বঞ্চিত: হুগলিতে মেয়েদের জেলা লিগ না হওয়ায় হতাশ প্রাক্তন তারকারা। ফাইল চিত্র
ভারতীয় সিনিয়র দলে রক্ষণে এই মুহূর্তে অন্যতম ভরসা প্রীতম কোটাল ও নারায়ণ দাস। এক বছর আগে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে খেলেছেন অভিজিৎ সরকার। অতীতেও জাতীয় দলে একের পর এক ফুটবলার উপহার দিয়েছে হুগলি। জেলা লিগের তিনটি ডিভিশনের খেলাও নিয়মিত হয়। কিন্তু মহিলা ফুটবলের চিত্রটা সম্পূর্ণ বিপরীত।
হুগলি জেলায় মেয়েদের ফুটবল ক্লাব রয়েছে বেশ কয়েকটি। রাজ্য দলেও একাধিক ফুটবলার রয়েছে হুগলির। এমনকি, মেয়েদের আই লিগ খেলার জন্যও চুঁচুড়ার মানিক কোচিং সেন্টার আবেদন করেছে। অন্যান্য জেলার মতো হুগলিতেও মেয়েদের ফুটবলে কোনও লিগ হয় না। হুগলি জেলায় ফুটবলের দায়িত্বে জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকা তনুময় বসু। তিনি বলছিলেন, ‘‘আমাদের জেলা থেকে অতীতেও প্রচুর ফুটবলার উঠে এসেছে। এখনও উঠছে। কারণ, প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলারদের ঠিক মতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আমরা পিছিয়ে পড়ছি শুধু মেয়েদের ফুটবলে।’’ কেন? তনুময়ের ব্যাখ্যা, ‘‘হুগলি জেলায় প্রচুর মেয়ে ফুটবল খেলে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পয়সার বিনিময়ে ওরা খেলে বেড়ায়। এর ফলে অনেক প্রতিভাই অকালে হারিয়ে যাচ্ছে। এই কারণেই আমরা চাইছি দ্রুত মেয়েদের জেলা লিগ শুরু করতে।’’
কবে থেকে শুরু হবে মেয়েদের জেলা লিগ? জাতীয় দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক বললেন, ‘‘সব ঠিক চললে, বছর দু’য়েকের মধ্যেই মেয়েদের জেলা লিগ শুরু করতে পারব বলে আশা।’’
আরও পড়ুন: স্পেনের কাছেই হার মানলেন স্প্যানিশ কোচ
আরও পড়ুন: সোনার খনি হাওড়াতেই হারিয়ে গিয়েছে প্রতিভা
ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক কুন্তলা ঘোষ দস্তিদারের মতে, জেলা লিগই হচ্ছে নতুন ফুটবলার উঠে আসার মঞ্চ। তিনি বললেন, ‘‘বাংলা দলে হুগলির অনেক মেয়ে দাপটের সঙ্গে খেলছে। বেশে কয়েকটা কোচিং সেন্টারও আছে। কিন্তু জেলা লিগ না থাকলে মেয়েগুলো কী ভাবে উঠে আসবে?’’ তিনি যোগ করলেন, ‘‘অন্যান্য জেলার মতো পরিস্থিতি হুগলিতে নেই। এখনও ফুটবলের প্রতি মানুষের প্রবল আগ্রহ রয়েছে।’’ কুন্তলা হতাশ, মেয়েদের ফুটবলকে সে ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না বলে। তাঁর কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে আমাদের রাজ্যে প্রায় হাজার দশেক মেয়ে ফুটবল খেলে। এর মধ্যে অধিকাংশই বিভিন্ন জেলার। অথচ মেয়েদের ফুটবলে উন্নতির দিকে সে ভাবে নজর দেওয়াই হয় না। দ্বিতীয়ত, অধিকাংশ মেয়েই দরিদ্র পরিবার থেকে আসে। অর্থের অভাবেই ওরা পয়সার বিনিময়ে বিভান্ন প্রতিযোগিতায় খেলতে বাধ্য হয়। জেলা লিগ শুরু হলে হয়তো পরিস্থিতি কিছুটা বদলাতে পারে।’’