সিরিজ হারের হতাশার মধ্যেও রবিবার একটা ব্যাপার আমাকে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে। বিরাট কোহলির দুর্দান্ত ১১৭ বলে ১১৭ রানের ইনিংস।
কোহলির সেঞ্চুরিটা দেখার পর অনেকেই আমাকে এ দিন একটা প্রশ্ন করলেন। যে ভাবে ছেলেটা এগোচ্ছে, তাতে সচিন তেন্ডুলকরের ওয়ান ডে-র ৪৯টা সেঞ্চুরির রেকর্ড ও ভাঙতে পারবে কি না?
আমি বলব, পারবে। আমি অন্তত বিরাটের সামনে কোনও সমস্যা দেখছি না। সাতাশ বছরেই ডে’ভিলিয়ার্সের রেকর্ড ভেঙে ওয়ান ডে-র দ্রুততম সাত হাজারের মালিক হয়ে গেল। ২৪টা ওয়ান ডে সেঞ্চুরি করে ফেলল। সচিনের চেয়ে অনেক কম ম্যাচ খেলে। আরও সাত-আট বছর খেলবে। এখন তো বছরে ৩০-৪০টা পর্যন্ত ওয়ান ডে খেলতে হয়। যে ভাবে খেলছে অঙ্কের বিচারে বছরে তিন-চারটে সেঞ্চুরি করলেও সচিনের নজির টপকে যাওয়াটা বিরাটের কাছে খুব কঠিন নয়। লেখাটার জন্য পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখলাম সচিন ওর ৪৯টা সেঞ্চুরির জন্য ৪৬৩ ম্যাচ নিয়েছিল। আমার মনে হয় না, রেকর্ড ভাঙতে অত বেশি ম্যাচ খেলতে হবে বিরাটকে।
তার উপর বিরাটের খেলার ধরন যে রকম তাতে দ্রুত রান তোলাটা ওর স্টাইল। মেলবোর্নেও যেটা দেখাল। সবচেয়ে বড় কথা রান তাড়া করার দিক থেকে বিরাটের যা গড় সেটা সচিনেরও ছিল না। প্রায় ৬০। এটাই ওর প্লাস পয়েন্ট। নিজের ইনিংসটাকে পরিবেশ, পরিস্থিতি অনুযায়ী গতি দিতে পারে বলেই রান তাড়া করার ক্ষেত্রে বিরাটের এই দাপট। বিরাটের মতো দ্বিতীয় ইনিংসে চাপের মুখে সেঞ্চুরি করার ক্ষমতা খুব কম ব্যাটসম্যানেরই আছে।
অনেকে বলবেন এখনও ওয়ান ডে ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব ঘাড়ে পড়েনি বিরাটের। ধোনির পর ওকে যখন টিম ইন্ডিয়ার ওয়ান ডে ক্যাপ্টেন্সিও করতে হবে তখনও কি এই গতিতে আর এই ধারাবাহিকতা দেখিয়ে রান করতে পারবে বিরাট? আমার মনে হয়, ক্যাপ্টেন্সির ব্যাপারটা বিরাট উপভোগ করে। কখনই ক্যাপ্টেনের জোব্বা ওর উপর ভারি হয়ে উঠতে দেখা যায়নি। টেস্ট ক্যাপ্টেন্সিতেই তো ও সেটা দেখিয়ে দিয়েছে। সামনে থেকে খেলো। সোজা কথায় ভয়ডরহীন ক্রিকেট। এটাই ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলির স্টাইল। তাই ক্যাপ্টেনের টুপিতেও ওয়ান ডে-তে বিরাটকে ব্যাট হাতে একই রকম ভয়ঙ্কর লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস। যাকে দেখে গোটা দল এক মুহূর্তে তেতে উঠবে।
যেটা এই মুহূর্তে ভারতীয় দলে খুব প্রয়োজন।