কার্ড দেখা চলবে না, নির্দেশ দেন জাপান কোচ

ইয়ান বেদনারেকের দুর্দান্ত ভলি থেকে পোলান্ড ১-০ এগিয়ে গেলেও কোচের এমন নির্দেশে খানিকটা হতচকিত হয়ে যান জাপানের ফুটবলাররা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৮ ০৪:২৪
Share:

খুশি: শেষ পর্যন্ত শেষ ষোলোয় ওঠার উল্লাস হোন্দার। ছবি: রয়টার্স

ফুটবলে এমন অদ্ভুত পরিস্থিতি সচরাচর দেখা যায় না। এক গোলে পিছিয়ে থাকা একটা দলের কোচ তাঁর ফুটবলারদের বলছেন, রক্ষণাত্মক খেলতে। সেই সঙ্গে ফুটবলারদের সতর্ক করছেন, কোনও ভাবে হলুদ কার্ড দেখলে চলবে না!

Advertisement

সত্যিটা হচ্ছে, ঠিক সেটাই করলেন জাপান বিশ্বকাপ দলের কোচ আকিরা নিশিনো। শুধু তাই নয়, তিনি যে এমনটা করেছেন তা নিজের মুখে স্বীকার করলেন খেলা শেষ হতেই। পোলান্ডের কাছে ০-১ হেরেও মূলপর্বে উঠল জাপান। উঠল কারণ সেনেগালের সঙ্গে গোল করা থেকে শুরু করে পয়েন্ট ইত্যাদি সব কিছু সমান-সমান হলেও হলুদ কার্ড কম দেখায়। বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে যা বেনজির একটা ঘটনা!

জাপানের কোচ বললেন, ‘‘পরিস্থিতিটা সত্যিই সাঙঘাতিক ঝুঁকির হয়ে গিয়েছিল। আমরা ০-১ পিছিয়ে তখন। বাধ্য হয়েই ফুটবলারদের বলে দিলাম, গোল শোধ করার চেষ্টা করতে হবে না। রক্ষণ সামলাও। সেনেগাল-কলম্বিয়া ম্যাচে কী হয় তার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া অন্য কোনও রাস্তা আমাদের সামনে খোলা ছিল না।’’

Advertisement

ইয়ান বেদনারেকের দুর্দান্ত ভলি থেকে পোলান্ড ১-০ এগিয়ে গেলেও কোচের এমন নির্দেশে খানিকটা হতচকিত হয়ে যান জাপানের ফুটবলাররা। পরক্ষণেই অবশ্য কোচের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে সবাই মিলে রক্ষণ সামলাতে শুরু করেন। অবশ্য পোলান্ডও এই সময়টায় আর গোল করার জন্য কোনও উৎসাহই দেখায়নি। যা দেখে অবাক হয়ে যান আকিরা নিশিনোও। বললেনও সে কথা, ‘‘আমার ছেলেরা যে ভাবে বিশ্বস্ত সৈনিকের মতো আমার কথা মতো কাজ করল তাতে আমি দারুণ খুশি। আমরা আরও ভাগ্যবান কারণ পোলান্ডও আর একটা গোল দেওয়ার কোনও চেষ্টাই করেনি। বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে যা অপ্রত্যাশিত বললেও কম বলা হবে। আমি অন্তত এ রকম আগে দেখিনি। তবে যাই হোক, আমাদের জন্য তো ভালই হয়েছে।’’

জাপানের কোচ আরও জানিয়েছেন, ফুটবলার বদল করার সময় বদলি ফুটবলারের মাধ্যমে তিনি ম্যাচ ড্র রাখার জন্য খেলতে বলে দেন জাপানকে। ‘‘আমি বদলি ফুটবলারকে সব বুঝিয়ে বলে দিয়েছিলাম। ওই মাঠে নেমে বাকিদের সেটা বলে দেয়। আমার মোদ্দা বক্তব্য ছিল, কোনও ভাবে আর গোল খাওয়া চলবে না। এও বলেছিলাম বিপক্ষের কাউকে ভুলেও আঘাত করা চলবে না। জানতাম নতুন হলুদ কার্ড আমাদের ছিটকে দিতে পারে। চেয়েছিলাম, বাকি যা হওয়ার তা অন্য ম্যাচের ফলের উপর নির্ভর করুক।’’

জাপানের কোচকে প্রশ্ন করা হয়, এই ভাবে রণনীতি নেওয়াটা কি ফুটবলের পক্ষে ভাল? তাতে খানিক বিরক্তই হন জাপানের কোচ। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘মানছি ব্যাপারটা একটু হলেও দুঃখজনক। কিন্তু সেই মুহূর্তে আমার সামনে তো অন্য কোনও রাস্তাও খোলা ছিল না। আমার তো মনে হয়, আমার জায়গায় অন্য যে কোনও দেশের যে কোনও কোচ থাকলেও ঠিক সেটাই করতেন।’’

জাপানের এমন রক্ষণাত্মক ফুটবলে খুবই বিরক্ত হন স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকেরাও। প্রচুর টিটকিরিও দেওয়া হয় জাপানের ফুটবলারদের। যা নিয়ে আকিরার বক্তব্য, ‘‘আমাদের লক্ষ্য যতদূর সম্ভব খেলে যাওয়া। না হলে তো বিশ্বকাপে আসারই কোনও মানে হয় না। তাই দর্শকদের আচরণ নিয়ে একটুও মাথা ঘামাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন