—ফাইল চিত্র।
শিলংয়ে শাপমুক্তি!
লাজং-কাঁটা উপড়ে ফেলে আই লিগ টেবলে শীর্ষ স্থান দখলে রাখার স্বপ্নপূরণ।
আই লিগের ইতিহাসে এর আগে মাত্র এক বারই শিলংয়ের মাটিতে লাজং-কে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তাও আবার প্রায় চার বছর আগে মার্কোস ফালোপার কোচিংয়ে। লাল-হলুদ কোচ হিসেবে ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের কাছে লাজং এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচ মানেই ছিল আতঙ্ক। জিতে মাঠ ছাড়ার স্বপ্ন তাঁর অধরাই ছিল এত দিন। শনিবার ক্রিস্টোফার পেইনের জোড়া গোলে অবশেষে শাপমুক্তি ঘটল মর্গ্যানেরও।
এ দিন ম্যাচের আগে ড্রেসিংরুমেই ফুটবলারদের নিয়ে ছোট্ট টিম মিটিং করেন মর্গ্যান। তাতেই বদলে যায় লাল-হলুদ অন্দরমহলের আবহ। ওয়েডসন আনসেলমে, উইলিস প্লাজা-হীন ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তুলেছিল। ৯ মিনিটে রবিন সিংহের পাস থেকে প্রথম গোল করেন ক্রিস্টোফার। গোল করেই জার্সির মধ্যে বল ঢুকিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার। লাল-হলুদ জার্সিতে প্রথম গোল ক্রিস্টোফার উৎসর্গ করলেন সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে। ৩৩ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করেন মহম্মদ রফিকের পাস থেকে। তবে বাঙালি মিডফিল্ডারের দুরন্ত শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যেত ইস্টবেঙ্গল।
কী বলেছিলেন ফুটবলারদের?
ম্যাচের পর শিলং থেকে ফোনে মর্গ্যান বললেন, ‘‘ওদের বলেছিলাম, ফুটবল হচ্ছে মাঠে নেমে নিজেদের প্রমাণ করা। আইজলের কাছে হারের পর তোমাদের প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল। আজও কি তার পুনরাবৃত্তি করতে চাও? না কি জিতে মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়তে চাইবে? সিদ্ধান্তটা তোমাদেরই নিতে হবে।’’
মর্গ্যানের ‘পেপ টক’-এর পরে দুর্দান্ত শুরু করলেও দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ কমে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। ডিফেন্সের ভুলে ৬৪ মিনিটে গোল করে ব্যবধান কমান লাজং স্ট্রাইকার পিয়েরিক দিপান্দা। মর্গ্যান বলছেন, ‘‘দ্বিতীয়ার্ধে লাজংয়ের আক্রমণাত্মক ফুটবলের সামনে আমরা চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। এই কারণেই গোলটা খেতে হয়েছে। তবে এর জন্য আমি কাউকে কাঠগড়ায় তুলছি না। অ্যাওয়ে ম্যাচে সামান্য ভুল-ভ্রান্তি হতে পারেই। তা ছাড়া রেফারির বেশ কিছু সিদ্ধান্তও কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে গিয়েছে। তবে পরপর দু’টো অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকে ছয় পয়েন্ট পেয়ে খুশি।’’
১২ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে এক নম্বরে থাকলেও খুব একটা স্বস্তিতে নেই মর্গ্যান। ঘাড়ের কাছেই নিঃশ্বাস ফেলছে মাত্র এক পয়েন্ট পিছনে থাকা আইজল এফসি। এ দিন তারাও ঘরের মাঠে মুম্বই এফসি-কে ২-০ গোলে হারিয়েছে। লাজংয়ের বিরুদ্ধে জয়ের পরে তাই টিম হোটেলে ফিরেই মোহনবাগান বনাম চার্চিল ম্যাচ দেখতে টেলিভিশনের সামনে বসে পড়েছিলেন লাল-হলুদ কোচ। মোহনবাগানকে হারিয়ে লিগ টেবলের ষষ্ঠ স্থানে উঠে আসা গোয়ার দলটিই যে মঙ্গলবার প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গলের।
পাহাড়ে বসেই চার্চিল-বধের প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন মর্গ্যান!