আইপিএলেও চ্যালেঞ্জের সামনে পড়ে গেল গেইল

বিরাট কোহলি— দশে সাড়ে নয়। এবি ডে’ভিলির্স— দশে সাড়ে নয়। ক্রিস গেইল— দশে নয়। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল— দশে নয়। মঙ্গলবার রাতে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে আরও একটা অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলতে দেখে পাঠকের নিশ্চয়ই মনে হবে, আইপিএলে ‘গোলিয়াথ’-দের মার্কশিটে এই নতুন ছেলেটা কোথায় থাকবে? ম্যাড-ম্যাক্সকে নিয়ে লিখতে বসার আগে তাই মার্কশিটটা উপরে দিয়ে দিলাম।

Advertisement

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:০২
Share:

বিরাট কোহলি— দশে সাড়ে নয়।

Advertisement

এবি ডে’ভিলির্স— দশে সাড়ে নয়।

ক্রিস গেইল— দশে নয়।

Advertisement

গ্লেন ম্যাক্সওয়েল— দশে নয়।

মঙ্গলবার রাতে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে আরও একটা অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলতে দেখে পাঠকের নিশ্চয়ই মনে হবে, আইপিএলে ‘গোলিয়াথ’-দের মার্কশিটে এই নতুন ছেলেটা কোথায় থাকবে? ম্যাড-ম্যাক্সকে নিয়ে লিখতে বসার আগে তাই মার্কশিটটা উপরে দিয়ে দিলাম।

আইপিএল আজ পর্যন্ত অনেক ব্যাটসম্যানকে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানে পাল্টে দিয়েছে। ক্রিকেট তাদের চিনেছে নতুন করে। ক্রিস গেইলকেই ধরুন। দেশের হয়ে খেলার সময় কেউ বুঝতেও পারেনি ও ব্যাটসম্যান নয়, অ্যাটম বম্ব। আইপিএলই কিন্তু গেইলকে মিথ করে দিয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পড়তি ফর্ম মাথায় রেখেও ওকে দশে নয় দিতে হবে। আইপিএল সেভেনে এখনও নামেনি গেইল। কিন্তু তাতে কী? আইপিএল সেভেন তো ইতিমধ্যেই নতুন ‘গেইল’ তুলে আনল!

ঠিক। ম্যাড-ম্যাক্সের কথা বলছি।

বিরাট বা ডে’ভিলিয়ার্সের সঙ্গে ওর তুলনা টানা এখন ঠিক হবে না। ওরা আলাদা জাতের প্লেয়ার। এ রকম স্বপ্নের ফর্ম ম্যাক্সওয়েল আরও বছরখানেক টানুক, তার পর ভাবব। কিন্তু চলতি আইপিএলে এখন পর্যন্ত ও-ই কিন্তু এক নম্বর! বিরাটকে ধরেই বলছি। সাতটা দিন হয়ে গেল আইপিএল সেভেনের। এখন পর্যন্ত কারও মুখে ক্রিস গেইল নামটা শোনা গেল না! ম্যাড-ম্যাক্স সত্যিই ভুলিয়ে দিতে বসেছে গেইলকে।

কাগজে পড়ছিলাম, এই অস্ট্রেলীয় তরুণ নাকি ক্রিজে নামার আগে পর্যন্ত চাপ নেয়। ক্রিজে নেমে নাকি মজা করে! ভাবতে পারেন, আত্মবিশ্বাস কোন পর্যায়ে গেলে লোকে এই কথা বলতে পারে? আসলে ম্যাক্সওয়েল এমন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে যেখানে ব্যর্থতার কথা ও ভাবতেই পারছে না। বিশ্বাস করতে শুরু করেছে, একমাত্র ও নিজে না চাইলে ওকে আউট করা অসম্ভব। নইলে পরপর তিন ম্যাচে ৯৫, ৮৯, ৯৫ রানের ইনিংস খেলা যায় না। ম্যাক্সওয়েলের ইম্প্রোভাইজেশন দারুণ। পেসার-স্পিনার যে কাউকে সুইচ হিট মেরে দিতে পারে। গ্যাপ খুঁজে নিতে পারে। আর যা মারে, অধিকাংশ ক্লিন হিট। সব মাঠের বাইরে যায়। গেইলকে বিধ্বংসী দেখাত নির্দিষ্ট কিছু ফ্যাক্টর কাজ করলে। খেয়াল করলে দেখবেন, বেশির ভাগ সময় ও বোলারদের ‘খুন’ করেছে চিন্নাস্বামীর উইকেটে। যেখানে মাঠ ছোট। বলও অত মুভ করে না। ম্যাক্সওয়েলের ও সব কিছুর দরকার পড়ে না।

