মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ মানেই সেটা স্পেশ্যাল হবে। প্রত্যেক বারই মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচ কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে আমাদের ফেলে দেয়। আবু ধাবিতে তাই আইপিএল-সেভেন মরসুমের উদ্বোধনী ম্যাচটা এত ভাল ভাবে জিততে পেরে অসম্ভব ভাল লাগছে।
দশ ওভারে আমাদের ৬৩-১ তুলতে দেখে কোনও কোনও কমেন্টেটর বা সমর্থক বোধহয় ভেবেছিলেন, আমরা প্রয়োজনীয় রান রেটের চেয়ে পিছনে যাচ্ছি। কিন্তু যারা খেলতে নামে তাদের উইকেট, পরিবেশ সম্পর্কে ধ্যানধারণা বরাবরই ভাল হয়, যারা সাইড লাইনে বসে দেখে তাদের চেয়ে। ওখানে নতুন বলটা খেলা কঠিন হচ্ছিল।
আবু ধাবির পিচ চমকে দেওয়ার মতো সবুজ ছিল, কিন্তু সিমাররা সুইংও পাচ্ছিল। আড়াআড়ি বাউন্স হচ্ছিল না। কিন্তু এ রকম সূক্ষ্ম মুভমেন্টই বেশি বিপজ্জনক।
গোতি তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যাওয়ার পর আমাদের টিকে থাকা দরকার ছিল। শেষ পাঁচ ওভারের জন্য হাতে উইকেট রেখে দেড়শোর কাছাকাছি টার্গেট সেট করার দরকার ছিল। শেষ পর্যন্ত তার চেয়ে বেশি রানেই আমরা শেষ করলাম। আমাদের বোলিং আক্রমণ যে সেটা ডিফেন্ড করতে পারবে, সেই বিশ্বাস আমার ছিল।
বেশির ভাগ টি-টোয়েন্টি ইনিংসের চাবিকাঠি হল, একটা বড় পার্টনারশিপ। আমাদের ১৩০ রানের জুটিতে মণীশ দুর্দান্ত খেলল। বোলাররা দু’টো ভাল ওভার বল করলে আতঙ্কিত না হয়ে পড়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কয়েকটা বল না খেলতে পেরে একটা বল আকাশে তুলে দিলে সমস্যাটা কিন্তু আরও বেড়ে যায়। মণীশ আর আমি, আর আমাদের পরে নামা বড় হিটাররা, সবাই শেষের দিকের ওভারগুলো কাজে লাগাতে চেয়েছিলাম।
টি-টোয়েন্টিতে যে কোনও টিমের হয়ে ও যা বল করেছে, তার চেয়ে অনেক বেশি ভাল বল করতে দেখলাম মর্নি মর্কেলকে। ওর গতিতে বল করা কারও পক্ষে চার ওভারে মাত্র ১৬ রান দেওয়াটা যে কত কঠিন, তা বলে বোঝাতে পারব না। ওই গতিতে আসা বলে খোঁচা লাগলেই তো গোটা কয়েক বাউন্ডারি হয়ে যাবে! চব্বিশটা বলের মধ্যে তাই বেশির ভাগই দারুণ ডেলিভারি হওয়া দরকার।
দুই স্পিনার চাওলা আর নারিনও ইনিংসটা খুব ভাল শেষ করল। গত কয়েক বছর ধরে নেটে সুনীলের রহস্যভেদ করার চেষ্টাটা আমি উপভোগ করছি। একটা সময় তো ও-ই একমাত্র স্পিনার ছিল যাকে আমি বুঝে উঠতে পারিনি। কিন্তু কাজটা এগোচ্ছে। তবে আমার মনে হয় সুনীল বোধহয় আমার জন্যই নতুন নতুন ডেলিভারি আবিষ্কার করছে!
টুর্নামেন্ট সবে শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রথম ম্যাচের ফল আর ট্রেনিং-নেট সেশন প্রমাণ করে দিয়েছে আমাদের টিমটা যথেষ্ট উঁচু মানের। সব বিভাগেই গভীরতা আছে। খুব উত্তেজক দিন আসতে চলেছে। যা শুরু হচ্ছে শনিবারই, ডেয়ারডেভিলস ম্যাচ দিয়ে।
আশা করছি আঙুলের চোট সারিয়ে প্রথম ম্যাচে নামতে তৈরি থাকবে কেপি। আমরা প্রত্যেক বছরই এই কথাটা বলি কারণ এটাই সত্যি— সেরা প্লেয়ারদের বিরুদ্ধে খেলাটা আমরা ভীষণ উপভোগ করি।
টুর্নামেন্টের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতে ফেরার জন্য আমরা মুখিয়ে আছি। কিন্তু টিমের বেশির ভাগ প্লেয়ারেরই আমিরশাহিতে খেলার অভিজ্ঞতা থাকায় আমরা সবাই এখানে খুব স্বচ্ছন্দে আছি। মাঠে ভিড়ও দুর্দান্ত হচ্ছে! মনে হচ্ছে ভারতীয় পর্যটকদের সৌজন্যে স্থানীয় হোটেলগুলো দারুণ ব্যবসা করছে।