ব্রাজিল নয়, ইংল্যান্ডকে শেষ চারে দেখছেন প্রাক্তন ম্যান ইউনাইটেড ডিফেন্ডার

কেনের অস্ত্র কাঠিন্য আর গোলের খিদে: ব্রাউন  

কুড়ি বছরের সেই তরুণই আজ ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেন। একটি হ্যাটট্রিক-সহ প্রথম দু’টো ম্যাচে পাঁচ গোল করে যিনি রাশিয়া বিশ্বকাপের অন্যতম নায়ক।

Advertisement

কৌশিক দাশ

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৮ ০৪:৫২
Share:

স্বপ্ন: কেনের হাত ধরে ইংল্যান্ডের উত্থান দেখছেন ব্রাউন।

চার বছর আগে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে টটেনহ্যাম হটস্পার বনাম সান্ডারল্যান্ডের এক ম্যাচে ভয়ঙ্কর সংঘর্ষে মাথা ফেটে গিয়েছিল বছর কুড়ির এক ফুটবলারের। সেই অবস্থায় মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে খেলে যান তিনি। গোল করে দলকে জেতান।

Advertisement

কুড়ি বছরের সেই তরুণই আজ ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেন। একটি হ্যাটট্রিক-সহ প্রথম দু’টো ম্যাচে পাঁচ গোল করে যিনি রাশিয়া বিশ্বকাপের অন্যতম নায়ক। আর যাঁর সঙ্গে সে দিন সংঘর্ষ ঘটেছিল, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড এবং ইংল্যান্ডের সেই প্রাক্তন ডিফেন্ডার ওয়েসলি ব্রাউন মনে করেন, এই বিশ্বকাপ হতে চলেছে হ্যারি কেনের।

১৫ বছর ধরে ম্যান ইউনাইটেডের ডিফেন্সের স্তম্ভ থাকার সময় সামলেছেন অনেক স্ট্রাইকারকেই। এত বিপজ্জনক কেন লাগছে ইংল্যান্ড অধিনায়ককে? ভারতে এসেছিলেন সোনি পিকচার্স নেটওয়ার্কের বিশেষজ্ঞ ফুটবল প্যানেলে যোগ দিতে। ইংল্যান্ড ফিরে যাওয়ার আগে আনন্দবাজার-কে ফোনে একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন, ‘‘হ্যারি কেন হল গোলমেশিন। গোলের সামনে ওর মতো বিপজ্জনক ফুটবলার খুব কমই আছে। ওর শট বেশিরভাগ নিশানায় থাকে এবং তা থেকে গোলও হয়। তিন, চার বছর ধরে নিয়মিত এই কাজটা প্রিমিয়ার লিগে করে আসছে হ্যারি। এ বার বিশ্বকাপেও করছে।’’

Advertisement

বাকিদের থেকে কোথায় আলাদা হ্যারি? ইংল্যান্ড ৯ নম্বরের কোন কোন গুণ বিশেষ ভাবে চোখে পড়ে? তিনটি শক্তির কথা বলছিলেন ব্রাউন। এক, গোলক্ষুধা। দুই, বল ধরে রেখে আক্রমণ তৈরি করার ক্ষমতা। তিন, মানসিক কাঠিন্য। যে মানসিকতার পরিচয় ব্রাউন পেয়েছিলেন সান্ডারল্যান্ডের হয়ে খেলার সময়।

হ্যারি নিজেই বলেছেন, এই বিশ্বকাপে তিনি বুঝিয়ে দিতে চান, তাঁর জায়গা সেরার সেরাদের মধ্যে। আপনি কি মনে করেন, সেই ক্ষমতা আছে হ্যারির? ব্রাউনের জবাব, ‘‘অবশ্যই। হ্যারি প্রকৃত স্ট্রাইকার। ওর গোল করার দক্ষতা কারও চেয়ে কম নয়। পাশাপাশি প্রেসিং ফুটবলটাও খেলতে পারে, বিপক্ষের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে। এই বিশ্বকাপ হ্যারি কেনের হলে আমি অবাক হব না।’’

আরও একটা ব্যাপার ঘটতে দেখলেও ব্রাউন অবাক হবেন না। কী সেটা? সেমিফাইনালে যদি লাতিন আমেরিকার কোনও দল না ওঠে। পাঁচ বার ইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়াও নিজে মস্কো থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে। জানেন, চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে কী রসায়ন প্রয়োজন। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই আনন্দবাজারের অনুরোধে বেছে নিলেন সেমিফাইনালের চার সম্ভাব্য দলকে— পর্তুগাল, বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড এবং স্পেন। কেন ব্রাজিল নয়? আর্জেন্টিনা বা উরুগুয়েকেও কি উড়িয়ে দেওয়া যায়? ব্রাউনের ব্যাখ্যা, ‘‘এ বারের বিশ্বকাপে সাফল্য পাবে সেই সব দল যাদের ডিফেন্স খুব সংগঠিত। একক দক্ষতায় ম্যাচ বার করা সহজ হবে না। যেটা আমরা আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ম্যাচেই দেখেছি। লাতিন আমেরিকার কোনও সম্ভাবনা আমি দেখছি না।’’

ইংল্যান্ড দলের শক্তি কী মনে হয়? ব্রাউনের জবাব, ‘‘ইংল্যান্ডকে খুব ভাল পাসিং ফুটবল খেলতে দেখছি। ডিফেন্স বেশ ভাল। খুব ছন্দে লাগছে দলটাকে। ফুটবলারদের গড় বয়স অল্প। তা ছাড়া ওদের ওপর কোনও চাপও নেই।’’ ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের প্রশংসাও করছেন ব্রাউন। বলেছেন, ‘‘হ্যারি কেন-কে ঠিক জায়গায় খেলানো হচ্ছে। একটু পিছন থেকে ফ্লোটার হিসেবে রাহিম স্টার্লিং ভাল সাহায্য করছে। ওদের যুগলবন্দি কিন্তু দলটাকে টানবে। ইংল্যান্ডকে দেখে মনে হচ্ছে একটা দল হিসেবে খেলছে।’’

কিন্তু প্রতিবারই তো ইংল্যান্ডকে নিয়ে মাতামাতি হয় শুরুতে। সত্যি বলুন তো, কত দূর যাবে মনে হয় দলটা? ‘‘সেমিফাইনালে কিন্তু আমরা চলে যাব। তার পরে তো মাত্র দু’টো ম্যাচ। হতেই পারে, হতেই পারে...!’’ ব্রাউনের গলায় ধরা পড়ছিল স্বপ্নের আবেশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন