Music Therapy Courses

সঙ্গীতের সাত সুরে কাবু হবে দুঃখ-হতাশা! থেরাপির কলাকৌশলই হতে পারে ভবিষ্যতের পেশা

অবচেতন মনের গভীরে প্রবেশের পথ খুঁজতে সাহায্য করে সঙ্গীতের মূর্ছনা। কখনও কখনও গভীরের ক্ষতের দাগ মিলিয়ে যায় সাত সুরের স্বরলিপিতে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:৫৫
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

মনের কথা বলতে না পারলে সে কষ্টের ভার বাড়তে থাকে। সময়ের ব্যস্ততার সঙ্গেই দুঃখের পারদ চড়তে থাকে। ক্রমবর্ধমান জীবনের দৌড়ে মনকে শান্ত করতে, তার ভার কমাতে সঙ্গীতের আশ্রয় খোঁজেন অনেকেই। নানা পরীক্ষা নিরীক্ষায় প্রমাণ হয়েছে, মানুষের মনে ইতিবাচক প্রভাবে ফেলতে পারে সাত সুরের রামধনু।

Advertisement

সঙ্গীতের মূর্ছনার থেরাপি মানুষকে নতুন করে ভাবতে শেখায়। তাই এই বিশেষ পদ্ধতিতে চিকিৎসাও হয়ে থাকে। কিন্তু এই বিষয়টি কী শেখা যায়? এ দেশের হাতে গোনা কিছু সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিগ্রি ও ডিপ্লোমা কোর্সের মাধ্যমে ‘মিউজিক থেরাপি’ শেখানো হয়ে থাকে।

কী শেখানো হয়?

Advertisement

এই বিশেষ বিষয়টি সঙ্গীত, মনোবিদ্যা, স্নায়ুবিদ্যার সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে। তাই কন্ঠ এবং যন্ত্রসঙ্গীতের কৌশল, গান শোনা এবং তা বিশ্লেষণ করার পাশাপাশি, মনোবিদ্যার পাঠও গ্রহণ করতে হয় পড়ুয়াদের। এতেই বিভিন্ন সময়ে মানুষের মনের ভেতরে হয়ে চলা পরিবর্তন এবং তাতে তাঁর ব্যবহারে রদবদলের বিষয়গুলি বোঝা সম্ভব।

এ ছাড়াও কোন সুর,বা বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ কী ভাবে মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে, শরীরের কোন অঙ্গ কেমন প্রতিক্রিয়া দিতে পারে— সেই বিষয়গুলিও মিউজিক থেরাপি-র মাধ্যমে শেখার সুযোগ থাকে।

কী ধরনের কোর্স করতে হয়?

মিউজিক থেরাপি নিয়ে স্নাতক স্তরেই ডিগ্রি কোর্স করা যেতে পারে। এ ছাড়াও মনোবিদ্যায় স্নাতকেরা ওই বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্স করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। আন্তর্জাতিক স্তরে এই বিষয়টি নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে ডিগ্রি কোর্স করানো হয়। এ ছাড়াও পিএইচডি করার সুযোগও রয়েছে।

তবে, এ দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের কোর্সই বেশি প্রচলিত। উচ্চশিক্ষার জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিয়মিত ভাবে ক্লাস করানো হয়। এ ছাড়াও কোর্স সম্পূর্ণ হওয়ার পর ইন্টার্নশিপ এবং ট্রেনিং-এর মাধ্যমে পড়ুয়ারা বিভিন্ন হাসপাতাল, সংশোধনাগার, মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বহুজাতিক সংস্থা ওয়েলনেস সেন্টার-এ কাজ শেখার সুযোগ পেয়ে থাকেন।

পেশা প্রবেশ:

প্রাচীন কালে রাজা কিংবা সম্রাটেরা রাজ্যপাটের দায়িত্বের ভার সামলানোর কাজ থেকে ক্ষণিকের স্বস্তির জন্য সঙ্গীত সমারোহ বেছে নিতেন। সেই সময় থেকে গান শুনে মন ভাল রাখার অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই। কিন্তু এই অভ্যাসই বর্তমানে পেশা প্রবেশের পথ হয়ে উঠেছে। জটিল রোগ থেকে সুস্থতার পথে হাঁটতে কিংবা বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্যও কথোপকথনের মাধ্যম হয়ে উঠছেন মিউজিক থেরাপিস্ট।

দেশের ছবিটা:

বর্তমানে শিক্ষা কিংবা কর্মক্ষেত্রে অবসাদ, হতাশার ছায়া প্রকট হয়ে উঠেছে। শান্তির খোঁজে অনেকেই বেছে নেন থেরাপির আশ্রয়। তাই দেশের বিভিন্ন হুজাতিক সংস্থা কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েলনেস সেন্টারে এমন বিশেষজ্ঞদের চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট। নিয়মিত ভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়াও চলে। এ ছাড়াও ডিগ্রি এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের পর প্রাইভেট প্র্যাকটিশ করারও সুযোগ রয়েছে।

বিদেশে কেমন চাহিদা?

তবে, মিউজিক থেরাপিস্টদের চাহিদা শুধু এই দেশেই নয়, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ-এর বিভিন্ন দেশেও এমন বিশেষজ্ঞদের প্রবল চাহিদা রয়েছে। সেখানে মর্ডান মেডিসিন-এর সঙ্গে সঙ্গীতের সাহায্যে রোগ নিরাময়ের প্রচলন রয়েছে। তাই এই সমস্ত দেশে এই পেশায় কর্মরতদের আলাদা করে লাইসেন্সও দেওয়া হয়ে থাকে। তাই, বিদেশে গিয়েও কাজ করার সুযোগ থাকছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement