ফিটনেসই বদলে দিয়েছে, বলছেন পূজারা। ফাইল চিত্র
বিরাট কোহালি শুধু বড় রানই করেন না। সেই রানটা খুব দ্রুতই তোলেন। যে গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলাটা বাকি ব্যাটসম্যানদের পক্ষে খুবই কঠিন। এ কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন কোহালিরই সতীর্থ চেতেশ্বর পূজারা।
পূজারা-কোহালি জুটি নাগপুর টেস্টের অনেকটা সময়ই শাসন করেছে শ্রীলঙ্কা বোলিং। অধিনায়কের সঙ্গে বড় পার্টনারশিপ গড়ার অভিজ্ঞতা থেকে পূজারা বলছেন, ‘‘দেখুন, কোহালি হচ্ছে এমন একজন ব্যাটসম্যান যে সব ফর্ম্যাটে অসাধারণ খেলে। ও যে ভাবে শুরু করে, সেটা অন্য কোনও ব্যাটসম্যানের পক্ষে সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। আমার মনে হয়, এটা কোহালির আত্মবিশ্বাসেরই প্রতিফলন। গত দু’তিন বছর ধরে ও অসাধারণ ক্রিকেট খেলে যাচ্ছে। অন্য কোনও ব্যাটসম্যানের পক্ষে কোহালির স্ট্রাইক রেটের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া খুবই কঠিন।’’
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের প্রথম ইনিংসে মুরলী বিজয়ের স্ট্রাইক রেট ছিল ৫৭.৯১। ১৪তম টেস্ট সেঞ্চুরি করার পথে পূজারার স্ট্রাইক রেট ৩৯.৫০। ওয়ান ডে বিশেষজ্ঞ রোহিত শর্মা অপরাজিত ১০২ রান করার পথে স্ট্রাইক রেট রাখেন ৬৩.৭৫। আর ডাবল সেঞ্চুরি করা কোহালির স্ট্রাইক রেট ৭৯.৭৭। তৃতীয় দিনে ভারত ৬১০ রান তুলে ডিক্লেয়ার দেয়। ৩৮৪ রানে পিছিয়ে থেকে শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে করেছে এক উইকেটে ২১।
পাশাপাশি পূজারা আরও জানাচ্ছেন, নাগপুরের পিচে ব্যাট করাটা খুব সহজ কাজ ছিল না। বিশেষ করে যদি দ্রুত রান তোলার ব্যাপারটা মাথায় রাখতে হয়। ‘‘ইডেনের পিচের সঙ্গে নাগপুরের পিচের অনেক তফাত। কলকাতায় পিচে ঘাস ছিল। শুরুর দিকে পেসাররা সাহায্য পেয়েছে। প্রথম ইনিংসে সেটা ভালই বোঝা গিয়েছে। কিন্তু নাগপুরের পিচ সম্পূর্ণ অন্য রকম।’’
নাগপুরের পিচে কী সমস্যা হচ্ছে, সেটাও বলেছেন পূজারা। তাঁর কথায়, ‘‘এই উইকেটটা একটু স্লো। বল ভাল ব্যাটে আসে না। ফলে এখানে স্ট্রোক খেলা বা রান করাটা বেশ কঠিন কাজ। বাউন্ডারি পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। তাই আমরা স্ট্রাইক রোটেট করার ওপর জোর দিই। তবে যখনই সুযোগ পেয়েছি, বাউন্ডারি মারার চেষ্টায় ছিলাম। কিন্তু তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ছিল খুচরো রান নিয়ে খেলা। এটা এমন পিচ, যেখানে আপনি হয়তো আউট হবেন না, কিন্তু দ্রুত রানও তুলতে পারবেন না।’’
পূজারার ব্যাটিংয়ের একটা দ্রষ্টব্য বিষয় হল, দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাট করে যাওয়া। যে জন্য তিনি নিজের ফিটনেসকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন। বলছেন, ‘‘গত দেড়-দু’বছর ধরে আমি নিজের ফিটনেস বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছি। আমার ভাগ্য ভাল, কোনও রকম চোট-আঘাতের সমস্যায় পড়তে হয়নি। আমি এখন পুরোপুরি ফিট। তাই দ্রুত সিঙ্গলস নিতে কোনও সমস্যা হয়নি। এমনকী আমি এখন অনেক তাড়াতাড়ি ক্লান্তি দূর করে পরবর্তী চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি হয়ে যেতে পারি।’’
নিজের ব্যাটিং ধারাবাহিকতা নিয়ে পূজারা বলেছেন, ‘‘আমি আমার ব্যাটিংয়ে বিশেষ কিছু পরিবর্তন করিনি। টেকনিক্যালি বিশেষ বদল আনিনি। আমার যা কিছু উন্নতি হয়েছে, সেটা ফিটনেসে। ফিটনেস ভাল হওয়াতেই আমি এ রকম নিয়মিত রান করে যেতে পারছি। তা ছাড়া যদি পাঁচ দিনই মাঠে থাকতে হয়, তা হলে আপনার ফিটনেস তো ভাল হতেই হবে।’’
পূজারা মনে করেন, অতীতের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর এবং ইংলিশ কাউন্টিতে খেলার অভিজ্ঞতা তাঁকে এ রকম ব্যাট করতে সাহায্য করছে। এবং ভবিষ্যতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও করবে। ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম টেস্ট শুরু হচ্ছে ৫ জানুয়ারি। তার আগে নিশ্চয়ই পুরোপুরি তৈরি হয়ে যেতে পারব,’’ বলেছেন পূজারা।