মাস খানেকও হয়নি। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের সেই দিনটা এখনও দগদগে ঘা হয়ে ধোনির মনে রয়েছে নিশ্চয়ই। সে দিন শ্রীলঙ্কার বোলারদের সামনে দুরমুশ হয়েছিলেন তাঁর দলের ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে লাসিথ মালিঙ্গার কাছে। শুক্রবার যখন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে চেন্নাই সুপার কিংসকে নিয়ে নামবেন ধোনি, তখন সে দিনের সেই জ্বালা মেটানোর পালা ধোনির কাছে। সামনে যে আবার সেই মালিঙ্গা।
সদ্য দেশের টি টোয়েন্টি দলের ক্যাপ্টেন ঘোষণা করা হয়েছে তাঁকে। চলতি আইপিএলে ভাল ফর্মেও আছেন মালিঙ্গা। তা সত্ত্বেও অবশ্য তিনি মনমরা। কারণ একটাই, দল জিতছে না যে। কেকেআর ও আরসিবি-র কাছে পরপর দু’ম্যাচে হারার পর শুক্রবার তাঁদের সামনে আবার চেন্নাই সুপার কিংস। প্রথম ম্যাচে হার থেকে শিক্ষা নিয়ে যারা তুমুল গতিতে বিজয় রথ চালানো শুরু করে দিয়েছে। ধোনিদের বিরুদ্ধে জয়ে ফিরতে না পারলে আইপিএল অভিযান বেশ কঠিন হয়ে উঠবে গত বারের চ্যাম্পিয়নদের।
মালিঙ্গা যে ফর্মে নেই, তা কিন্তু নয়। কেকেআরের বিরুদ্ধে চার উইকেট পাওয়ার পর বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধেও এক উইকেট পেয়েছেন। তাঁর সঙ্গে জাহির খানও সমানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বল করে যাচ্ছেন। কিন্তু স্পিনার ও ব্যাটসম্যানরাই যেখানে ফ্লপ, সেখানে আর দল জিতবে কী করে? এ বার মালিঙ্গাকে বাগে পেয়েছেন ধোনি। তাই শুক্রবার ধোনির বদলার মঞ্চ তৈরিই বলা যায়।
দিল্লি ডেয়ারডেভিলসকে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারিয়ে উঠে সোমবার ধোনি তাঁর দলের পারফরম্যান্স নিয়ে বলেন, “ইটস আ কমপ্লিট পারফরম্যান্স। ক্যাচই যে ম্যাচ জেতায়, তা আবার প্রমাণ হল। আমাদের পক্ষে একেবারে নিখুঁত খেলা হয়েছে এটা।” নিজেদের ফিল্ডারদের প্রশংসা করে ধোনি বলেন, “ফিল্ডিংকে তো বরাবরই প্রাধান্য দিই আমরা। এ বারও তা-ই হয়েছে। তার ফলও পাচ্ছি। পরের ম্যাচগুলোতে এটাই আমাদের সাহায্য করবে।” মালিঙ্গা-জাহির জুটি যে তাঁদের তেমন কোনও ক্ষতি করতে পারবে না, তারই ইঙ্গিত ধোনির কথায়, “এই উইকেটে পেসাররা সাহায্য পাচ্ছে কোথায়? সাত জন ব্যাটসম্যান দলে রাখাই ভাল।”
আর ফিল্ডিংটাই যে মালিঙ্গাদের বড় সমস্যা, তা প্রথম ম্যাচে হারের পরই স্বীকার করে নেন তিনি। বলেন, “ক্যাচ ফেলেই ম্যাচ হারলাম আমরা।” মেন্টর হিসেবে সচিন তেন্ডুলকর দলের সঙ্গে থেকে গেলেও মুম্বইয়ের ব্যাটিং অপ্রত্যাশিত ভাবে ব্যর্থ। অধিনায়ক রোহিত নিজে তো বটেই। রায়ডু, মাইক হাসি, পোলার্ড এমনকী ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ওস্তাদ কোরি অ্যান্ডারসনেরও মাত্র দু’ম্যাচে কুড়ি রান। শুক্রবার মুম্বই ব্যাটসম্যানরা জ্বলে উঠতে না পারলে সেই একই পরিণতি অপেক্ষা করে আছে তাদের জন্য। কারণ, চেন্নাইয়ের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে রানের বন্যা বইছে। প্রথম ম্যাচে ২০৫ করেও হেরে যাওয়ার পর দিল্লির বিরুদ্ধে ১৭৭ রান করেন ধোনিরা। মুম্বইয়ের কোচ জন রাইটের আশা, “আমাদের দলের ব্যাটসম্যানদের ফর্মে ফেরাটা সময়ের অপেক্ষা। নেটে ওরা যথেষ্ট ভাল ব্যাট করছে। তার পর ম্যাচে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না কেন, জানি না। তবে এর অর্থ ওরা ফর্মে আছে। যে কোনও ম্যাচে জ্বলে উঠবে।” সেটা এই ম্যাচেই কী না, এটাই দেখার।