ব্যাটে বদল, অধিনায়কের লক্ষ্য আরও নিখুঁত হওয়া

ইডেন উইকেটে যে রকম ঘাস দেখা যাচ্ছে, তেমন ঘাস যদি ম্যাচেও ছাড়া থাকে, তা হলে ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

রাজীব ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০১
Share:

মহড়া: ইডেনে ব্যাট-পরীক্ষা বিরাট কোহালির। নিজস্ব চিত্র

ইডেনে উইকেট যেমনই হোক, তাঁর রানের ফোয়ারা যাতে না থামে, সে জন্য নিজের ব্যাটের হাতল কিছুটা ছোট করিয়ে নিলেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি।

Advertisement

ইডেন উইকেটে যে রকম ঘাস দেখা যাচ্ছে, তেমন ঘাস যদি ম্যাচেও ছাড়া থাকে, তা হলে ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই অবস্থাতেও তিনি যাতে ভাল স্ট্রোক নিতে পারেন ও গ্রাউন্ড শট বেশি খেলতে পারেন, সেজন্য ব্যাটের হাতল এ দিন প্রায় এক ইঞ্চি কাটিয়ে ছোট করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিরাট।

মঙ্গলবার দুপুরে মাঠে নামার পর থেকেই ব্যাট নিয়ে নাড়াচাড়া করতে দেখা যাচ্ছিল তাঁকে। কোচ রবি শাস্ত্রী নির্বাচক দেবাঙ্গ গাঁধী ও সতীর্থদের সঙ্গে আলোচনাও করছিলেন তিনি। শোনা গেল, দলের উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা যেহেতু এই শহরেই থাকেন, তাই তাঁকেও জিজ্ঞেস করেন, ব্যাটটাকে ঠিকঠাক করা যায় কি না। ঋদ্ধি যখন সেই হদিশ দেন, তখন ভারতীয় দলের স্থানীয় ম্যানেজারদের বিরাট একজন ভাল লোক ইডেনে আনার অনুরোধ করেন। প্রথমে ভাবা হয়েছিল ব্যাট পাঠানো হবে নামী কোনও ব্যাট মেরামতি সংস্থায়। কিন্তু বিরাটের আপত্তিতে বাইরে থেকে একজন কাঠের কাজ করার লোক নিয়ে এসে ব্যাটের হাতল প্রায় ইঞ্চিখানেক ছোট করিয়ে নেন বিরাট। তার পরেই সেই ব্যাট নিয়ে নেটে ঢোকেন ভারত অধিনায়ক।

Advertisement

আরও পড়ুন: স্পিন-পেস দু’টোই সামলানোর প্রস্তুতি

সম্প্রতি প্রায়ই ফ্রন্টফুটে গিয়ে ড্রাইভ করার সময় আউট হয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রায়ই এমন হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, তাঁর যুক্তি, ব্যাটের হ্যান্ডল ছোট করে ফেললে ‘গ্রিপ’ খুব একটা আঁটসাট থাকে না। যার জেরে ব্যাটসম্যানের গ্রাউন্ড শট নেওয়ার প্রবণতা বাড়ে। অর্থাৎ আকাশে বল তোলার ঝোঁক কমে। সেই জন্যই বিরাটের এই টোটকা। ব্যাটের হাতল ছোট করলে যদি আউট হওয়ার প্রবণতা কমে যায় তাঁর।

নেটে অবশ্য এ দিন তাঁকে বেশ ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন মহম্মদ শামি। তাঁর বল একবার বিরাটের স্টাম্প উপড়ে দেয়। আর একবার শামির অফ স্টাম্পের বাইরের বল নেট ছিঁড়ে বেরিয়ে গিয়ে পিছনে এক টিভি কর্মীর মাথায় গিয়ে লাগে। নেট ছেড়ে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কাছে ছুটে আসেন বিরাট। টেস্টের আগে বিশ্রাম পেয়ে বোধহয় ফের আগের মতোই বিধ্বংসী হয়ে উঠেছেন বঙ্গ পেসার। সেই ইঙ্গিতই পাওয়া গেল এ দিনের নেটে। শামি ছাড়াও ইশান্ত শর্মাকে এ দিন নেটে অনেকক্ষণ বোলিং করতে দেখা যায়। আলাদা নেটে ব্যাট হাতে থ্রো ডাউনও নেন তিনি। ভারত ইডেনে প্রথম টেস্টে তিন পেসারে নামলে ইশান্তকে প্রথম দলে রাখার ইঙ্গিত হতে পারে এটা।

কিন্তু ভারত তিন পেসারে নামবে কি না, এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। বাইশ গজে যে রকম ঘাস রয়েছে, তা ম্যাচের সকালেও থাকলে তেমন সিদ্ধান্তই নেওয়া হতে পারে। কিন্তু ঘাস ছাঁটা নিয়ে ধন্দ রয়েই গেল।

সোমবার যতটা সবুজ ছিল ইডেন উইকেট, মঙ্গলবার সেই সবুজ আভা কিছুটা কমলেও যথেষ্ট ঘাস রয়েছে। সন্ধ্যায় ক্লাব হাউসে সিএবি প্রেসিডেন্টকে যখন জি়জ্ঞেস করা হয়, এতটা ঘাস ম্যাচের দিনও থাকবে কি না, তখন তিনি বলেন, ‘‘দেখা যাক। যেমন উইকেট চাইবে ওরা তেমনই দেওয়া হবে।’’ কিন্তু ভারতীয় দল আদোও নির্দিষ্ট উইকেট চাইবে কি না, সেটাই প্রশ্ন।

ইডেনে শেষ টেস্টে যিনি ৭৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন, সেই অজিঙ্ক রাহানে অবশ্য এ দিন বলে দেন, যে কোনও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই তাঁরা প্রস্তুত। তাই ইডেনে কেমন উইকেট হতে চলেছে, তা নিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা নেই তাঁদের। এ দিন প্র্যাকটিসে নামার আগে রাহানে সাংবাদিকদের বলে যান, ‘‘গত কাল আমরা এখানে ভাল প্র্যাকটিস করেছি। আজও করছি। তাই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে খুব একটা সমস্যা হবে না। প্রথম টেস্টে জেতাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এখান থেকেই ছন্দ পেতে হবে আমাদের। তাই প্রথম টেস্টের আগেই ভাল প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি আমরা।’’

তিন মাস আগেই শ্রীলঙ্কায় গিয়ে টানা ন’টি ম্যাচ জিতে আসা ভারতীয় দলের নির্ভরযোগ্য এই ব্যাটসম্যান বলছেন, ‘‘এখানে আমরা কন্ডিশন ভাল জানি। তাই ওখানকার চেয়ে আলাদা হবে এই সিরিজ। তবে কোনও ভাবেই শ্রীলঙ্কাকে খাটো করে দেখার ভুল করব না আমরা। দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়ার আগে আমাদের প্রতিটি ম্যাচ ও সিরিজ গুরুত্বপূর্ণ। এক নম্বরে থাকতে গেলে এখন থেকে সব সিরিজেই সফল হতে হবে আমাদের। তবে আপাতত ফোকাসটা ইডেনেই আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন