জয়োচ্ছ্বাস: জার্মানিকে জিতিয়ে উল্লাস খোসের। ছবি: গেটি ইমেজেস
শেষ মুহূর্তের দুরন্ত গোলে জার্মানিকে জেতানোর পরে সমালোচকদের এক হাত নিলেন টোনি খোস। ‘‘আমার মনে হয় জার্মানিতে এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা খুব খুশি হবেন আমরা দ্রুত বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলে। কিন্তু তাঁদের আকাঙ্ক্ষা আমরা এত সহজে পূরণ হতে দেব না,’’ ম্যাচের পরে বলেন টোনি।
প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর কাছে হারের পরে শনিবার সুইডেনের বিরুদ্ধেও প্রথমে পিছিয়ে গিয়েছিল ওয়াকিম লো-র দল। তখন মনে হচ্ছিল বিশ্বকাপে প্রথম বার গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের লজ্জা নিয়ে না মাঠ ছাড়তে হয় জার্মানিকে। কিন্তু মার্কো রয়েস সমতায় ফেরান দলকে। টোনি খোসের জয়সূচক গোল আসে ম্যাচের অন্তিম লগ্নে। সেট পিস থেকে দুরন্ত গোল করে তিনি জার্মানির শেষ ষোলোয় যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখেন।
মেক্সিকোর বিরুদ্ধে হারের পরে ঘরে-বাইরে জার্মানি প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিল। টোনি তৃপ্ত তাঁর এবং সতীর্থদের দক্ষতা নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তুলেছিল তাঁদের ভুল প্রমাণ করে। পাশাপাশি অবশ্য সুইডেনের ম্যাচে প্রথমে এগিয়ে যাওয়ার দায় নিজের কাঁধে নেন তিনি। টোনি নিয়ন্ত্রণ হারানোর পরে প্রতি-আক্রমণে ওঠার সময় সুইডিশদের গোলদাতা ওলা তোইভোনেনকে আটকানোর চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা কাজে আসেনি। তিনি বলেন, ‘‘সুইডেনের প্রথম গোলটা আমার ভুলের জন্য। আমি তার দায় নিচ্ছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই ভুল তো আমরা শুধরে নিয়েছি। তাই না?’’
জয়ের জন্য দ্বিতীয়ার্ধে সুইডেনকে প্রবল চাপে ফেলে দেওয়ার সময় টোনি প্রবল ভাবে সক্রিয় ছিলেন। ৮২ মিনিটে জেহোম বোয়াটেং লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে যাওয়ার পরে ১৫টি সফল পাস দেন তিনি। যা গোটা সুইডেন টিমের ওই সময় পর্যন্ত পাস দেওয়ার পরিসংখ্যানের সমান। সব মিলিয়ে জার্মানির ৭৪৪টি পাসের ৮৬ শতাংশ সফল। যার মধ্যে টোনির ১২৮টি পাসের মধ্যে সফল পাস ১১৭টি। চলতি মাসে রাশিয়ায় সফল পাস দেওয়ার দিক থেকে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তবু টোনি নিজের ভুল স্বীকার করে আরও বলেন, ‘‘ম্যাচে যখন এক জন ফুটবলার ৪০০ বার বলটা পায়ে ঠেকাচ্ছে, তখন দু’একবার নিয়ন্ত্রণ হারানো স্বাভাবিক। যাই হোক, তবু আমি ওই ভুলটা স্বীকার করছি।’’ জার্মান কোচও টোনির পারফরম্যান্সে দারুণ খুশি। তিনি বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে সুইডিশদের প্রথম গোল করার ক্ষেত্রে ওর দোষ ছিল। সেটা দুর্ভাগ্য। তবে ওর খেলায় আমি খুশি। শেষ মুহূর্তে ফ্রি-কিক থেকে খুব ভাল গোল করেছে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘ম্যাচের শেষ কয়েক মিনিট নাটকীয়তায় ভরপুর ছিল। কিন্তু এ সব তো ফুটবলেরই অঙ্গ। এই আকর্ষণটাই তো ফুটবল সমর্থকরা চায়।’’ সুইডিশদের রক্ষণ ভাঙতে প্রথমে প্রবল সমস্যায় পড়লেও লো ফুটবলারদের চাপে পড়তে বারণ করেন। জার্মান কোচ বলেন, ‘‘আমি দলকে বলেছিলাম স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে।’’ যোগ করেন, ‘‘প্রথমে গোল খেলেও আমরা কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হারাইনি। ম্যাচটা জেতার আশা আমরা কখনও হারাইনি।’’