বিশ্বকাপ দেখে আক্ষেপ, আমাদের তো মাঠই নেই

রাজ্য সরকারের সহায়তায় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যুব বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখার সুযোগ পেয়েছে বিভিন্ন জেলার ছেলেমেয়েরা। শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ফাইনাল দেখতে গিয়েছিল ১৯ জন মহিলা ফুটবলার।

Advertisement

সৌমেশ্বর মণ্ডল

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:৪৩
Share:

অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখতে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে গিয়েছিল ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম থানা বালিকা বিদ্যাপীঠ, নারায়ণগড়ের গৈতা হাইস্কুল ও খড়্গপুরের কড়িয়াশোল হাইস্কুলের অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা ফুটবলারেরা। এই ম্যাচ দেখার পর তাঁদের উপলব্ধি, পরিকাঠামোর ও প্রশিক্ষণের উন্নতি না হলে ফুটবলের উন্নতি হবে না।

Advertisement

রাজ্য সরকারের সহায়তায় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যুব বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখার সুযোগ পেয়েছে বিভিন্ন জেলার ছেলেমেয়েরা। শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ফাইনাল দেখতে গিয়েছিল ১৯ জন মহিলা ফুটবলার। এ বছর সুব্রত কাপে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৭’য় জেলায় চ্যাম্পিয়ন হয় গৈতা হাইস্কুল। রাজ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়ে জাতীয়স্তরে যায় নয়াগ্রাম থানা বালিকা বিদ্যাপীঠ। আইএফএ-র আয়োজনে অনূর্ধ্ব-১৭ মেয়েদের জেলা দলে এই স্কুলের মেয়েরা যোগ দেয়।

শনিবার ফাইনাল দেখে অভিভূত গৈতা স্কুলের ছাত্রী কৃষ্ণা সিংহ। তার কথায়, “এই খেলা দেখে অনেক কিছু শিখলাম। আমরা কোথায় পিছিয়ে আছি সেটাও বুঝতে পারলাম। আমাদের দীর্ঘ সময় ধরে অনুশীলন করতে হবে। কিন্তু অনুশীলন করার মতো ভাল মাঠ নেই।” কৃষ্ণা জানায়, খেলার মাঠে ধান শুকোনো হয়, গরু ছাগল বাঁধা থাকে। এর ফলে মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভাল প্রশিক্ষকের প্রয়োজনীয়তার কথাও জানিয়েছেন তিনি। নয়াগ্রাম বিদ্যালয়ের ছাত্রী মুগলি হেমব্রম বলে, “খেলা দেখে শিখলাম যে কী ভাবে মনোবল শক্ত করতে হয়। এক গোলে পিছিয়ে গেলেই মনোবল ভেঙে যায় আমাদের। ইংল্যান্ডের থেকে শিখলাম, পিছিয়ে থেকেও চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায়।” তবে তার আক্ষেপ, রাজ্য বা জাতীয়স্তরে খেলতে গেলে জেলার চাহিদা থাকে। কিন্তু কোন মাঠে বা কোন পরিবেশে অনুশীলন করতে হয়, ডায়েট কেমন, সে ব্যাপারে খোঁজ রাখেন না কেউ। উন্নত পরিকাঠামো ও প্রশিক্ষণ পেলে জাতীয়স্তরে ভাল ফল করবে তারাও, আশাবাদী মুগলি। বিদ্যালয়ের ক্রীড়াশিক্ষিকা কাকলি চক্রবর্তী বলেন, “জঙ্গলমহলের মেয়েরা প্রাণ দিয়ে ফুটবল খেলে। কিন্তু নিজস্ব খেলার মাঠের আবেদনে কর্ণপাত করেনি জেলা প্রশাসন। কখনও অন্যের মাঠে, কখনও গরুর হাটে অনুশীলন করে মেয়েরা।” তিনি আরও জানান, স্কুলের পাশে নয়াগ্রাম স্টেডিয়াম হয়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। সেখানেও অনুশীলনের অনুমতি মেলেনি।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংসদের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ দাস বলেন, “জেলার অনেক স্কুলেরই নিজস্ব মাঠ নেই। অন্যের উপর ভরসা করে থাকতে হয়। সকলের নিজের মাঠ হলে খেলার উন্নতি হবে।” পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের শিক্ষা ও ক্রীড়া কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র বলেন, “পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব আমরা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন