বিশ্বভারতীর শারীরশিক্ষা বিভাগের অ্যাথলিট দল। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের ১৮টি ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানের দলের সঙ্গে খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিরে এল বিশ্বভারতীর শারীরশিক্ষা বিভাগের অ্যাথলিট দল। এ ছাড়াও ছেলেদের মধ্যে ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়ন, মেয়েদের মধ্যে ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়ন এবং মোট ন’টি স্বর্ণপদক পেয়েছেন শারীরশিক্ষা বিভাগের অ্যাথলিটরা। পড়াশোনার পাশাপাশি রাজ্যস্তর, জাতীয় স্তরের খেলাতেও কয়েক বছর ধরেই ভাল ফল করছেন পড়ুয়ারা। তবে অ্যাথলিটে এ বারের ফল সবথেকে ভাল হয়েছে বলেই মনে করছেন বিভাগের অধ্যাপকেরা।
পশ্চিমবঙ্গের যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলিতে শারীরশিক্ষা বিভাগ রয়েছে সেই সমস্ত প্রতিষ্ঠান বছরে একবার ‘মিট’ করে। এ বছর ছিল ৩০তম মিট। এর আগে ২৮তম মিটটি বিশ্বভারতীতে হয়েছিল। এ বছর মিট হয় বারাসতের একটি বেসরকারি বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসে। প্রথম দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেয় শারীরশিক্ষা বিভাগের পড়ুয়ারা। মার্চ পাস্ট প্রতিযোগিতাতেও জয়ী হয় বিশ্বভারতীর অ্যাথলিট দল। শারীরশিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, যেহেতু একদিনেই সব প্রতিযোগিতা হয় তাই বেশি ইভেন্ট থাকে না। দৌড়ের মধ্যে ১০০ মিটার, ২০০ মিটার, ৪০০ মিটার, ৮০০ মিটার ও ১৫০০ মিটার, জাম্পের মধ্যে লং-জাম্প ও হাই-জাম্প এবং থ্রোয়িংয়ের মধ্যে জ্যাভলিন, শর্টপাট ও ডিসকাস এই ইভেন্টগুলি হয়।
শারীরশিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরের প্রতিযোগিতায় বিশ্বভারতী থেকে ১১ জন পড়ুয়ার দল সেখানে যায়। নীলকুমার দলুই, অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়, রিজিয়া সুলতানা, সীমা খাতুন, সোমা রুইদাস, আশিস ঘোষ, সাবানা খাতুন, অক্ষয় বাউরি, দিব্যান ঘোষ এবং শিউলি ঘোষ প্রত্যেকেই ব্যক্তিগত ইভেন্টে স্বর্ণ পদক, রৌপ্য পদক কিংবা তাম্র পদক জয় করেছেন। রিলে দৌড়ে জয়ী হন বনশ্রী রায় সরকার। ছেলেদের এবং মেয়েদের ৪×১০০ মিটার রিলে দৌড়েও চ্যাম্পিয়ন হয়ে দু’টি স্বর্ণপদক জেতে বিশ্বভারতীর দলটি।
সব মিলিয়ে এ বছর বিশ্বভারতীর ঝুলিতে ন’টি স্বর্ণ পদক, তিনটি রৌপ্য পদক এবং পাঁচটি তাম্র পদক। দুটি স্বর্ণ পদক সহ রিলেতে জিতে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন নীলকুমার দলুই এবং দুটি স্বর্ণ পদক, একটি তাম্র পদক সহ রিলেতে জিতে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সীমা খাতুন। এঁরা দু’জনেই শারীরশিক্ষা বিভাগের বিপিএড দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া।
টিম ম্যানেজার হিসেবে এঁদের বারাসতে খেলতে নিয়ে যান বিশ্বভারতীর এনসিসির কোম্পানি কমান্ডার অভিজিৎ থানদার এবং বিশ্বভারতীর বাস্কেটবল প্রশিক্ষক সেন্টু মিত্র। শারীরশিক্ষা বিভাগের প্রধান সমীরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘ধারাবাহিক ভাবেই ছাত্রছাত্রীরা ভাল ফল করছে। তবে এত ভাল ফল এই প্রথম।’’ বিশ্বভারতীর অ্যাথলিট প্রশিক্ষক সুমন্ত মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিশ্বভারতীতে আধুনিক মানের ৪০০ মিটার ট্র্যাকের প্রয়োজন আছে। সেটা হলে আরও ভাল ফল হবে আশা রাখছি। জাতীয় এমনকি আন্তর্জাতিক স্তরেও আমাদের অ্যাথলিটরা জয়লাভ করবে।’’ বিভাগের এমন সাফল্যে খুশি বর্তমান, প্রাক্তনীরাও।