সহমর্মী: গুন্ডোয়ানকে পাশে নিয়ে লো। ছবি: গেটি ইমেজেস।
জার্মানি ২ • সৌদি আরব ১
রাশিয়া উড়ে যাওয়ার আগে বিশ্বকাপের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে সৌদি আরবকে ২-১ হারিয়েও ক্ষুব্ধ জার্মান ম্যানেজার ওয়াকিম লো।
তবে সেটা দলের পারফরম্যান্সের জন্য নয়। নিজের দেশের সমর্থকদের আচরণে। লেভারকুসেনে শুক্রবার রাতে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ম্যাচ চলাকালীন জার্মান সমর্থকরা কটূক্তি করেন লো-এর দলের মাঝমাঠের ফুটবলার ইলখাই গুন্ডোয়ানকে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত পাঁচটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলেছে জার্মানি। তার মধ্যে এটিই তাদের প্রথম জয়। কিন্তু তার পরেও সমর্থকদের জন্য মেজাজ বিগড়ে রয়েছে জার্মানির কোচের।
ঠিক কী হয়েছিল গুন্ডোয়ানের সঙ্গে? সৌদি আরবের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধ ২-০ এগিয়ে শেষ করেছিল জার্মানি। দ্বিতীয়ার্ধে ৬০ মিনিটে গুন্ডোয়ানকে মাঠে নামান গত বারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের কোচ। কিন্ত জার্মান মাঝমাঠের এই ফুটবলার মাঠে নামার পরেই দর্শকরা কটূক্তি করতে শুরু করেন। গুন্ডোয়ান বল ধরলে বা গোলে শট মারলে তা আরও বাড়ছিল।
দর্শকদের এই রোষের কারণ, এক মাস আগের একটি ঘটনা। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এর্দোয়ান লন্ডনে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেন জার্মানির দুই ফুটবলার মেসুট ওজিল এবং গুন্ডোয়ান। যাঁদের দু’জনের বাবা-মা তুরস্কের নাগরিক ছিলেন অতীতে। কিন্তু এই দুই ফুটবলার বড় হয়েছেন জার্মানির শহর গেলসেনকির্চেন-এ। লন্ডনে তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে নিজের ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার সিটির একটি জার্সি উপহার দেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে সেই জার্সিতে সাক্ষর করিয়ে গুন্ডোয়ান বলেছিলেন, ‘‘আমার প্রেসিডেন্ট’।
এর পরেই তুরস্কের সঙ্গে যোগসূত্র থাকা এই দুই জার্মান ফুটবলার রাগের কারণ হয়ে দাঁড়ান সমর্থকদের। ওজিল শুক্রবারের ম্যাচে খেলেননি। যদিও এর আগে গুন্ডোয়ান বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার সঙ্গে রাজনীতি মেলানো উচিত নয়। জার্মানিতে বড় হওয়াটা আমার কাছে সৌভাগ্যের। কিন্তু তুরস্কের সঙ্গে একটা আবেগের টানও রয়েছে।’’
ম্যাচের পরে লো সাংবাদিক সম্মেলনে বলে যান, ‘‘বিশ্বকাপ দলে থাকা জাতীয় দলের একজন ফুটবলারকে এ ভাবে কটূক্তি করায় কার লাভ হচ্ছে? ইলখাই কী করবে? এর আগেই তো ও বলেছিল, জার্মান মূল্যবোধ নিয়েই বড় হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একটা ছবি তোলায় কেন ওকে বিতর্কের মুখে পড়তে হবে?’’
ম্যাচের আগেও জার্মান দলের ডিরেক্টর অলিভার বিয়েরহফও এই বিতর্ক জিইয়ে রাখার জন্য এক হাত নেন জার্মান সংবাদমাধ্যমকে।
সৌদি আরবের বিরুদ্ধে শুরুতে ঠিমো ওয়ার্নারের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল জার্মানি। কিন্তু প্রথমার্ধের একদম শেষ দিকে ওমর হসউইয়ির আত্মঘাতী গোলে ২-০ এগিয়ে গিয়েছিল জার্মানি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে ব্যবধান কমান আল জাস্সাম।
দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণের ভুলভ্রান্তি কেন বাড়ছে, ম্যাচের পরে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে জার্মানির কোচ বলেন, ‘‘আমি চিন্তিত নই। কারণ, বিশ্বকাপ শুরু হলেই দল এইসব ভুল আর করবে না। দ্বিতীয়ার্ধে অনেক সুযোগ তৈরি করেছে ছেলেরা। এই ম্যাচে প্রাপ্তি প্রথমার্ধে খেলে গোলকিপার মানুয়েল নয়্যারের গোল না খাওয়া।’’