ইডেনে উদয় নতুন তারকার

বিধ্বংসী রজনীশ, প্রথম রঞ্জি ফাইনালে বিদর্ভ

গুরুবাণীর দুরন্ত স্পেলের সুবাদে রঞ্জি ট্রফিতে প্রথমবার ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন সত্যি হল বিদর্ভের। কর্নাটকের বিরুদ্ধে নাটকীয় সেমিফাইনালের পঞ্চম দিনে পাঁচ রানে জিতে ইনদওরের টিকিট হাতে পেলেন ফৈয়জ ফজলরা।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:১৫
Share:

দুরন্ত: কর্নাটককে শেষ করে রজনীশ। ইডেনে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

বুধবার রাতে ঘুম হয়নি তাঁর। আর পরের দিন মাঠে নেমে বিপক্ষের ঘুম ছুটিয়ে দিলেন রজনীশ গুরুবাণী। বিদর্ভের তরুণ ফাস্ট বোলার। যাঁর সুইং আর পেস আটকে দিল কর্নাটককে।

Advertisement

গুরুবাণীর দুরন্ত স্পেলের সুবাদে রঞ্জি ট্রফিতে প্রথমবার ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন সত্যি হল বিদর্ভের। কর্নাটকের বিরুদ্ধে নাটকীয় সেমিফাইনালের পঞ্চম দিনে পাঁচ রানে জিতে ইনদওরের টিকিট হাতে পেলেন ফৈয়জ ফজলরা। দ্বিতীয় ইনিংসে সাত উইকেট আর ম্যাচে ১২টি উইকেট নিয়ে নায়ক সেই গুরুবাণী। বৃহস্পতিবারের ইডেন দেখল নতুন এক প্রতিভার উত্থান।

এই মুহূর্তে ভারতীয় দলের পেস আক্রমণ যথেষ্ট শক্তিশালী। রিজার্ভ বেঞ্চও খুব ভাল। সেই রিজার্ভ তালিকায় এ বার যোগ হয়ে গেল ৫ ফুট ৯ ইঞ্চির গুরুবাণীর নাম। ভাল পেসের সঙ্গে দু’দিকেই বল মুভ করাতে পারা যাঁর তূণে প্রধান অস্ত্র।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালের প্রথম বল থেকে একটি রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের রাস্তায় গিয়েছিলেন বিনয় কুমার। যদিও দিনের সপ্তম ওভারেই গুরুবাণীর আউটসুইংয়ের শিকার হয়ে ৩৮ রানে ফিরে যান বিনয়। স্কোর যখন ১৪১-৮, মনে হচ্ছিল বিদর্ভের ম্যাচ জেতা সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু সেখান থেকে আবার দলকে লড়াইয়ে ফেরান অভিমন্যু মিঠুন। তাঁর ২৬ বলে ৩৭ রানের ইনিংসে ম্যাচে ফিরে আসে কর্নাটক। কিন্তু ন’রান বাকি থাকতে গুরুবাণীর বলে ভুল শট খেলে পয়েন্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে কর্নাটকের স্বপ্নভঙ্গ করলেন মিঠুনই।

আরও পড়ুন: কুড়ি জনের বিশেষ ‘পুল’ তৈরির ভাবনা

বৃহস্পতিবার খেলতে নামার আগের রাতে ঠিক করে ঘুমোতে পারেননি গুরুবাণী। ম্যাচ শেষে সাংবাদিক বৈঠকে এসে হাসিমুখে গুরুবাণী বলেন, ‘‘ম্যাচ জেতার লক্ষ্যে সারা রাত ঘুম হয়নি। ভাবছিলাম কখন আবার বল করব। রাত সাড়ে বারোটার সময় ঘুম ভাঙার পরে ভেবেছিলাম ছ’টা বেজে গিয়েছে। জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্পেল করে এ বার শান্তিতে ঘুমোব।’’

ছোটবেলা থেকে তাঁর বাবাকে দেখেই ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছা ছিল গুরুবাণীর। পাশাপাশি ক্রিকেট খেলতেও পছন্দ করতেন। বাবার অনুপ্রেরণাতেই প্রথম ক্রিকেট মাঠে আসেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেটকেও সমান গুরুত্ব দিয়েছেন বিদর্ভের এই উদীয়মান পেসার। বলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকে ভাবতাম প্রত্যেকটি পরীক্ষায় ফেল করব। কিন্তু আজ পর্যন্ত সব পরীক্ষাতেই পাশ করেছি। তিন বছর আগেও খেলব না পড়ব, তা বুঝতে পারতাম না। গত বছর রঞ্জি ট্রফিতে সুযোগ পাওয়ার পরেই ক্রিকেটার হওয়ার কথা ভাবি।’’

ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলেন উমেশ যাদবও। বিদর্ভ থেকে তাঁর পরে আরও এক পেসারের সাফল্যে আপ্লুত উমেশ। ম্যাচে শেষে তিনি বলেন, ‘‘অসাধারণ বল করেছে গুরুবাণী। নিজের দক্ষতায় দলকে ফাইনালে উঠিয়েছে। বিদর্ভ থেকে আরও এক ভাল পেসারকে উঠতে দেখে খুবই ভাল লাগছে।’’ কর্নাটক অধিনায়ক বিনয় কুমার বলে গেলেন, ‘‘আমরা প্রথম তিন দিন ভাল খেলেও শেষ দু’দিন পারলাম না। আমরা জেতার যোগ্য ছিলাম না।’’

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বিদর্ভ ১৮৫ ও ৩১৩ (জি সতীশ ৮১, সরওয়াটে ৫৫, বিনয় কুমার ৩-৭১, বিনি ৩-৭৪) কর্নাটক ৩০১ ও ১৯২ (গুরুবাণী ৭-৬৮)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন