তীব্রতা রাখতে চূড়ান্ত ফিটনেস চান অধিনায়ক

কেউ তাঁকে সর্বকালের সেরা কিংবদন্তিদের তালিকায় রাখছেন, কেউ বা আবার বলেই দিচ্ছেন, বিরাট কোহালিই সর্বকালের সেরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৫
Share:

নিজের খেলায় এই তীব্রতা, এই তীক্ষ্ণতা ধরে রাখতে চান কোহালি।

তাঁর একের পর এক কীর্তিতে বিস্মিত হয়ে পড়ছে ক্রিকেট দুনিয়া। কেউ তাঁকে সর্বকালের সেরা কিংবদন্তিদের তালিকায় রাখছেন, কেউ বা আবার বলেই দিচ্ছেন, বিরাট কোহালিই সর্বকালের সেরা।

Advertisement

তাঁর এই অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা আর পারফরম্যান্স নিয়ে বিরাট কোহালি নিজে কী বলছেন? কেপ টাউনে বুধবারের ম্যাচের পরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে কোহালি বলেছেন, ‘‘পরের বছর আমার বয়স হবে ৩০। আমি এখন যে ধরনের ক্রিকেট খেলছি, সেই খেলাটাই ৩৪-৩৫ বছরেও খেলে যেতে চাই। সে জন্যই আমি এত ট্রেনিং করি। আমি আমার খেলায় এই তীব্রতা, এই তীক্ষ্ণতা ধরে রাখতে চাই। এই তীব্রতা হারিয়ে গেলে জানি না মাঠে নেমে কী করব।’’

২৯ বছরের বিস্ময় বুধবারই ওয়ান ডে ক্রিকেটে নিজের ৩৪ নম্বর সেঞ্চুরি করেছেন। তাঁর অপরাজিত ১৬০ রানের সেই ইনিংস সম্পর্কে ভারত অধিনায়ক বলছেন, ‘‘আমি সব সময় কয়েকটা ব্যাপার ঠিকঠাক করার চেষ্টা করি। যতটা সম্ভব ট্রেনিং করি, ডায়েট ঠিক রাখি। এই সব ব্যাপারগুলো কিন্তু এ রকম দিনে কাজে লাগে। যখন টিমের আপনাকে প্রয়োজন হয়, আর আপনি সেই প্রয়োজন পূরণ করতে পারেন। এক জন ক্রীড়াবিদ সব সময় এ রকম একটা দিনের অপেক্ষায় থাকে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘এটা সতীর্থদের জন্য, ওদের জন্যই সম্ভব হল’

বুধবারের সেঞ্চুরিকে তাঁর কেরিয়ারে বিশেষ জায়গায় রাখতে চান কোহালি। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, এই ইনিংসে বার বার তাঁকে নিজের ব্যাটিংয়ের ধরন পাল্টাতে হয়েছে। কোহালি মনে করিয়ে দিয়েছেন, বেশ কঠিন একটা পিচে ভাল বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে এই রানগুলো করতে হয়েছে তাঁকে। ‘‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রান করা কখনওই সোজা কাজ নয়। পরিশ্রম করতে হয় প্রতিটা রানের জন্য। কিছু কিছু ইনিংস ব্যাটিং পিচে খেলা হয়ে থাকে ঠিকই, কিন্তু এই পিচে প্রথম দিকে পেস আর বাউন্স ছিল, যার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়েছে। ওদের বোলিং আক্রমণও বেশ ভাল ছিল। তার পরে হঠাৎ করে ৩০ ওভারের পর থেকে পিচ স্লো হয়ে যায়। যার ফলে আবার সেই মন্থর পিচের সঙ্গে তাল মেলাতে নিজের ব্যাটিংয়ে পরিবর্তন আনতে হয়। এটাও মাথায় রাখবেন, তখন কিন্তু পর পর উইকেটও পড়ছিল।’’

কোহালি জানাচ্ছেন, টিমের কথা মাথায় থাকায় এ রকম লম্বা ইনিংসের ধকল নিতে তাঁর সমস্যা হয়নি। ‘‘আমি যখন নব্বইয়ের ঘরে ছিলাম, তখন ক্র্যাম্পের জন্য কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল। যে জন্য পুরো পঞ্চাশ ওভার খেলতে পেরে আমি খুশি। আমি একটা সময় ঠিক করি, এ বার চালিয়ে খেলব কারণ তখন মনে হচ্ছিল পুরো ৫০ ওভার খেলার মতো এনার্জি হয়তো থাকবে না,’’ বলেছেন ভারত অধিনায়ক। এর পরেই তিনি যোগ করেন, ‘‘কিন্তু টিমের স্বার্থের কথা মাথায় থাকলে চমকপ্রদ ব্যাপার-স্যাপার ঘটে যায়। সাধারণত একটা পর্যায়ের পরে আমরা আর শরীরের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারি না। কিন্তু যখন টিমের কথা মাথায় থাকে, তখন সব সীমাই অতিক্রম করা সম্ভব। ঠিক যেমনটা বুধবার হল। যেটা একটা দারুণ অনুভূতি।’’

মিশন: কেপ টাউন সম্পন্ন। এ বার চলো জোহানেসবার্গ। বিমানবন্দরে ছবি তুলে এই টুইট করলেন হার্দিক পাণ্ড্য।

নিজের ৩৪তম ওয়ান ডে সেঞ্চুরি করার পথে বেশ কয়েকটা রেকর্ডও ভেঙেছেন কোহালি। যার মধ্যে একটি হল, ভারত অধিনায়ক হিসেবে ওয়ান ডে-তে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের রেকর্ড ভেঙে ১২টি সেঞ্চুরি করা। কোহালি বলছিলেন, প্রথমে ব্যাট করে রান তোলা আর পরে ব্যাট করে রান তাড়া করা— এই দু’টো ক্ষেত্রে তাঁর দু’রকম স্ট্র্যাটেজি হয়। ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এই ইনিংসে আমি বিভিন্ন সময় রান তোলার গতি বাড়ানোর চেষ্টায় ছিলাম। যখন শিখর ধবনের সঙ্গে ব্যাট করছিলাম, আমার কাজ ছিল সিঙ্গলস নিয়ে যাওয়া। স্ট্রাইক রোটেট করা। আবার শিখর আউট হওয়ার পরে আমি রান তোলার গতি বাড়াতে চেয়েছিলাম।’’

এর পরে কোহালি বলেছেন, রান তাড়া করার সময় তাঁর স্ট্র্যাটেজি কী হয়ে থাকে। ‘‘রান তাড়া করার সময় ব্যাপারটা পুরো অন্য। তখন টার্গেট সামনে থাকে। ফলে বোঝা যায়, কখন কী ভাবে রানের গতি বাড়াতে হবে, কখন সিঙ্গলস নিতে হবে। আবার আগে ব্যাট করলে যত বেশি সম্ভব রান করার ব্যাপারটা মাথায় রাখতে হয়। কিন্তু পরিস্থিতি মাঝে মাঝে এমন হয়ে যায় যে পুরো ইনিংস জুড়ে সব সময় ইচ্ছেমতো রানের গতি বাড়ানো যায় না। তখন আপনাকে স্ট্র্যাটেজি বদলাতে হয়,’’ বক্তব্য ভারত অধিনায়কের।

ভারত আপাতত সিরিজে ৩-০ এগিয়ে। কোহালি বলেন, ‘‘তিনটে ম্যাচ জিতেছি বলেই আমাদের আত্মতুষ্ট হয়ে পড়ার কোনও জায়গা নেই। এটা বলে দিতে চাই, আমাদের কাজটা অর্ধেকও হয়নি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement