেলের ঘরে বিশ্রাম নিয়েছে তখন চাপ কাটাতে জার্মান টিম ঘুরে গিয়েছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে। জার্মান কোচ উইক অবশ্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মানসিকতা থেকে ছেলেদের আলাদা রাখতে চেয়েছেন। রাত ৮.১৫তে অনুশীলনের আগে তিনি জানিয়ে দিলেন, ‘‘আমরা এখানে শুধু ফুটবল খেলতে আসিনি। ভুললে চলবে না এরা সব ১৬-১৭ বছর বয়সী। ওদের এখন শেখার সময়। এখান থেকে উন্নতির সুযোগ পাবে। এত বড় ভর্তি স্টেডিয়ামে খেলার অভিজ্ঞতা হবে ওদের।’’