মুখোমুখি: ইডেনের ক্লাব হাউসে দেখা দু’জনে। কুলদীপ-কোহালি আজ প্রতিপক্ষ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
ইডেন থেকে হোটেলে ফেরার সময় হঠাৎ তাঁর কাছে খবর গেল, সাংবাদিক বৈঠক করতে হবে। মাঝরাস্তাতেই দলের বাস থামিয়ে দিলেন বিরাট কোহালি। বাস থেকে নেমে উঠে পড়লেন ‘পাইলট কার’-এ। তড়িঘড়ি ইডেনে ফিরে এলেন সাংবাদিক বৈঠকের জন্য। ইডেনে যখন ঢুকছেন বিরাট, তখনই মুখোমুখি হয়ে গেলেন নাইটদের স্পিন অস্ত্র কুলদীপ যাদবের। গত কয়েক মাসে একসঙ্গে দেশের হয়ে খেলেছেন তাঁরা। এ বার আইপিএলে দু’জনে প্রতিপক্ষ।
পরিস্থিতিটা ভেবেই বোধহয় অস্বস্তিতে পড়ে গেলেন তরুণ চায়নাম্যান বোলার। তাঁর সেই অস্বস্তি কাটাতে বেশি সময় নিলেন না বিরাট। বাঁ হাতের আঙুলের ডগায় একটা ছোট ‘টেপ’ লাগানো দেখে সেটা নিয়েই কথা বলা শুরু করে দিলেন কুলদীপের সঙ্গে। নিজে হাত দিয়ে ধরে কুলদীপের চোটের জায়গা পরখও করলেন তাঁর ভারত অধিনায়ক। সংবাদিক বৈঠকে যখন কুলদীপের সঙ্গে তাঁর দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর-এর (আরসিবি) দ্বৈরথের প্রসঙ্গ ওঠে, তখন অধিনায়ক বিরাট বলেন, ‘‘কুলদীপ যদি আমার খেলা জানে, আমিও তো কুলদীপের খেলা জানি। এটাই তো আইপিএলের মজা। এখানে প্রতিযোগিতা থাকলেও আমাদের মাথায় থাকে যে, আমরা দেশের হয়ে একসঙ্গে মাঠে নামি। আমরা একে অপরের বন্ধু। ভারতীয় দলের নেটেও আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়।’’
শুভেচ্ছা জানিয়ে রাখলেন বিপক্ষের নতুন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিককেও। ‘‘দীনেশ ভাল ক্রিকেটার। আমার ভাল বন্ধুও। ও নতুন দায়িত্ব পাওয়ায় ভালই লাগছে। ক্রিকেট বুদ্ধির দিক থেকে ও বেশ ভাল। ওকে শুভেচ্ছা জানাই’’, বলেন আরসিবি অধিনায়ক। বন্ধুত্বের সঙ্গে লড়াইও যে থাকবে এই লিগে, তা বুঝিয়ে দিয়ে কোহালি সাফ জানিয়ে দেন, গতবারের ৪৯ রানে শেষ হওয়া মাথায় ঘুরছে না তাঁর। বলেন, ‘‘ইডেনে সাধারণত আমরা খারাপ খেলি না। গত বছর সেই ম্যাচে একটা খারাপ দিন গিয়েছিল আমাদের। যা সেই রাতেই ভুলে গিয়েছিলাম। এটাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের চরিত্র। এ বার আমাদের দলে অনেক কিছু বদলে গিয়েছে। এ বার দলের ভারসাম্য ভাল। যা আগে ছিল না আমাদের।’’
ইডেনে আরসিবি-র ব্যাটিং ও কেকেআর-এর বোলিংয়ের যুদ্ধ বলে মনে করছেন না বিরাট। বলছেন, ‘‘তা কেন হবে? আমাদের বোলিং এ বার বেশ ভাল। বরং আমাদের বোলিং দেখে আপনারা অবাক হতে পারেন। আমরা এ বার শুধু ব্যাটিংয়ে নির্ভরশীল নই।’’ ইডেনের বাইশ গজের প্রশংসা করে বিরাট জানিয়ে দেন, রবিবার রানের ফোয়ারা ছুটতে পারে। বলেন, ‘‘ইডেনের পিচে ঘাস আছে। বেশ শক্ত উইকেট। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, গতি ও বাউন্স আছে এই উইকেটে। ব্যাটসম্যানরা নিজেদের মেলে ধরতে পারলে ভাল রান উঠবে।’’ তবে পাশাপাশি সমীহ করছেন বোলারদেরও, ‘‘ছন্দে থাকলে এখানে তিন-চার উইকেট তুলে নিতে পারে বোলাররা। দু’পক্ষের জন্যই এটা ভাল পিচ। তাই একটা উত্তেজক ম্যাচ কাল হবে বলেই মনে হয়।’’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মতো আইপিএল-এও তিন নম্বরেই নামতে চান আরসিবি অধিনায়ক। তবে প্রয়োজনে ব্যাটিং অর্ডার বদলাতেও আপত্তি নেই তাঁর। বললেন, ‘‘এই জায়গাটাতেই স্বচ্ছন্দ আমি। তাই আপাতত তিন নম্বরে নামব বলেই ঠিক করে রেখেছি।’’ দ্রুত যোগ করলেন, ‘‘তবে দলের প্রয়োজনে জায়গা পাল্টাতেও পারি। অতীতেও ওপেন করেছি। স্পিন-নির্ভর বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে খেললে ব্যাটিং অর্ডার বদলাতে হতে পারে।’’ এ বারের আইপিএলে অধরা ট্রফি জিততে সব কিছু করতে রাজি তিনি।