তৃপ্ত। রবিবাসরীয় রাঁচি। ছবি: পিটিআই
সিরিজ জেতানো শটটা মেরে আকাশের দিকে মুঠো করে হাত ছোড়া আছে। স্টাম্প তুলে দৌড় আছে। কিন্তু ৫-০ করার দিন ক্যাপ্টেন কোহলির পৃথিবীতে থেকে গেল রাগ, হতাশাও।
রাগ তাঁর টিমমেটদের উপর, যাঁরা তাঁর সঙ্গে ক্রিজে থেকে ম্যাচটা বের করে আনতে পারেননি। হতাশা তাঁর টিমের কারও কারও বোকার মতো নিজের উইকেট উপহার দিয়ে আসায়। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে তৃতীয় উইকেটে যখন অম্বাতি রায়ডুর সঙ্গে তিনি ১৩৬ রানের পার্টনারশিপ গড়ছিলেন, ম্যাচটা ভারতের দিকেই ঝুঁকে। কিন্তু ইনিংসের মাঝামাঝি রায়ডু ফিরে যাওয়ার পর হঠাত্ ধসতে শুরু করে ভারতীয় ব্যাটিং। রবিন উথাপ্পা, কেদার যাদব, স্টুয়ার্ট বিনি, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ক্রিজের উল্টো দিকে তখন এক-এক জনের আসা-যাওয়া। আর এখানেই সমস্যা বিরাটের। “ওই সময় আমি চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। বেশ বিরক্তও লাগছিল। আরে, পরিস্থিতিটা তো বুঝতে হবে। আমার পার্টনারদের অ্যাপ্লিকেশনের অভাব দেখে বিরক্ত লাগছিল। দেখুন, উল্টো দিকের কেউ যখন ভাল খেলে, তখন স্ট্রাইক না পেলেও সমস্যা হয় না। কিন্তু যখন দেখছি ওরা রানও পাচ্ছে না আবার আমিও স্ট্রাইক পাচ্ছি না, তখন তার চেয়ে হতাশার আর কিছু থাকে না। এ রকম কঠিন পরিস্থিতি থেকে কী ভাবে ম্যাচ বের করতে হবে, ওদের শিখতে হবে এ বার।”
‘ওদের’ শেখানোটা বোধহয় এই ম্যাচ থেকেই শুরু করে দিলেন বিরাট। ও রকম আক্রমণাত্মক ইনিংস নিয়ে তাঁর সহজ ব্যাখ্যা, “আরে, আমি যদি টিমের সবাইকে বলি নৃশংস ভাবে খেলতে আর নিজেই আলসে হয়ে থাকি, তা হলে তো আমাকে খুবই স্টুপিড দেখাবে। আগ্রাসন দেখেই আগ্রাসন তৈরি হয়। যেটা আমি নিজে করতে পারব না, সেটা টিমের থেকেই বা কী ভাবে আশা করব? আমি এ ভাবেই ক্রিকেটটা খেলি।”
তাঁর কথামতো ক্রিকেট খেলে রবিবার শেষের দিকে অক্ষর পটেলের ১৪ বলে ১৭ না থাকলে কী হত, বলা কঠিন। কিন্তু সিরিজ জিতে ক্যাপ্টেন কোহলি প্রচণ্ড খুশি অক্ষরকে নিয়ে। ‘বড়দা’র ভঙ্গিতে বলেও দিলেন, “অক্ষর আসার পরেই ওকে বললাম, আমার কথা শোনো। ক্রিজে পড়ে থাকো। উইকেটটা দেবে না।” শুধু তো আজকের ম্যাচ নয়। গোটা সিরিজেই অক্ষরের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ কোহলি। কটকে লো ফুলটসে ছক্কা মারা হোক, কী বাঁ-হাতিদের বিরুদ্ধে বোলিংয়ে।
আর আজ তাঁর নিজের ছক্কাটা? ধোনির শহরে খেলছিলেন বলেই কি হেলিকপ্টার শট মারবেন ঠিক করে রেখেছিলেন? “আসলে স্টেপ আউট করে ছয় মারব ভেবেছিলাম। কিন্তু বলটা ফ্লাইট করায় হেলিকপ্টার শটের মতো হল। কিছু কিছু জিনিস বোধহয় হওয়ারই থাকে। আফটার অল এমএসের ঘরের মাঠে খেলা। এর চেয়ে পারফেক্ট ফিনিশ হয়?”