Bangladesh

টেস্ট, ওয়ানডেতে কেন এত উপেক্ষা বাংলাদেশকে?

টেস্ট ক্রিকেটে দ্বি-স্তরীয় কাঠামো চালু করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। গত এপ্রিলে আইসিসি’র চিফ এক্সিউটিভ কমিটির (সিইসি) সভায় ভিডিও প্রেজেন্টেশনে টেস্টের দ্বিতীয় স্তর প্রবর্তনের আইডিয়াটা প্রকাশও পেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৬ ১৭:০০
Share:

টেস্ট ক্রিকেটে দ্বি-স্তরীয় কাঠামো চালু করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। গত এপ্রিলে আইসিসি’র চিফ এক্সিউটিভ কমিটির (সিইসি) সভায় ভিডিও প্রেজেন্টেশনে টেস্টের দ্বিতীয় স্তর প্রবর্তনের আইডিয়াটা প্রকাশও পেয়েছে। শেষ পর্যন্ত স্তর ভাগ হলে টেস্টে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় স্তরে নামিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জুনে আইসিসি’র সিইসি সভায় দ্বিস্তরীয় কাঠামোর পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছেন বিসিবি প্রতিনিধি। বিসিবি যতোই যুদ্ধ করুক না কেন, দ্বিতীয় স্তর প্রবর্তনের আগেই কিন্তু বাংলাদেশ ও জিম্বাবোয়েকে কার্যত এই স্তরেই গণ্য করছে আইসিসি। চলতি বছরে, এমনকী এ মাস থেকে শুরু হওয়া ২০১৬-১৭ ক্রিকেট মরসুমের ফিউচার টুর প্রজেক্টে (এফটিপি) এটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। এ বছর বিগত ছ’মাসে টেস্ট, ওয়ানডে ম্যাচের সূচি দেখলেও সেটা বোঝা যাবে।

Advertisement

গত বছরে ওয়ানডে ক্রিকেটে বিস্ময়কর উন্নতি, হোমে চারটি সিরিজের সব ক’টিতে জয়, বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট, ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে নয় থেকে সাতে উঠে আসা, এত কিছুর পরও কিন্তু পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম খেলেছে বাংলাদেশ। বরং বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে জিম্বাবোয়ে (বাংলাদেশ ১৮টি, জিম্বাবুয়ে ৩১টি)। আর টেস্ট? কালে-ভদ্রে টেস্ট খেলার সুযোগকে নিয়তি বলেই যেন ধরে নিয়েছে বিসিবি। গত বছর প্রথম ৯টি টেস্ট দলের মধ্যে সবচেয়ে কম (৫টি টেস্ট) খেলেছে বাংলাদেশ। ২০১৬-১৭ ক্রিকেট মওশুমে ভারত যেখানে ১৭টি টেস্ট, পাকিস্তান ১৫টি, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ১৪টি করে, নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০টি করে এবং শ্রীলংকা ৮টি টেস্ট খেলবে, সেখানে বাংলাদেশের ভাগ্যে ঝুলছে সর্বোচ্চ ৫টি টেস্ট! এ বছরের প্রথম ৭ মাসে বাংলাদেশের ভাগ্যে একটিও টেস্ট জোটেনি!

ওয়ানডে ক্রিকেটেও বলার মতো ম্যাচ নেই বাংলাদেশের। বছরের পেরিয়ে যাওয়া ছ’মাসে একটি ওয়ানডে ম্যাচও খেলার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। অথচ, ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের নীচে থেকেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলে ফেলেছে ৭টি, পাকিস্তান ২টি এবং জিম্বাবুয়ে ৬টি ম্যাচ! ২০১৬-১৭ ক্রিকেট মরসুমে দুর্গতিটা আরও বেশি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বাদ দিলে এই মরসুমে সর্বসাকুল্যে ১০টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ ! যেখানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে সামনে রেখে ইংল্যান্ড খেলবে ২৪টি, নিউজিল্যান্ড ২০টি, অস্ট্রেলিয়া ১৬টি, পাকিস্তান ১৯টি, শ্রীলংকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলবে ১৩টি করে ওয়ানডে। টি-২০ বিশ্বকাপের বছরে গত ছ’মাসে দ্বিতীয় সর্বাধিক ১৬টি টি-২০ খেলায় অবশ্য গর্ব করতেই পারে মাশরাফিরা। তবে এখানেও দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে ম্যাচের সংখ্যাটা মাত্র চার। বাকি ১২টি ম্যাচ বাংলাদেশ পেয়েছে টি-২০ বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপে।টেস্ট খেলিয়ে দেশের মর্যাদা পাবার পর লম্বা বিরতিতে টেস্ট খেলার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশের আক্ষেপ নতুন নয়। ২০০৬ সালের এপ্রিলের পর ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে বড্ড বড় ভুল করে ফেলেছিল বিসিবি, টানা ১৩ মাস টেস্টের বাইরে ক্রিকেটারদের রেখে।

Advertisement

২০১১র ডিসেম্বরের পর পরবর্তী টেস্টের জন্য ১১ মাস অপেক্ষায় থেকেছেন তামিম, মুশফিকুর, সাকিবরা। টেস্টে লম্বা বিরতির রেকর্ড এবার সেই অতীতকে যাচ্ছে ছাড়িয়ে। ২০১৫র ৩ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের মাঝে বিরতি ১৪ মাস ১৭ দিন! টেস্টে লম্বা বিরতিতে ম্যাচ খেলা নিয়তি বলে মেনে নেয়া যায়। তবে ৫০ ওভারের ম্যাচে যে দলটির বিস্ময়কর উত্থানে বিস্মিত ক্রিকেট বিশ্ব, সেই বাংলাদেশ দলকে কেন এই ভার্সনের ক্রিকেটেও পেতে হবে লম্বা বিরতি? গত ১১ নভেম্বরে জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচের পর এফটিপি অনুযায়ী বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ আগামী ৭ অক্টোবর। বিরতি প্রায় ১১ মাস! টেস্ট মর্যাদা পাবার পর ওয়ানডে ক্রিকেটে এতো লম্বা বিরতিতে এর আগে কখনো কাটেনি বাংলাদেশের!

আরও খবর

কাউন্টির প্রথম ম্যাচেই মুস্তাফিজুর ম্যাজিক

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন