বাঙালির দাপটে টেস্ট জয়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পরে জন্ম আর এক নক্ষত্রের। অথচ তাঁকে দেখে সেটা কে বলবে! দু’ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি। ম্যাচে সেরার সম্মান। তবু তিনি নির্লিপ্ত। সেঞ্চুরি না পেলেও কোনও আফসোস নেই। তিনি— ঋদ্ধিমান সাহা।
‘‘সেঞ্চুরি নিয়ে ভাবি না। যেটা নিয়ে ভাবি তা হল টিমের স্বার্থে কতটা কাজে লাগতে পারছি বা আমার ইনিংস দলকে কতটা সাহায্য করতে পারছে,’’ বলছেন ঋদ্ধি। একটু থেমে বঙ্গসন্তান কিপার এটাও বলে দিলেন, ‘‘আমি এটা ভেবেই খুশি যে হাফ সেঞ্চুরিগুলো শেষ পর্যন্ত দলের কাজে এসেছে। আর যে কথাটা ভাবলে আরও ভাল লাগছে তা হল দু’টো ইনিংসই খুব কঠিন পরিস্থিতিতে এসেছে। যার জন্য টিমমেটদের সহযোগিতার কথাও ভুলছি না।’’
দুই ইনিংসেই ছয় উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ব্যাট হাতে তাঁর আবির্ভাব ক্রিজে। প্রথম ইনিংসে ২০০-৬ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৬-৬। দু’বারই হাফ সেঞ্চুরির সংযত ইনিংস। যার সুবাদে ঘাড়ে চেপে বসা নিউজিল্যান্ড বোলিং আক্রমণকে এক দিকে যেমন আছড়ে ফেলা গিয়েছে, তেমনই সচল থেকেছে ভারতীয় স্কোরবোর্ড। নিটফল, ঋদ্ধিমানের চওড়া ব্যাটই কিউয়িদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে জয়ের রাস্তা গড়ে দিয়েছে বিরাট কোহালির ভারতকে।
কী ভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে চোয়াল শক্ত করে অসমান বাউন্সের মোকাবিলা করলেন? প্রশ্ন উঠতেই ঋদ্ধিমান দেখাচ্ছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে অতীতে একই রকম পরিস্থিতিতে নেমে রান পাওয়ার আত্মবিশ্বাসকেই। ঋদ্ধির কথায়, ‘‘এই পরিস্থিতি আমার কাছে নতুন নয়। ক্লাব ক্রিকেট খেলার দিন থেকেই এই অভিজ্ঞতার সঙ্গে আমি রপ্ত।’’
একই সঙ্গে এ রকম পরিস্থিতিতে নিজের ক্রিকেট দর্শনও জানিয়েছেন ভারতীয় দলের বঙ্গসন্তান কিপার। ‘‘এ রকম পরিস্থিতিতে ব্যাট হাতে নামলে একটা কথাই মাথায় রাখি যে ক্রিজে যেন অন্য প্রান্তে থাকা ব্যাটম্যানকেও রান করার জন্য সুযোগ দিতে পারি। যাতে স্কোরবোর্ডকে সচল থাকে। কিন্তু কখনই ভাবি না যে টেলএন্ডার ব্যাটসম্যানকে আড়াল করতে হবে। এতে আমার যেমন আত্মবিশ্বাস বাড়ে, তেমনই অন্য প্রান্তে থাকা সতীর্থেরও আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। যার সুবিধা পায় টিম।’’
অধিনায়ক বিরাট কোহালি ইতিমধ্যেই ঋদ্ধিমানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ঋদ্ধি নিজেও জানেন সে কথা। তা সত্ত্বেও উচ্ছ্বাসে ভাসতে নারাজ। বরং বলছেন, ‘‘টিমের চাহিদা অনুযায়ী পারফর্ম করে যেতে চাই। আর টিমের কাজে লাগে এ রকম আরও ইনিংস খেলতে চাই আগামী দিনে।’’