বাইশ গজের রং দেখে গম্ভীর হয়ে গেল নির্বাচক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ। বৃহস্পতিবার সকালে কল্যাণী ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাঠে।
বাংলা দলের এক ক্রিকেটারের মন্তব্য, “উইকেটে এ রকম ঘাস থাকলে তো কাল দুপুরেই খেলা শেষ।”
২৪ ঘণ্টা বাদে ওড়িশার বিরুদ্ধে বিজয় হাজারে ট্রফির প্রথম ম্যাচ। যে ট্রফিকে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়ার রাস্তা হিসেবে দেখছেন কয়েক জন বঙ্গ ক্রিকেটার। কিন্তু তার আগে বাইশ গজ নিয়ে হঠাত্ শিহরন।
প্র্যাকটিসের পর ক্যাপ্টেন লক্ষ্মীরতন শুক্ল গেলেন সেই বিতর্কিত বাইশ গজের হাল-হকিকত বুঝতে। সঙ্গে মনোজ তিওয়ারি। উইকেট দেখার পর তাঁদেরও নিশ্চিন্ত লাগল না।
প্র্যাকটিসের পরই বাংলা শিবির থেকে ফোন করা হল কল্যাণীর উইকেটের দায়িত্বে থাকা প্রাক্তন সিএবি যুগ্মসচিব সুজন মুখোপাধ্যায়কে। ফোনে তাঁকে দুপুর পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। পরে যখন পাওয়া গেল, তখন তিনি সিএবি কর্তাদের জানান, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ইচ্ছেতেই নাকি উইকেটে ঘাস রাখা হয়েছে। এই ঘাস যে ছাঁটা যাবে না, তাও সুজনবাবু তখন জানিয়ে দেন বলে দল সূত্রে জানা যায়। তবু তাঁকে বারবার অনুরোধ করায় সুজনবাবু শেষ পর্যন্ত মাঠকর্মীদের বিকেলের দিকে ঘাস ‘ট্রিম’ করার নির্দেশ দেন। তাতে উইকেটের অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করছেন না বাংলা শিবিরের সদস্যরা।
সন্ধ্যায় সুজনবাবু বলেন, “সৌরভ তো প্রথম থেকেই বলে আসছে, ঘাসের উইকেটে খেলতে হবে বাংলার ক্রিকেটারদের। স্পোর্টিং উইকেটে ব্যাটসম্যানরা যাতে বলের গতি, বাউন্স সামলাতে পারে, সে জন্য ম্যাটিং উইকেটে এ এন ঘোষ ট্রফি করার কথাও বলেছে। সে জন্য এই টুর্নামেন্টেও এ রকম উইকেট দেওয়া হচ্ছে।” সৌরভকে অবশ্য যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তিনি ব্যস্ত ছিলেন আমদাবাদে ভারত-শ্রীলঙ্কা ওয়ান ডে ম্যাচের ধারাভাষ্যে।
যা শুনে বাংলা শিবির খুব একটা সন্তুষ্ট নয়। কোচ অশোক মলহোত্র বললেন, “এতটা ঘাস না থাকলেই ভাল। বাংলার ক্রিকেটের উন্নতির পাশাপাশি ছেলেদের পারফরম্যান্স ও দলের হার-জিতের কথাটাও তো ভাবতে হবে। অবশ্য কাল দুই দলকেই এই উইকেটে খেলতে হবে।”
ক্যাপ্টেন লক্ষ্মীরতন শুক্ল অবশ্য এ সব বিতর্কের মধ্যে ঢুকতে চান না। বললেন, “উইকেট যেমনই হোক, ভাল খেলতে হবে আমাদের।” আর যাঁর সামনে ভারতীয় দলে ডাক পাওয়ার হাতছানি, সেই মনোজ তিওয়ারি বলে দিলেন, “বিশ্বকাপের আগে বিজয় হাজারে ট্রফি করার কনসেপ্টটা খুবই ভাল। নিজেকে প্রমাণ করার একটা সুযোগ তো পাব। কিন্তু এ রকম একটা জায়গায় উইকেটটা যদি একটুও সাহায্য না করে, তা হলে সেটা চাপের ব্যাপার।” তবে লাহলির মতো ভয়ঙ্কর উইকেটে সেঞ্চুরি করে আসা মনোজ যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী, “উইকেট সহায়ক না হলে সেটা আমার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জটা নিতেই হবে।”
লক্ষ্মী, মনোজ, দিন্দা ছাড়া অরিন্দম, শ্রীবত্স, সুদীপ, শুভজিত্, সায়নশেখর, বীরপ্রতাপের প্রথম এগারোয় থাকা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত অনিশ্চয়তা নেই। বাকি দুটো জায়গায় হয়তো সৌরাশিস, ইরেশ, দেবব্রতদের মধ্যে কেউ থাকবেন।