বল নিয়ে যুদ্ধ গোদিন-খেদিরার। ছবি: এএফপি
জার্সি খুলে গ্যালারির দিকে পাগলের মতো ছুটে যাচ্ছেন সিআর সেভেন। হাতে ধরা জার্সি ছুড়ে দিচ্ছেন রিয়াল সমর্থকদের দিকে।
মাঠের মধ্যেই বসে পড়েছেন সের্জিও র্যামোস। কাঁদছেন হাউহাউ করে। দুঃখের নয়, আনন্দাশ্রু।
মার্সেলোকে নিবিড় আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরছেন জিনেদিন জিদান। চুল ঘেঁটে দিচ্ছেন, গালে গাল ঘষছেন। ফরাসি কিংবদন্তির চোখের কোনে জল।
লিসবনে যে লা ডেসিমা!
এক নয়, দুই নয়, দীর্ঘ বারো বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ আবার রিয়ালের ক্যাবিনেটে। যা কি না নম্বর ইউরোপিয়ান কাপ। লিসবনের লাল কার্পেট শেষ পর্যন্ত থাকল রোনাল্ডোদের। দিয়েগো সিমিওনের স্বপ্নের ফুটবল খেলে ফাইনালে ওঠা আটলেটিকো মাদ্রিদের নয়। মেসিকে থামিয়ে লা লিগা জিতলেও রোনাল্ডোর বিরুদ্ধে জেতা হল না আটলেটিকোর। ট্রফির এত কাছে পৌঁছেও কাটল না চল্লিশ বছরের অভিশাপ।
অথচ আর কয়েকটা সেকেন্ড পেরোতে পারলে, কার্লো আন্সেলোত্তি নন, সিমিওয়েনেরই রোনাল্ডোর ঘরের মাঠে রোনাল্ডো-বধ করে যাওয়ার কথা ছিল। ম্যাচের ৩৬ মিনিটের মাথায় দিয়েগো গোডিনের গোলে এগিয়ে যায় আটলেটিকো। ৯০ মিনিট পর্যন্ত যা শোধ করে উঠতে পারেনি রিয়াল। ম্যাচ যখন ইনজুরি টাইমে, আটলেটিকোর জয় যখন আর সময়ের অপেক্ষা দেখাচ্ছে, তখনই আটলেটিকোর জালে আছড়ে পড়ে সের্জিও র্যামোসের হেড। ম্যাচও চলে যায় অতিরিক্ত সময়ে। যেখানে রিয়াল প্রায় ছিঁড়ে ফেলল দাভিদ ভিয়াদের।
১১০ দশ মিনিটের মাথায় অ্যাঞ্জেলো দি’মারিয়ার শট আটলেটিকো কিপারে হাতে লেগে প্রতিহত হয়ে ফিরে এলে তা থেকে গোল করে যায় গ্যারেথ বেল। কয়েক মিনিট পর আবার গোল, এ বার ব্রাজিলীয় লেফট ব্যাক মার্সেলোর। ওখানেই ম্যাচের শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার পর কেকের উপর আইসিংটা করে যান রোনাল্ডো। যিনি এ দিন আহামরি না খেললেও পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি। প্রথমে না হোক, শেষে নিজের দেশের মানুষকে বাড়তি উৎসবের উপাদান দিয়ে গেলেন। রোনাল্ডোর শট যখন গোলে ঢুকছে লিসবন তখন নাচছে, গাইছে, চিৎকার করছে।
মধুরেণ সমাপয়েৎ আর কাকে বলে!