মঙ্গলবারের শারজার উইকেট যেমন অত ভাল ছিল না। লো আর স্লো। বল থেমে থেমে ব্যাটে আসছিল। সেখানে এ রকম অসাধারণ একটা ইনিংস খেলে গেল ম্যাক্সওয়েল। মাত্র ৪৩ বলে ৯৫। পাঁচটা বাউন্ডারি। ন’টা ওভার বাউন্ডারি! স্ট্রাইকরেট অবিশ্বাস্য ২২০.৯৩। টুর্নামেন্টে এই নিয়ে টানা তৃতীয় বার সেঞ্চুরি হাতছাড়া করে যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিল ও, ম্যাচটা কিন্তু ততক্ষণে অনেকটাই পঞ্জাবের দিকে চলে গিয়েছে। দুই ওপেনার বীরেন্দ্র সহবাগ আর চেতেশ্বর পূজারা অবশ্য শুরুটা বেশ ভাল করেছিল। ম্যাক্সওয়েলকে আদর্শ একটা ‘লঞ্চিং প্যাড’ দিয়ে গিয়েছিল ওরা। শেষটা করল বালাজি। ভয়ই লাগছে ভেবে যে আর একটা ম্যাচ পরেই এই ম্যাক্সওয়েলের পাল্লায় পড়তে হবে কেকেআরকে।

ম্যাক্সওয়েল-ঝড় থামানোর উপায়? ও নামলেই সুনীল নারিনকে আনো। দরকারে নারিনের চারটে ওভার তখনই করিয়ে দিও গম্ভীর।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
কিংস ইলেভেন পঞ্জাব ২০ ওভারে ১৯৩-৬ (ম্যাক্সওয়েল ৯৫, সহবাগ ৩০, ভুবনেশ্বর ৩-১৯)
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৯.২ ওভারে ১২১ (ফিঞ্চ ১৯, স্যামি ১৫, বালাজি ৪-১৩, জনসন ২-২৬)।

যে যেখানে দাঁড়িয়ে

গ্লেন ম্যাক্সওয়েল
• কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে (২০১৪) ৩ ম্যাচে ২৭৯ রান, সর্বোচ্চ ৯৫, গড় ৯৩, স্ট্রাইকরেট ২১২.৯৭
​• মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে (২০১৩) ৩ ম্যাচে ৩৬ রান, সর্বোচ্চ ২৩, গড় ১৮, স্ট্রাইকরেট ১৩৩.৩৩

ক্রিস গেইল
• রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে (২০১১-১৩) ৪৩ ম্যাচে ২০৪৯ রান, সর্বোচ্চ ১৭৫ নঃআঃ, গড় ৬২.০৯, স্ট্রাইকরেট ১৬৫.১০
​• কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে (২০০৯-১০) ১৬ ম্যাচে ৪৬৩ রান, সর্বোচ্চ ৮৮, গড় ৩০.৮৬, স্ট্রাইকরেট ১৪১.৫

এবি ডে’ভিলিয়ার্স
• রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে (২০১১-১৪) ৪৮ ম্যাচে ১০৩৬ রান, সর্বোচ্চ ৬৫, গড় ৩৮.৩৭, স্ট্রাইকরেট ১৪৬.৩২
​• দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে (২০০৮-১০) ২৮ ম্যাচে ৬৭১ রান, সর্বোচ্চ ১০৫ নঃআঃ, গড় ৩১.৯৫, স্ট্রাইকরেট ১১৭.৩০

বিরাট কোহলি
​• রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে (২০০৮-১৪) ৯৫ ম্যাচে ২৩২২ রান, সর্বোচ্চ ৯৯, গড় ৩১.৮০, স্ট্রাইকরেট ১২৪.১০

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন