বিজেন্দ্র সিংহকে আটকানো যাচ্ছে না। বিজেন্দ্র সিংহ ফের হয়ে উঠলেন ‘নক আউ সিংহ’। বক্সিং বিশ্বকে চমকে দিয়েই সনি উইটিংকে তিন রাউন্ডে নক-আউট করে পেশাদার বক্সিংয়ের প্রথম লড়াই জিতেছিলেন বিজেন্দ্র। এ বার এক রাউন্ডেই শেষ করে দিলেন ম্যাচ। ডাবলিনে ডিন গিলেনকে প্রথম রাউন্ডেই নক আউট করে পেশাদার বক্সিংয়ে অপরাজিত থাকলেন বিজেন্দ্র।
ম্যাচের আগে বিজেন্দ্র বলেছিলেন, ‘‘আমি আরও বেশি ঘুসি মারার চেষ্টা করব।’’ আর সেটাই করলেন। একটা শক্তিশালী ঘুসি আর সব শেষ। যত জন এসেছিলেন ম্যাচ দেখতে খুব দ্রুত তাদের উঠে বেরিয়ে যেতে হল। কারণ ম্যাচ তখন শেষ। রেফারি হাত উঠিয়ে দিয়েছেন বিজেন্দ্র। প্রথম লড়াই আরামে জিতলেও নিজেই স্বীকার করেছিলেন এখনও অনেক উন্নতি করতে হবে তাঁকে। যার মধ্যে একটা হল, তাঁর ফুটওয়ার্ক। বলেছিলেন, ‘‘আমার ফুটওয়ার্ক আরও ভাল করতে হবে’’। গত কয়েক দিন কোচ লি বিয়ার্ডের সঙ্গে কঠোর ট্রেনিংয়ে ছিলেন। দ্বিতীয় লড়াইয়ের আগে একটা কথাই লি বুঝিয়েছেন তাঁর শিষ্যকে। ‘‘আমার কোচ লি বলেছেন রিংয়ের মধ্যে আরও বেশি নড়া-চড়া করতে হবে,’’ বলছেন বিজেন্দ্র। কোচের টোটকাই ফের কাজে আসল ভারতীয় বক্সারের জন্য।
অলিম্পিক ব্রোঞ্জজয়ী বক্সারের কোচ লি জানেন যত সময় যাবে, বিজেন্দ্র তত উন্নতি করবেন। ‘‘দ্বিতীয় লড়াইয়ের পরে বিজেন্দ্র বাড়ি ফিরবে। তখন ওর সঙ্গে কাজ করার আরও বেশি সুযোগ পাব,’’ বলছেন লি। বক্সিং বিশেষজ্ঞ স্টিভ লিলিস আবার বলছেন, ‘‘প্রথম লড়াইতে বিজেন্দ্রর প্রমাণ করার ছিল ও ভাল লড়তে পারে। নিঃসন্দেহে ও সেটা প্রমাণ করেছে।’’ বিজেন্দ্রর ঘুসির জোরটাই ওর ইউএসপি। সেটা জানিয়ে লিলিস যোগ করেন, ‘‘বিজেন্দ্র দেখিয়েছে ওর হাতে মারাত্মক জোর আছে। জ্যাবগুলো দারুণ। বিজেন্দ্র এটাও বুঝতে পেরেছিল ও জয়ের খুব কাছাকাছি আছে। ম্যাচটাও তাড়াতাড়ি শেষ করে ফেলতে পেরেছিল। অথচ ওর লড়াইয়ে নামার আগে আমি ভেবেছিলাম কত দিন লাগবে ওর শিখতে। কিন্তু বলতেই হবে খুব তাড়াতাড়ি ও শিখছে।’’ প্রশংসাও যেমন করছেন আবার সতর্কও করে দিচ্ছেন লিলিস। ‘‘মাঝে মাঝে দেখছিলাম একটা ঘুসি মেরেই থেমে যাচ্ছে বিজেন্দ্র। সময় দিচ্ছে সনিকে। অত বেশি সময় নিলে ও কিন্তু বিপদে পড়বে। উইটিং বলে বেঁচে গিয়েছে। অন্য কেউ হলে মুশকিলে পড়বে বিজেন্দ্র,’’ বলছেন লিলিস।
বিজেন্দ্রর এ দিনের বিপক্ষ গিলেন আবার দমকলকর্মী ছিলেন। এখনও পর্যন্ত পেশাদার কেরিয়ারে দুটো ম্যাচে লড়াই করে জিতেছেন দুটোই। কিন্তু বিজেন্দ্রর বিরুদ্ধে বেশি কিছু করতে পারলেন না তিনি। গিলেনের বিরুদ্ধে নক-আউটে জিতলেও বিজেন্দ্র বলছিলেন, ‘‘আমার লক্ষ্য নক আউটে জেতা নয়। শুধু চাই তাড়াতাড়ি ম্যাচটা শেষ করতে।’’ বিজেন্দ্রর লড়াই দেখতে তাঁর স্ত্রী এসেছিলেন।
শোনা যাচ্ছে, ভবিষ্যতে হয়তো ভারতেও লড়াই করতে দেখা যেতে পারে বিজেন্দ্রকে। ভারতীয় বক্সারের প্রোমোটাররা নাকি উদ্যোগ নিয়েছেন যাতে নয়াদিল্লির ইন্দিরা গাঁধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে লড়াই করতে পারেন বিজেন্দ্র।